৫০-তম দ্বিবার্ষিকী সম্মেলন বলে কথা! তবু মন্ত্রী-আমলা কাউকে ডাকাডাকি করেনি আসাম মাধ্যমিক শিক্ষক ও কর্মচারী সংস্থা। রাজ্য পর্যায়ের কর্মসূচির প্রকাশ্য অধিবেশনে বক্তৃতার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন দুই প্রাক্তন শিক্ষককে। আর তাঁদের কাছেই কিনা শুনতে হল, বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকরা কম বেতনে ছাত্রছাত্রীদের আকৃষ্ট করতে পারলে আপনারা কেন পারবেন না!
প্রাক্তন বিধায়ক আতাউর রহমান মাঝারভুইয়ার চেয়ে এই ইস্যুতে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কবীন্দ্র পুরকায়স্থই বেশি সরব ছিলেন। শিলচর টাউন হাই স্কুলে আয়োজিত সভায় দুজনেই শিক্ষক পরিচয়েই গর্বিত বোধ করেন বলে দাবি করেন। আয়োজকরাও শুরুতে জানিয়ে দেন, কবীন্দ্রবাবু বিজেপি নেতা, আতাউর রহমান কংগ্রেসের। কিন্তু কোনও রাজনৈতিক পরিচিতি নয়, প্রাক্তন শিক্ষক হিসেবেই তাঁদের কথা শুনতে চাইছেন তাঁরা।
কিন্তু বক্তৃতার মাঝপথে কবীন্দ্রবাবু প্রশ্ন তোলেন, সরকারি স্কুলের চেয়ে বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকদের বেতন কম। এর পরও কেন সরকারি স্কুলগুলি মেধার অভাবে ধুঁকছে। তাঁর প্রশ্ন, বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা ছাত্রদের যেভাবে আকৃষ্ট করতে পারছে, সরকারি স্কুল কেন পারছে না। কেন মোটা ফি দিয়েও অভিভাবকরা বেসরকারি স্কুলের দিকে ছোটেন।তিনি এই বিষয়টি ভেবে দেখতে প্রত্যেক শিক্ষক এবং তাদের সংস্থাকে অনুরোধ করেন। অভিভাবকদেরও সে ব্যাপারে দায়িত্ব রয়েছে, তাও তিনি স্মরণ করান। কবীন্দ্রবাবু বলেন, আগে শিক্ষকদের হাতে ছাত্রদের সমপর্ণ করা হতো। প্রয়োজনে মেরেপিটে মানুষ করার চেষ্টা করতেন শিক্ষকরা। এখন ছাত্রদের গায়ে হাত তোলা যায় না। ফলে অভিভাবকদেরই দায়িত্ব নিতে হবে।
শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নানা সমস্যা নিয়ে কবীন্দ্রবাবুর আশ্বাস, হিমন্তবিশ্ব শর্মা নতুন সরকারের শিক্ষামন্ত্রী হয়েছেন। তিনি নিশ্চিত, শীঘ্র পরিকাঠামোগত পরিবর্তন হবে। শিক্ষকদের সমস্যাও খতিয়ে দেখা হবে।
আতাউর রহমান মাঝারভুইয়া শিক্ষকদের দোষারোপের পাশাপাশি তাদের বিভিন্ন সমস্যার দিকেও আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, নতুন শিক্ষামন্ত্রী ছাত্রদের ফলাফল খারাপ হলে প্রাদেশিকীকৃত স্কুলের স্বীকৃতি বাতিলের হুমকি দিয়েছেন। কিন্তু তার আগে তাঁকে স্কুলগুলিতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক দিতে হবে। ন্যূনতম শিক্ষা-সামগ্রী সরবরাহ করতে হবে।
আতাউর রহমান মাঝারভুইয়ার বক্তৃতার বেশির ভাগ জুড়ে ছিল রাস্তাঘাটের বেহাল দশা। তিনি বলেন, কত শতাংশ রাস্তা ভাল, এর হিসেব দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন নতুন সরকারের মন্ত্রী-আমলারা। কিন্তু মানুষের হিসেবের প্রয়োজন নেই। দরকার চলাফেরার উপযুক্ত রাস্তা নির্মাণ। রাস্তাঘাটের সমস্যায়ও যে বহু ছাত্র-শিক্ষক স্কুলে যেতে পারেন না, সে কথাও উল্লেখ করেন তিনি।আসাম মাধ্যমিক শিক্ষক ও কর্মচারী সংস্থার রাজ্য সভাপতি প্রশান্ত দত্ত, সাধারণ সম্পাদক রবীন শইকিয়া এবং সহ-সভাপতি গজেন দাসও শিক্ষকদের সমস্যা তুলে ধরেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy