বিপর্যস্ত ওয়েনাড়ে চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি: রয়টার্স।
ওয়েনাড়ে ভূমিধসে অন্তত ৯৩ জনের মৃত্যুর পর মঙ্গল এবং বুধবার রাজ্যে শোকপালনের কথা ঘোষণা করল কেরল সরকার। মঙ্গলবার বিকালে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এই ঘোষণা করেন। কেরলের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে প্রতিবেশী তামিলনাড়ু। কেরলের ত্রাণ-তহবিলে পাঁচ কোটি টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন। উদ্ধার অভিযানে সহায়তার আশ্বাসও দেন তিনি। ইতিমধ্যেই প্রতিবেশী রাজ্যে উদ্ধারকাজে তৎপরতা আনতে তামিলনাড়ু ক্যাডারের দুই সিনিয়র আইএএস অফিসারকে নিয়োগ করা হয়েছে।
কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। বিজেপি কর্মীরা যাতে এই পরিস্থিতিতে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন, তা দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডাকে নিশ্চিত করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর দফতরের তরফে মৃতদের পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। আহতদের ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে।
বুধবার ধসে বিধ্বস্ত ওয়েনাড়ের পরিস্থিতি পরিদর্শনে বুধবার সেখানে যাচ্ছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী এবং তাঁর বোন প্রিয়ঙ্কা। কেরলের কংগ্রেস সাংসদ কেসি বেণুগোপাল মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘এই দুঃসময়ে যত বেশি সম্ভব মানুষের প্রাণ বাঁচানোটাই মূল লক্ষ্য। সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। রাহুল এবং প্রিয়ঙ্কা ওয়েনাড় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’’
অন্য দিকে, ভারতীয় সেনা মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ ওয়েনাড়ের চুরমালায় ভূমিধসের জায়গায় পৌঁছেছে। ওয়েনাড়ের মেপ্পাড়ির কাছে পাহাড়ি এলাকায় উদ্ধারকাজে নেমেছে স্থানীয় পুলিশ, প্রশাসন-সহ জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যেরা। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ জানিয়েছেন, উদ্ধারকাজে নেমেছে নৌবাহিনীও। প্রশাসনের তরফে খবর, এখনও পর্যন্ত ২৫০ জনকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে। আপাতত অস্থায়ী শিবিরে রয়েছেন তাঁরা। তবে ভূমিধসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কেরলের মুন্ডাক্কাই, ছুরালমালা, আট্টামালা, নুলপুঝা এলাকা। বহু রাস্তা ধসে গিয়েছে। একটি সেতুও ভেঙে পড়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় বহু জায়গায় এখনও পৌঁছতেই পারছেন না উদ্ধারকারীরা। কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর দফতর জানিয়েছে, উদ্ধার এবং ত্রাণের জন্য খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জর্জ কুরিয়ান উদ্ধার অভিযানে নেতৃত্ব দিতে ওয়েনাড় যাচ্ছেন। ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়ন করতে এলাকা পরিদর্শনে পৌঁছেছেন কেরলের বনমন্ত্রী সসেন্দ্রনও।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার কেরলের ওয়েনাড়ে ধস নেমে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৯৩ জনের। ভোরে চার ঘণ্টার মধ্যে পর পর তিন বার ধস নামে ওই এলাকায়। তার জেরে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। মনে করা হচ্ছে, এখনও ধসে চাপা পড়ে রয়েছেন শতাধিক মানুষ। খারাপ আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকাজেও দেরি হচ্ছে। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলেই মনে করছে প্রশাসন। মৌসম ভবন জানিয়েছে, আপাতত ভারী বৃষ্টি থামছে না কেরলে। পূর্বাভাস বলছে, আগামী ১ অগস্ট, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাজ্যে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy