রাঁচীর রাজভবনে মহাজোটের নেতারা। ছবি: সংগৃহীত।
এক সপ্তাহ ধরে খামবন্দি হয়ে রয়েছে হেমন্ত সোরেনের মুখ্যমন্ত্রিত্বের মেয়াদ। রাজ্যপাল রমেশ ব্যাস এখনও তা প্রকাশ্যে আনেননি। তা সত্ত্বেও ঝাড়খণ্ডের বিজেপি নেতৃত্ব কী ভাবে ‘চিঠির বিষয়বস্তু’ নিয়ে প্রকাশ্যে মত প্রকাশ করছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন শাসক মহাজোটের নেতা ও বিধায়কের। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাঁচীর রাজভবনে গিয়ে এ বিষয়ে রাজ্যপালের জবাব চান তাঁরা।
বিজেপির দাবি, খনি লিজ মামলায় সোরেনকে দোষী সাব্যস্ত করে তাঁর বিধায়ক পদ খারিজের সিদ্ধান্ত ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল রমেশ ব্যাসকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। এ প্রসঙ্গে হেমন্ত শিবিরের অভিযোগ, নির্বাচন কমিশনের গোপন চিঠি পাঠানোর বিষয়ে বিজেপি নেতারা যে ভাবে প্রকাশ্যে জানাচ্ছেন, তা থেকে স্পষ্ট, কী ভাবে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের ইচ্ছে মতো নিয়ন্ত্রণ করছে পদ্ম-শিবির।
ঘটনাচক্রে, খনি লিজ দেওয়া মামলায় নিজের পদের অপব্যবহার করার অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের বিধায়ক পদ খারিজের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল বিজেপিই। সূত্রের মতে, বিষয়টিতে সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে আজ নিজেদের সুপারিশ ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপালের কাছে মুখবন্ধ খামে গত বৃহস্পতিবার পাঠিয়ে দেয় কমিশন। ওই খামটি যে রাজ্যপালকে পাঠানো হয়েছে, তা প্রথম টুইট করে জানান ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা লোকসভার বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে।
গত ২৫ মে বিজেপি দাবি করে, কমিশন ওই চিঠিতে সোরেনের বিধায়ক পদ খারিজ করার সুপারিশ করেছে। বৃহস্পতিবার রাজভবন থেকে বেরিয়ে কংগ্রেস নেতা বান্ধু তিরকে বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন যে চিঠি পাঠিয়েছে, তা বিজেপি নেতারা জানতে পারলেন কী ভাবে? ওই চিঠিতে কী সুপারিশ রয়েছে, সে বিষয়টিও তাঁরা আগাম কী করে প্রকাশ্যে বলছেন?’’ ঝাড়খণ্ডের মন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা আলমগির আলম বলেন, ‘‘আমি কোনও চিঠি বা তার বিষয়বস্তুর কথা জানি না। কিন্তু বিজেপি নেতাদের মন্তব্য থেকেই বোঝা যাচ্ছে, নরেন্দ্র মোদী সরকারের আমলে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে কী ভাবে পিছন থেকে নিয়ন্ত্রণ করে চলেছে বিজেপি।’’
চিঠি ও সুপারিশের বিষয়টি সামনে আসার পর থেকেই সরগরম হয়ে ঝাড়খণ্ড রাজনীতি। পাশাপাশি, বিজেপির বিরুদ্ধে বিধায়ক ভাঙানোর চেষ্টার অভিযোগও তোলা হয়েছে জেএমএম-কংগ্রেস-আরজেডি-এনসিপি জোটের তরফে। সম্প্রতি হাওড়া থেকে অসম-ফেরত তিন ঝাড়খণ্ডের বিধায়ক বিপুল অঙ্কের টাকা-সহ গ্রেফতার হওয়ার পরে সেই অভিযোগের সারবত্তা প্রমাণিত হয়েছে বলেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মত। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস শাসিত ছত্তীসগঢ়ের রায়পুরে পাঠানো হয় ঝাড়খণ্ডের শাসক জোটের বিধায়কদের।
খামবন্দি চিঠিতে কমিশন হেমন্ত সম্পর্কে কী সুপারিশ করেছে, তা নিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে জল্পনা চলছে ঝাড়খণ্ডে। হেমন্তের বিরুদ্ধে জনপ্রতিনিধি আইন ভাঙা ও লাভজনক পদের মামলায় বিধায়ক পদ খারিজের সঙ্গেই তিনি যাতে আগামী ছ’বছর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না পারেন সেই দাবিও তুলেছে বিজেপি। কিন্তু একটি সূত্র জানাচ্ছে, কমিশন কেবল হেমন্তের বিধায়ক পদ খারিজেরই সুপারিশ করে রাজ্যপালকে চিঠি দিয়েছে। হেমন্ত শিবিরের দাবি, অঙ্ক না মেলায় তাই এখন রাজ্যপালকে চিঠি প্রকাশ করতে বাধা দিচ্ছে বিজেপি। বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখার কৌশল নিয়েছে তারা। সময়কে কাজে লাগিয়ে মহাজোটের বিধায়ক ‘কেনার’ চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy