Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

ট্রেনের ঝাঁকুনি সামলাতে যন্ত্রে বদল আনছে রেল

কথা নেই, বার্তা নেই, আচমকা পড়ে গিয়ে শুরু হল খিঁচুনি। এই উপসর্গ থেকে মৃগী রোগের হানা টের পাওয়া যায়। ট্রেনের ক্ষেত্রে ব্যাধিটার নাম হঠাৎ হঠাৎ জব্বর ঝাঁকুনি।

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৭ ০৩:৫৯
Share: Save:

কথা নেই, বার্তা নেই, আচমকা পড়ে গিয়ে শুরু হল খিঁচুনি। এই উপসর্গ থেকে মৃগী রোগের হানা টের পাওয়া যায়। ট্রেনের ক্ষেত্রে ব্যাধিটার নাম হঠাৎ হঠাৎ জব্বর ঝাঁকুনি।

মুশকিল হল, কোন ট্রেন কখন কোথায় কী ভাবে কতটা জোরে ঝাঁকিয়ে উঠবে, জানতে পারেন না যাত্রীরা। ফলে কারও মাথা ঠুকে যায় ট্রেনের দেওয়ালে, কারও ধাক্কা লাগে অন্যের গায়ে, কেউ বা সটান আছড়ে পড়েন মেঝেয়। বড়বাজারের এক বাসিন্দা তেমনই এক রাম-ঝাঁকুনিতে রাজধানী এক্সপ্রেসের শৌচাগারের মেঝেতে পড়ে গিয়ে মারাত্মক চোট পান ডান হাতের আঙুলে। নড়েচড়ে বসেছে রেল। ট্রেনের ঝাঁকুনি-রোগ প্রশমনে দেওয়া হচ্ছে দাওয়াই।

রেল সূত্রের খবর, বড়বাজারের ওই বাসিন্দা নয়াদিল্লি থেকে রাজধানী এক্সপ্রেসে হাওড়ায় ফেরার পথে রাতে শৌচাগারে গিয়েছিলেন। ঠিক তখনই ট্রেনটি কিছু সময়ের জন্য দাঁড়িয়ে আচমকাই প্রবল ঝাঁকুনি দিয়ে ফের চলতে শুরু করে। শৌচাগারে পড়ে গিয়ে ওই যাত্রীর একটি আঙুল ভীষণ ভাবে জখম হয়। রেল বোর্ডকে চিঠি লিখে সব জানান তিনি। রেলের তদন্তে ওই ঝাঁকুনি-রোগের কারণ ধরা পড়েছে। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ওষুধের ব্যবস্থাও করেছে রেল বোর্ড।

রাজধানী এক্সপ্রেসের ঝাঁকুনি-রোগ দীর্ঘদিনের। তার হানার দাপট কখনও কম, কখনও খুব বেশি হয়। কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, রাজধানীর কামরাগুলি যার সাহায্যে জোড়া হয়, সেই ‘কাপলিং’ যন্ত্রে ত্রুটি আছে। ঝাঁকুনি বন্ধের দাওয়াই হিসেবে কাপলিং যন্ত্রের প্রযুক্তিতে পরিবর্তন আনতে চলেছে রেল। এবং ইতিমধ্যেই রাজধানীর কাপলিংয়ে ত্রুটি শোধরানোর কাজ শুরু হয়েছে।

রেলকর্তারা জানান, ট্রেন ছাড়ার সময় সামনে থেকে ইঞ্জিন যখন টান দেয়, তখন সব কামরাতেই একটা ঝাঁকুনি হয়। তদন্ত বলছে, সিবিসি কাপলিং নতুন প্রযুক্তিতে তৈরি হলেও এর ঝাঁকুনি নিরোধক ব্যবস্থা তেমন উন্নত নয়। তাই বিপত্তি ঘটছে। রেল বোর্ড সূত্রের খবর, প্রতিটি সিবিসি কাপলিংয়ে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে ওই ত্রুটি শোধরাতে খরচ পড়বে পাঁচ লক্ষ টাকা। প্রথম ধাপে সব রাজধানী এক্সপ্রেসের মোট সাড়ে তিন হাজার কামরার কাপলিংয়ে নতুন প্রযুক্তির সাহায্যে ঝাঁকুনি রোগ সারানো হবে। পরের ধাপে চিকিৎসা চলবে শতাব্দী, দুরন্ত এক্সপ্রেসেও।

ত্রুটি শুধরে নিলে ট্রেনের ঝাঁকুনি বন্ধ তো হবেই। রেলকর্তারা জানান, একটি কামরার সঙ্গে অন্যটির যাতে ধাক্কা না-লাগে, ট্রেন দুর্ঘটনার মুখে পড়লে কোনও কামরা ঘুরে গিয়ে যাতে অন্য কামরার ঘাড়ে উঠে না-পড়ে, সেটাও নিশ্চিত করবে কাপলিংয়ের এই নতুন প্রযুক্তি।

অন্য বিষয়গুলি:

Indian Railways Coupling
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE