জিগ্নেশ মেবাণী। ফাইল চিত্র।
নিরাপত্তা এবং পরিবেশগত কারণে সোমবারই তাঁর সভার অনুমতি বাতিল করে দিয়েছিল দিল্লি পুলিশ। কিন্তু, সেই নিষেধাজ্ঞা উড়িয়েই মঙ্গলবার সংসদ মার্গে সভা করলেন দলিত নেতা তথা গুজরাতের নির্দল বিধায়ক জিগ্নেশ মেবাণী। বললেন, ‘‘আমরা লাভ জেহাদে নই, ভালবাসায় বিশ্বাসী। আমরা ভ্যালেন্টাইন্স ডে পালন করি।’’ জমায়েতে ভাষণ দেন জেএনইউ-র ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সভাপতি কানহাইয়া কুমারও। এ দিন সভায় ১৫ হাজারেরও বেশি মানুষের জমায়েত হয় বলে দাবি আয়োজকদের।
এ দিনের সভা থেকে কেন্দ্রকে নিশানা করে জিগ্নেশ বলেন, ‘‘দুর্নীতি, দারিদ্র, বেকারত্বের মতো জ্বলন্ত সমস্যা থেকে নজর ঘুরিয়ে দিতে ঘর ওয়াপসি, লাভ জেহাদ, গো হত্যার-র মতো বিষয়গুলিকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। আমাদের লড়াই এ সবের বিরুদ্ধে।’’
সভার অনুমতি না দেওয়ার ঘটনায় এ দিন রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জিগ্নেশ। বলেন, ‘‘গুজরাতে আসন সংখ্যা ৯৯-তে নামিয়ে এনে আমরা ওদের অহঙ্কার ভেঙে দিয়েছি। এ জন্যই আমাদের নিশানা করা হচ্ছে। এর পরই তাঁর মন্তব্য, ‘‘যতই আক্রমণ হোক, আমরা সংবিধান আঁকড়ে থাকব।’’
এর আগেও এ দিন বিজেপিকে নিশানা করেন জিগ্নেশ। সকালেই কনট প্লেসে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন মেবাণী। তখন তিনি বলেন, ‘‘এক জন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে শান্তিপূর্ণ সভা করতে দেওয়া হচ্ছে না। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আমরা সামজিক ন্যায় ও যুব সম্প্রদায়ের ইস্যুগুলি তুলতে চাই।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘আমাকে নিশানা করা হচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা ভিত্তিহীন। সংবিধান মেনেই সভা করছি। এর পরও আমাদের বলতে দেওয়া হচ্ছে না।’’
শিক্ষা, চাকরি, দলিত-সংখ্যালঘুদের উপরে হামলার মতো নানা বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করবেন বলে আগেই ঘোষণা করেছেন জিগ্নেশ। প্রথমে সংসদ মার্গে জনসভা ও তার পর মিছিল (যুব হুঙ্কার র্যালি) করে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়। সংসদ মার্গ থেকে প্রধানমন্ত্রীর দফতর পর্যন্ত মিছিল করলে এলাকায় জারি থাকা ১৪৪ ধারার জন্য এমনিই আটক হতেন জিগ্নেশরা। পাশাপাশি দিল্লি পুলিশ জানায়, সামনেই প্রজাতন্ত্র দিবস। রাজপথ ও সংলগ্ন এলাকার নিরাপত্তার কথা ভেবে অনুমতি দেওয়া যাচ্ছে না। একই সঙ্গে পরিবেশগত কারণের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। আর সে জন্য আয়োজকদের সভা অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয় দিল্লি পুলিশ। তবে শেষ পর্যন্ত সংসদ মার্গেই সভা করেন জিগ্নেশ।
আরও পড়ুন: বদলের বার্তা নিয়ে বাহরাইনে রাহুল
আরও পড়ুন: বেগতিক বুঝে নরম কেন্দ্র ও আধার কর্তৃপক্ষ
এ দিন সকাল থেকেই যন্তরমন্তরে সভার প্রস্তুতি ছিল তুঙ্গে। মঞ্চ তৈরি, সাউন্ড সিস্টেম, চেয়ারও প্রস্তুত করা হয়। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সভাপতি মোহিত পান্ডে জানিয়েছিলেন, ‘‘সভা হবে। কিন্তু কোনও মিছিল হবে না।’’ সভায় দিল্লির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন কলেজের পড়ুয়াদের একটা বড় অংশ, মহিলা গোষ্ঠী, শিক্ষক সংগঠন ও জিগ্নেশের সঙ্গে যুক্ত আন্দোলনকারীরা যোগ দেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সক্রিয় ছিল প্রশাসন। বাড়ানো হয় পুলিশের সংখ্যা। এ দিন সকাল থেকে পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে পুলিশ ও নিরাপত্তারক্ষীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy