Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

টিকিট নিয়ে টানাটানি ঝাড়খণ্ড কংগ্রেসে

মোদী-ঝড়ে নাস্তানাবুদ কংগ্রেসেও ভোটের টিকিটের জন্য হাহাকার! ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা নির্বাচনে লড়াইয়ের সুযোগ না পেয়ে গোঁসায় দল ছাড়ছেন অনেকে। কেউ কেউ প্রভাব খাটিয়ে নিজের ছেলেমেয়ের জন্য টিকিট জোগাড় করতে তৎপর। এ সব নিয়েই অন্তর্দ্বন্দ্ব ছড়িয়েছে প্রদেশ কংগ্রেসের অন্দরমহলে। সরগরম রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের দলীয় অফিসগুলি। হচ্ছে হাতাহাতিও।

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়
রাঁচি শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৫৪
Share: Save:

মোদী-ঝড়ে নাস্তানাবুদ কংগ্রেসেও ভোটের টিকিটের জন্য হাহাকার!

ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা নির্বাচনে লড়াইয়ের সুযোগ না পেয়ে গোঁসায় দল ছাড়ছেন অনেকে। কেউ কেউ প্রভাব খাটিয়ে নিজের ছেলেমেয়ের জন্য টিকিট জোগাড় করতে তৎপর। এ সব নিয়েই অন্তর্দ্বন্দ্ব ছড়িয়েছে প্রদেশ কংগ্রেসের অন্দরমহলে। সরগরম রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের দলীয় অফিসগুলি। হচ্ছে হাতাহাতিও। সামলাতে ডাকতে হচ্ছে পুলিশকেও। পরিস্থিতি এতটাই অগ্নিগর্ভ যে, গত কাল জামশেদপুর আর আজ রাঁচিতে কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়ে ধুন্ধুমার বাঁধিয়ে দিয়েছেন কংগ্রেস কর্মীরা। প্রদেশ সভাপতির মুণ্ডপাত করে কুশপুতুল পোড়ানো হচ্ছে। এ সব দেখে মুখ টিপে হাসছে বিরোধী শিবির। তাঁরা বলছেন, লোকসভা ভোটে ঝাড়খণ্ডে একটাও আসন পায়নি কংগ্রেস। জনসমর্থন তলানিতে দেখেও টিকিটের জন্য হই-হট্টগোল চলছে কংগ্রেস শিবিরে।

বিজেপিকে রুখতে কংগ্রেস ও জেএমএমের জোট হবে বলেই সকলে ধরে নিয়েছিলেন। কিন্তু শেষে তা ভেস্তে যায়। আরজেডি বা জেডিইউয়ের সঙ্গে জোটের ঘোষণা করলেও, ভোটের সপ্তাহ দু’য়েক আগেও আসন রফা হয়নি। সাঁওতাল পরগনার ১৮টি আসন নিয়ে ভিন্নমত ওই তিনটি রাজনৈতিক দলই।

প্রদেশ কংগ্রেসের অন্দরমহলের খবর, নিজে প্রার্থী হবেন না হয় পছন্দের কাউকে টিকিট দেবেন সেই ছকেই জেএমএমের সঙ্গে সমঝোতার বিরোধিতা করেছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুখদেব ভগত, গোড্ডার নেতা ফুরকান আনসারি বা প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ বালমুচুদের মতো নেতারা। সুখদেব লোহারডাগায় প্রার্থী হয়েছেন। ফুরকানের ছেলে ইরফান জামতাড়ার টিকিট পেয়েছেন। মেয়ে সিন্ডেরেলার জন্য ঘাটশিলার টিকিট আদায় করেছেন প্রদীপ বালমুচু। রাঁচির কেন্দ্রগুলিতে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুবোধকান্ত সহায়ের পছন্দের প্রার্থীরা টিকিট পেয়েছেন বলে অভিযোগ। দলের নেতাদের বিরুদ্ধে তোপ দেগে লোকসভা নির্বাচনের সময় তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন বিশ্রামপুরের প্রাক্তন বিধায়ক চন্দ্রশেখর (দদাই) দুবে। তিনিও সুযোগ বুঝে এ বার বিশ্রামপুরে তাঁর ছেলে অজয়ের জন্য টিকিট জুটিয়ে ফের কংগ্রেসে ফিরেছেন। দলের একাংশ নেতা ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, ক্ষমতার লোভে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সুখদেব রাজ্যে দলের ভোট পরিচালনার ভার ভুলে প্রার্থী হয়েছেন। নিজের কথা ভাবতে গিয়ে দল বা অন্য প্রার্থীদের কথা চিন্তার সময় নেই তাঁর কাছে। প্রভাব খাটিয়ে দলীয় নেতারা হয় নিজেদের জন্য নয়তো নিজেদের সন্তানদের জন্য ভোটের টিকিট জোগাড় করেছেন। যাঁরা সারা বছর কাজ করেছেন, তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন। ইতিমধ্যে, গোমিয়া ও ভবনাথপুরের দুই কংগ্রেস বিধায়ক, যথাক্রমে মাধবলাল সিংহ এবং অনন্তপ্রতাপ দেব বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।

প্রদেশ সভাপতি সুখদেব ভগত দলীয় কোন্দলের কথা স্বীকার করতে চাননি। তিনি বলেছেন, “কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করেই প্রার্থী বাছাই করা হয়েছে। যাঁরা বিক্ষোভ করছেন তাঁদের সঙ্গে আমরা কথা বলছি। কারও কোনও ক্ষোভ নেই।”

বাস্তবের ছবিটা কিন্তু একেবারেই অন্য কথা বলছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE