বিহারের খাগাড়িয়া জেলার একাধিক গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মহিলাদের অচেতন না করে অস্ত্রোপচার করার অভিযোগ ঘিরে হইচই। —ফাইল চিত্র।
বিহারের খাগাড়িয়া জেলার একাধিক গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মহিলাদের অচেতন না করেই অস্ত্রোপচার করার অভিযোগ ঘিরে হইচই শুরু হয়েছে। একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর অন্তঃসত্ত্বা হওয়া আটকাতেই নারীদেহে ‘টিউবেক্টমি’ নামের ওই অস্ত্রোপচার করা হয়। বিহারের খাগাড়িয়া গ্রামের ২৪ জন মহিলাকে অজ্ঞান না করেই ওই অস্ত্রোপচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।
চিকিৎসার পরিভাষায়, মহিলারা যেন একটি নির্ধারিত সময়ের পর যেন অন্তঃসত্ত্বা হতে না পারেন, তার জন্য ‘টিউবেক্টমি’ করা হয়। ওই পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচার করতে সংশ্লিষ্ট মহিলার দেহে নির্দিষ্ট পরিমাণ অচেতন করার ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। কিন্তু বিহারের খাগাড়িয়া গ্রামের ২৪ জন মহিলার ওই অস্ত্রোপচার করা হয়েছে কোনও রকম অচেতন করার ওষুধ ছাড়াই। স্থানীয় কয়েকটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ওই ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার খাগাড়িয়ার জেলাশাসক অলোকরঞ্জন ঘোষ ওই বিষয়ে তদন্ত শুরু করেন। অস্ত্রোপচার যাঁদের উপর করা হয়েছে, সেই মহিলাদের মধ্যে কুমারী প্রতিমা নামের এক জন আলাউলি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি হয়েছিলেন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করায় তিনি বলেন, ‘‘অস্ত্রোপচার করার সময় ঘরের মধ্যে চার জন ছিলেন। আমি যন্ত্রণায় চিৎকার করায় তাঁরা আমার হাত-পা চেপে ধরেছিলেন।’’ অন্য এক মহিলাও জানান, অস্ত্রোপচার চলাকালীন তিনি সম্পূর্ণ সজাগ ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি বুঝতে পারছিলাম যে, আমার শরীরে ব্লেড চালানো হচ্ছে। যন্ত্রণায় ছটফট করছিলাম।’’
সূত্রের খবর, ওই অস্ত্রোপচারের প্রকল্প সরকারই চালায়। সরকারের সঙ্গে একটি সমাজসেবী সংস্থা যৌথ ভাবে হাত মিলিয়ে অস্ত্রোপচারের দায়িত্ব নিয়েছিল। ‘টিউবেক্টমি’ অস্ত্রোপচারের জন্য মোট ৫৩ জন মহিলা নাম লিখিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ২৪ জন মহিলার অস্ত্রোপচার ‘ভুল’ পদ্ধতিতে হয়েছে। স্থানীয় এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত দু’টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিরুদ্ধে ‘ভুল’ পদ্ধতিতে চিকিৎসা করার অভিযোগ উঠেছে। দোষী প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠিন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরবত্তা নামে অন্য একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের তরফে দাবি করা হয়, সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করেই অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আধিকারিককে এই প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘‘এক ওষুধ সকলের শরীরে একই রকম ভাবে কাজ করবে তার কোনও মানে নেই। অস্ত্রোপচার করার আগে অচেতন করার ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু কারও কারও ক্ষেত্রে তা কাজ করেনি।’’
এই ঘটনা প্রথম বার নয়। আগেও বিহারে এমন ঘটনা ঘটেছে। ২০১২ সালে বিহারের অররিয়া জেলায় দু’ঘণ্টার মধ্যে ৫৩ জন মহিলার ‘টিউবেক্টমি’ করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত তিন জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, তাতেও অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি। ১০ বছর পর একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল বিহারের বুকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy