অনন্তনাগের ডিএসপি হুমায়ুন ভাট (বাঁ দিকে)। পুত্রকে শেষ শ্রদ্ধা বাবা গুলাম হাসানের (ডান দিকে)। ছবি: পিটিআই।
জঙ্গিদের পিছু ধাওয়া করে কোকেরনাগের জঙ্গলে ঢুকেছিল সেনা এবং জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের যৌথবাহিনী। দুই সেনাকর্তার সঙ্গে সেই দলে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন অনন্তনাগের ডেপুটি পুলিশ সুপার (ডিএসপি) হুমায়ুন ভাট। জঙ্গিরা পাহাড়ের উপরে আশ্রয় নিয়েছিল। জঙ্গলঘেরা পাহাড়ে উঠতেই ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি ছুটে এসেছিল যৌথবাহনীকে লক্ষ্য করে। আর সেই গুলিতেই নিহত হন কর্নেল মনপ্রীত সিংহ, মেজর আশিস ধনচক। গুরুতর জখম হয়েছিলেন হুমায়ুন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয় তাঁর।
গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর বাড়িতে স্ত্রী এবং বাবাকে ফোন করেছিলেন। ফোনে স্ত্রী ফতিমাকে শুধু বলেছিলেন, “আমি হয়তো আর বাঁচব না। আমাদের সন্তানের খেয়াল রেখো।” এক মাসের সন্তানকে এক ঝলক দেখতেও চেয়েছিলেন। বাবা গুলাম হাসানকেও ফোন করেছিলেন হুমায়ুন। ফোনের ওপারে পুত্রের কাঁপা কাঁপা গলা শুনে বুক কেঁপে উঠেছিল গুলামের। পুত্রকে তৎক্ষণাৎ জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “সব ঠিক আছে তো?” হুমায়ুন উত্তর দেন, “ঠিক আছি।” মৃত্যু যে শিয়রে দাঁড়িয়ে, সেটা আঁচ করতে দেননি বাবাকে।
আর দিন কয়েক দিন বাদেই ছিল হুমায়ুন-ফতিমার বিবাহবার্ষিকী। কিন্তু তার আগেই সব হাসান পরিবারে অন্ধকার নেমে এসেছে। সন্তানকে হারিয়ে দিশাহারা পরিবার। বুধবার হুমায়ুনের শেষকৃত্য হয়েছে। কফিনবন্দি হয়ে পুত্র বাড়িতে ফিরবে, সেটা কল্পনা করতে পারেননি জন্মু-কাশ্মীর পুলিশের প্রাক্তন আইজি। নিজেও বহু জঙ্গি হামলা দেখেছেন। জঙ্গিদমন অভিযানে গিয়েছেন। কঠোর এবং দুঁদে সেই প্রাক্তন অফিসারও পুত্রকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। কাঁপা কাঁপা হাতে ফুলের তোড়া নিয়ে পুত্রকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। মাথা নত করে পুত্রের কফিনের সামনে দাঁড়িয়ে থেকে আবার ভিড়ের মধ্যে মিলিয়ে গিয়েছিলেন। পুত্রকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর সেই ভিডিয়োও প্রকাশ্যে এসেছে।
বুধবার অনন্তনাগের কোকেরনাগের জঙ্গলে জঙ্গিদের সঙ্গে শুরু হয়েছিল গুলির লড়াই। পাঁচ দিন হয়ে গেলেও সেই লড়াই এখনও চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy