(বাঁ দিকে) এই সেই লিফট্। উদ্ধারের পর রবীন্দ্রন নায়ার (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
কেরলে সরকারি মেডিক্যাল কলেজের লিফ্টে এক-দু’ ঘণ্টা নয়, টানা ৪২ ঘণ্টা আটকে রইলেন বছর ৫৯-এর প্রৌঢ়। শনিবার দুপুর থেকে নিখোঁজ থাকার পর শেষমেশ সোমবার সকালে লিফ্টের ভিতর থেকে উদ্ধার করা হয় তাঁকে। এ বার সামনে এল তাঁর ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা।
ওই ব্যক্তির নাম রবীন্দ্রন নায়ার। কেরলের উল্লুরের বাসিন্দা রবীন্দ্রন স্থানীয় সিপিআই নেতা। শনিবার তিরুঅনন্তপুরমের একটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন তিনি। এর পরই কলেজের ওপি ব্লকের লিফ্টে আটকে পড়েন। রবীন্দ্রন জানিয়েছেন, আটকে পড়ার পর বার বার আপৎকালীন বোতাম টিপেও কারও সাড়া মেলেনি। এমনকি লিফ্টের ভিতরে থাকা হেল্পলাইন নম্বরগুলিতেও ফোন করেন। কিন্তু এত চেষ্টার পরেও উদ্ধারে এগিয়ে আসেননি কেউ।
রবীন্দ্রনের স্ত্রী শ্রীলেখা ওই হাসপাতালেরই কর্মী। ঘটনার দিন স্বামীর সঙ্গে হাসপাতালে গিয়েছিলেন তিনিও। শনিবার দুপুরে হাসপাতাল থেকে এক্স-রে করিয়ে চিকিৎসককে দেখানোর জন্য একাই লিফ্টে করে নীচে নামছিলেন রবীন্দ্রন। গোল বাধে তখনই। আচমকা আটকে পড়ে লিফ্ট। তার পর সে ভাবেই কেটে যায় দু’দিন।
হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে বার বার ফোন করার সময় হাত থেকে পড়ে অকেজো হয়ে যায় তাঁর ফোন। এর পর অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না রবীন্দ্রনের কাছে। পরদিন ছিল রবিবার, সোমবারের আগে বন্দিদশা থেকে মুক্তির কোনও সম্ভাবনা নেই বুঝে দিন গুনতে শুরু করেন প্রৌঢ়। সংবাদমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, ‘‘অ্যালার্ম ঘণ্টিটা বাজিয়ে যাচ্ছিলাম বার বার। দু’দিন ঘুমোতে পারিনি। খিদে-তেষ্টা মেটানোরও কোনও উপায় ছিল না। লিফ্টে ছিল না আলো কিংবা পাখাও। কেবল হাওয়া ঢোকার এক চিলতে জায়গা ছিল, তাতেই অক্সিজেন মিলছিল একটু… ।’’ লিফ্টের এক কোণেই প্রস্রাব করছিলেন তিনি, আর বসেছিলেন আর এক কোণে। তেষ্টা পেলে ঠোঁট চেটে তেষ্টা মেটানোর চেষ্টা করছিলেন।
রবীন্দ্রন শনিবার বাড়ি না ফেরায় প্রথমে কেউই চিন্তিত হননি তেমন। কারণ কাজের সূত্রে প্রায়ই তাঁকে বাইরে থাকতে হত। কিন্তু রবিবারও তিনি বাড়ি না ফেরায় সন্দেহ হয় পরিবারের। এর পরই তাঁরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। কোথাও খোঁজ না পেয়ে রবিবার বিকেলে থানায় মিসিং ডায়েরি করেন তাঁর পরিবার। সোমবার লিফ্টের কর্মীরা নিয়মমাফিক তদারকি করতে গিয়ে রবীন্দ্রনকে উদ্ধার করেন। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ। স্বাস্থ্য দফতরের তরফ থেকে লিফ্টের দু’জন অপারেটর এবং এক ডিউটি সার্জেন্টকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy