বিচারপতিদের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠনের আর্জিই আদালতের পক্ষে অবমাননাকর বলে মন্তব্য করল শীর্ষ আদালত। ওই আর্জি খারিজ করে দিয়ে তিন বিচারপতির বেঞ্চের বক্তব্য, ‘‘প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা উচিত হয়নি। কারণ, এফআইআর কোনও বিচারপতির বিরুদ্ধে নয়।’’ তবে এই মামলার আবেদনকারী আইনজীবী কামিনী জায়সবাল বা তাঁর কৌঁসুলি প্রশান্ত ভূষণের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার প্রক্রিয়াও শুরু করেনি সুপ্রিম কোর্ট।
উত্তরপ্রদেশের একটি মেডিক্যাল কলেজের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলায় ওড়িশা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি ইশরত মাসরুর কুদ্দুসিকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। তিনি এখন জামিনে মুক্ত। সিবিআইয়ের অভিযোগ, মেডিক্যাল কাউন্সিল ওই কলেজের স্বীকৃতি খারিজ করে দেয়। তারা সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে। বিচারপতি কুদ্দুসি কলেজের কর্তাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সুপ্রিম কোর্ট যাতে কলেজের পক্ষেই রায় দেয়, বিচারপতিদের ঘুষ দিয়ে তিনি সেই ব্যবস্থা করে দেবেন।
এই অভিযোগের ফলেই সিবিআই তদন্তের বদলে বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠনের আর্জি জানিয়ে মামলা করেন আইনজীবী কামিনী জায়সবাল। তাঁর হয়ে সওয়াল করতে গিয়ে প্রশান্ত ভূষণ প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের দিকে আঙুল তোলেন। তিনি প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের এজলাসে দাঁড়িয়েই জানিয়েছিলেন, সিবিআইয়ের এফআইআরে প্রধান বিচারপতিরও নাম রয়েছে। প্রশান্ত সওয়াল করেন, প্রধান বিচারপতি আগে ওই প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করার বিষয়ে মেডিক্যাল কাউন্সিলের মামলা শুনেছেন। তাই তাঁর উচিত এই শুনানি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়া।
আজ সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, বিচারপতিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতিতে সিবিআই তদন্তই যথেষ্ট। কিন্তু যে ভাবে প্রধান বিচারপতির দিকে আইনজীবীরা আঙুল তুলেছেন, তা নিয়ে আজ বিচারপতিরা তোপ দেগেছেন। বিচারপতি আর কে অগ্রবালের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চের মতে, এর ফলে শীর্ষ আদালতের বিশ্বাসযোগ্যতায় ধাক্কা লেগেছে। প্রতিষ্ঠানের সততা নিয়ে অকারণেই প্রশ্ন তোলা হয়েছে। তাঁদের মতে, এই মামলাটিই অবমাননাকর।
বেঞ্চের মতে, প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা উচিত হয়নি। এফআইআরে এমন কিছুই ছিল না। কারণ, বিচারপতিদের বিরুদ্ধে এফআইআর হতে পারে না। বিচারপতিদের যুক্তি, ‘‘আমরা আইনের ঊর্ধ্বে নই। কিন্তু সবই নিয়ম মেনে হওয়া উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy