দিল্লিতে পাকিস্তানি হাইকমিশনের দফতর।—ফাইল চিত্র।
রাত পোহালেই জাতীয় দিবস পাকিস্তানের। সেই উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান দিল্লিতে। কিন্তু ভারত সরকারের কোনও প্রতিনিধিকেই সেখানে দেখা যাবে না। সরকারি সূত্রে খবর, জম্মু-কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাকামী নেতাদের ওই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছে পাক হাই কমিশন। তার জেরে ওই অনুষ্ঠান বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রাম চলাকালীন, ১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ লাহৌর চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। স্বাধীনতার পর থেকে ওই বিশেষ দিনটিকে জাতীয় দিবস বা প্রজাতন্ত্র দিবস হিসাবে পালন করে আসছে পাকিস্তান। সেই উপলক্ষে প্রতিবছর ২৫ মার্চ দিল্লিতে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পাকিস্তানি হাই কমিশন।
তবে ২৫ মার্চের বদলে এ বছর ২২ মার্চে-ই ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছে। তাতে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারকেও। সেই সঙ্গে বেছে বেছে জম্মু-কাশ্মীরের ৩০ জন হুরিয়ত নেতাকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তার জেরেই মোদী সরকার ওই অনুষ্ঠান বয়কট করা সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে সরকারি সূত্রে খবর। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শীর্ষস্থানীয় সরকারি আধিকারিক জানান, দ্বিচারিতা করছে পাকিস্তান। ইচ্ছাকৃত ভাবে ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলাচ্ছে। তাই ওই অনুষ্ঠানে কাউকে সরকারি প্রতিনিধি হিসাবে পাঠানো হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।
আরও পড়ুন: পুলওয়ামা কাণ্ডে গোটা পাকিস্তানকে দায়ী করা ঠিক নয়, মন্তব্য পিত্রোদার, অস্বস্তি কংগ্রেসের
ফেব্রুয়ারি মাসে পুলওয়ামা হামলার পর থেকে ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে। তার মধ্যে জম্মু-কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাকামী নেতাদের আমন্ত্রণ জানানোয় অসন্তুষ্ট কেন্দ্রীয় সরকার। তবে শুক্রবার দিল্লির ওই অনুষ্ঠানে বিচ্ছিন্নতাকামীদের কাউকেই দেখা যাবে না বলে হুরিয়ত নেতৃত্বের তরফে জানানো হয়েছে। তাঁদের কথায়, পুলওয়ামা কাণ্ডের পর তাঁদের মধ্যে অনেকেই জেলবন্দি। গৃহবন্দিও রয়েছেন কেউ কেউ। পাক সরকারের টাকায় উপত্যকায় নাশকতায় মদত দেওয়ার অভিযোগ তাঁদের বিরুদ্ধে। জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। এই পরিস্থিতিতে পাক হাইকমিশনের আমন্ত্রণ রক্ষা করার কথা মাথায়ও আনছেন না কেউ। যাঁরা জেলবন্দি হননি বা যাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়নি, আমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়ে তদন্তের মুখে পড়ার আশঙ্কায় তাঁরাও পিছিয়ে এসেছেন বলে খবর।
আরও পড়ুন: গাঁধীনগর থেকে আডবাণীকে সরিয়ে প্রার্থী অমিত, ‘মার্গদর্শক’ বিদায়ে কটাক্ষ কংগ্রেসের
বিচ্ছিন্নতাকামীদের প্রভাবিত না করে কাশ্মীর ইস্যুতে সরাসরি আলোচনায় বসতে যদিও আগেই পাকিস্তানকে অনুরোধ জানিয়েছে ভারত। তবে এ ভাবে পাক হাইকমিশনের অনুষ্ঠান বয়কট করা ঠিক নয় বলে মত সমালোচকদের। তাঁদের কথায়, অতীতে নিয়ন্ত্রণ রেখায় গোলাগুলি চলাকালীনই পাকিস্তানের জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে ভিকে সিংহ, গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত এমনকি এমকে আকবরের মতো কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকেও দেখা গিয়েছে। পুলওয়ামা হামলার পর পরিস্থিতি যখন উত্তপ্ত, তখন এ ভাবে অনুষ্ঠান বয়কট করলে পরবর্তী কালে আলাপ আলোচনার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেবে। আগামী মাসে লোকসভা নির্বাচন, তাই অনুগামীদের সমর্থন টিকিয়ে রাখতে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন সমালোচকদের কেউ কেউ।
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy