ফাইল চিত্র।
ভারতের সঙ্গে মধ্য এশিয়ার সম্পর্ক তিন দশকের প্রাচীন ঠিকই। কিন্তু আফগানিস্তানের দখল তালিবানের হাতে যাওয়ার পরে গোটা অঞ্চলের ভূকৌশলগত পরিস্থিতি এমন দিকে এগোচ্ছে যে, মধ্য এশিয়ার গুরুত্ব ভারতের কাছে একধাপে অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার ভারত-মধ্য এশিয়া প্রথম সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তৃতায় এ কথা স্পষ্ট করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর কথায়, “আমাদের প্রত্যেকেরই আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়ে একই রকম উদ্বেগ এবং লক্ষ্য রয়েছে। আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ঘটনাক্রম সম্পর্কে আমরা সবাই অবহিত। এই পরিপ্রেক্ষিতে আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং সুস্থিতির ক্ষেত্রে আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতা এখনও আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।”
বৃস্পতিবারের এই ভিডিয়ো বৈঠকে ভারতের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন কাজ়াখস্তান, উজ়বেকিস্তান, তাজিকিস্তান, কিরঘিজ়স্তান এবং তুর্কমেনিস্তানের রাষ্ট্রপ্রধানেরা। বৈঠকের পরে একটি সুদীর্ঘ ঘোষণাপত্রে নাম না করে পাকিস্তানের প্রসঙ্গে ভারতের উদ্বেগ জোরালো ভাবে রাখা হয়েছে। মধ্য এশিয়ার এই পাঁচ দেশকে সঙ্গে নিয়ে তৈরি হওয়া দিল্লি ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে,‘সংশ্লিষ্ট নেতারা সমবেত ভাবে সন্ত্রাসবাদের নিন্দা করেছেন। যে কোনও ধরনের সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিদের সমর্থন এবং সহায়তা করা, জঙ্গিদের নেটওয়ার্ককে কাজে লাগিয়ে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস চালানো, চরমপন্থী মতাদর্শের প্রসারের মতো বিষয়গুলি মানবিকতা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মৌলিক নীতি ও কাঠামোর পরিপন্থী। সন্ত্রাসমুক্ত বিশ্ব তৈরি করার ডাক দিয়েছেন সংশিষ্ট নেতারা।’ সন্ত্রাসমুক্ত বিশ্বের লক্ষ্যে রাষ্ট্রপুঞ্জের নেওয়া প্রস্তাবকে বাস্তবায়িত করা, এফএটিএফ-কে আরও কার্যকরী করার মতো পদক্ষেপগুলির কথাও বলা হয়েছে।
দিল্লির ঘোষণাপত্র বলছে, আজকের বৈঠকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে আফগানিস্তান পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের উদ্বেগ। ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, ‘নেতারা আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি এবং গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তায় তার অভিঘাত নিয়ে আলোচনা করেছেন। তাঁরা পোক্ত, সুস্থির, শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ আফগানিস্তান গঠনের প্রশ্নে ফের নিজেদের সমর্থন জানিয়েছেন। আঞ্চলিক অখণ্ডতা, সার্বভৌমত্ব এবং একতার দিকগুলি যেন রক্ষিত হয়, এমন কথাও বলেছেন তাঁরা। আফগানিস্তানের মানুষের জন্য মানবিক সহায়তা ও ত্রাণ পৌঁছনো নিয়ে কথা হয়েছে বৈঠকে।’
কূটনৈতিক শিবিরের মতে, মধ্য এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে এমন গভীর সংযোগের উদ্যোগ এই প্রথম। আপৎকালীন সঙ্কট পরিস্থিতিতেই এমন আত্মীয়তা গড়ে ওঠে বলে মনে করছে কূটনৈতিক শিবির। পাশাপাশি এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে পাকিস্তান এবং চিনকে প্রতিহত করে নিজেদের বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রাখার প্রশ্নে এই নতুন কাঠামো ভারতের কাছে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠবে বলে দাবি করেছে বিদেশ মন্ত্রক।
মধ্যে এশিয়ার নেতাদের আহ্বান করে মোদীর বক্তব্য, ভারতের বর্ধিত প্রতিবেশী বলয়ের কেন্দ্রে রয়েছে মধ্য এশিয়া। গোটা আয়োজনের তিনটি উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “প্রথমত এই সম্মেলনের উদ্দেশ্য, এ কথা স্পষ্ট করে দেওয়া যে ভারতের সুসংহত এবং সুস্থিত বর্ধিত প্রতিবেশী বলয়ের কেন্দ্রস্থলে রয়েছে মধ্য এশিয়া। দ্বিতীয়ত, আমাদের সহযোগিতাকে একটি কার্যকরী কাঠামো দেওয়া। যার ফলে দেশগুলির মধ্যে বিভিন্ন স্তরে আলোচনা বহাল থাকে। তৃতীয়ত, একটি সুদূরপ্রসারী পথনির্দেশিকা তৈরি করা, যার মাধ্যমে আগামী ৩০ বছরের আঞ্চলিক সংযোগ ও সহযোগিতা বজায় থাকে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy