উদ্ধার হওয়া হাতির দাঁত।
বাক্স বদল নয়। বাক্স হস্তান্তর হচ্ছিল গুয়াহাটি স্টেশনে। হাতেনাতে ধরা পড়ে গেলেন দাতা ও গ্রহীতা। বাক্সে পাওয়া গেল সাড়ে পাঁচ কিলোগ্রামেরও বেশি হাতির দাঁত। তা পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার করা হল রেলের এক ঠিকা কর্মীকে। গোটা ঘটনায় জড়িয়ে গেল পশ্চিমবঙ্গের নাম। কেননা সুরজ দাস নামে ধৃত ব্যক্তি বঙ্গেরই বাসিন্দা।
আগাম খবরের ভিত্তিতে শনিবার গুয়াহাটি স্টেশনে অভিযান চালায় ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স (ডিআরআই)। অসমের হোজাই জেলার বাসিন্দা মহম্মদ বদরুল হুসেন নামে এক ব্যক্তি স্টেশনে একটি বাক্স দিতে এসেছিলেন। বাক্সটি নিতে আসেন সরাইঘাট এক্সপ্রেস ট্রেনের কোচ অ্যাটেন্ড্যান্ট সুরজ। ডিআরআই ও পুলিশ দু’জনকেই ধরে ফেলে। বাক্সে ছিল ২৪টি হাতির দাঁত ও দাঁতের অংশ। মোট ওজন পাঁচ কিলোগ্রাম ৮৩৮ গ্রাম। আন্তর্জাতিক বাজারে তার দাম কয়েক লক্ষ টাকা বলে জানান ডিআরআই অফিসারেরা।
ডিআরআইয়ের জেরায় সুরজ জানান, সরাইঘাট এক্সপ্রেস নিউ জলপাইগুড়িতে পৌঁছলে তাঁর কাছ থেকে ওই বাক্সভর্তি হাতির দাঁত নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল তৃতীয় এক ব্যক্তির। উত্তরবঙ্গের সীমান্ত-শহর দিয়ে দাঁতগুলি নেপালে পাচার করার কথা ছিল ওই তৃতীয় ব্যক্তির।
পশু বিশেষজ্ঞেরা দাঁতগুলি পরীক্ষা করে জানান, প্রাপ্তবয়স্ক ও অপ্রাপ্তবয়স্ক মিলিয়ে অন্তত পাঁচটি হাতিকে হত্যা করে দাঁতগুলি জোগাড় করা হয়েছে। যে-হেতু দাঁতগুলি হোজাই থেকে আনা, তাই সন্দেহ করা হচ্ছে, হাতিগুলিকে মারা হয়েছে নজরদারহীন কার্বিং আংলংয়ের অরণ্যেই। ডিআরআইয়ের অভিযোগ, শুধু হাতির দাঁত নয়, এক দল পাচারকারী বিভিন্ন প্রজাতির কচ্ছপ, হরিণের শিং, বাঘ, চিতাবাঘের চামড়াও নিয়মিত পাচার করছে। সুরজ ও বদরুলকে জেরা করে সেই সব পাচারকারীর কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করা হবে বলে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে। প্রাথমিক জেরায় জানা গিয়েছে, হোজাইয়েরই এক ব্যক্তি বদরুলকে ওই হাতির দাঁতে ভরা বাক্স দিয়েছিল। তারও খোঁজ চলছে।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি শিলিগুড়িতে একটি বাস থেকে প্রায় সাড়ে ১২ কিলোগ্রাম হাতির দাঁত উদ্ধার করা হয়েছিল। সেই দাঁতও এসেছিল অসমের লখিমপুর জেলা থেকে। অসম-অরুণাচল সীমান্তের জঙ্গলে হাতি শিকার করে ওই দাঁত পাচার করা হচ্ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
অরুণাচল-অসম-উত্তরবঙ্গ-নেপাল মিলিয়ে গোটা চক্রটির হদিস পেতে একযোগে তদন্ত চালাবেন ডিআরআই, পুলিশ ও বনকর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy