Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Hyderabad

ভোররাতে বিতর্কিত এনকাউন্টার, তেলঙ্গানা ধর্ষণ-খুনের চার আসামীকে গুলি করে মারল পুলিশ

হেফাজত থেকে পালাতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হল হায়দরাবাদ গণধর্ষণ কাণ্ড ও খুনের ঘটনায় চার অভিযুক্তের। তদন্তের জন্য তাদের ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ।

খবর ছড়াতেই ঘটনাস্থলে ভেঙে পড়েছে ভিড়। ছবি: এপি।

খবর ছড়াতেই ঘটনাস্থলে ভেঙে পড়েছে ভিড়। ছবি: এপি।

সংবাদ সংস্থা
হায়দরাবাদ শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৭:৫৯
Share: Save:

ভোররাতে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হল হায়দরাবাদে চিকিত্সক গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় চার অভিযুক্তের। তদন্তের জন্য তাদের তেলঙ্গানার সাদনগরের ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। সাইবরাবাদের পুলিশ কমিনশনারের দাবি, ঘটনাস্থল থেকে পালানোর চেষ্টা করে অভিযুক্তরা। সে সময় পুলিশের গুলিতে তাদের মৃত্যু হয়। তবে এই ঘটনার পর বিতর্ক শুরু হয়েছে। সমাজের একাংশের প্রশংসা জুটলেও এ ঘটনার নিন্দায় মুখর হয়েছেন অনেকে। তাঁদের মতে, এতে বিচারব্যবস্থার অস্তিত্বকেই চ্যালেঞ্জ করা হয়। গোটা ঘটনার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।

তেলঙ্গানার আইনমন্ত্রী এ ইন্দ্রকরণ রেড্ডি জানিয়েছেন, ‘অভিযুক্তরা পুলিশের অস্ত্র ছিনতাই করে পালানোর চেষ্টা করে। গুলি চালায় পুলিশ। তাতেই মৃত্যু হয় অভিযুক্তদের’। ভগবান অভিযুক্তদের শাস্তি দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ঘটনার পুনর্নির্মাণের জন্য চার অভিযুক্তকে নিয়ে যাওয়া হয় সাদনগরে ৪৪ নন্বর জাতীয় স়ড়কের আন্ডার পাসের কাছে। শামশাবাদে টোলপ্লাজার কাছে ধর্ষণ করে খুনের পর প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে সাদনগরের পুড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পরের দিন চিকিত্সকের দগ্ধ দেহ পাওয়া গিয়েছিল। ঘটনার দিন ঠিক কী ঘটেছিল তার পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য জোগাড় করতেই শুক্রবার ভোররাতে অভিযুক্তদের সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সাদনগর নিয়ে যাওয়ার সময় সুযোগ বুঝে পালানোর চেষ্টা করে ওই চার জন। বাধ্য হয়ে গুলি চালায় পুলিশ। তাতেই মৃত্যু হয় ওই চার অভিযুক্তের। সাইবারাবাদ পুলিশ কমিশনার ভি সি সজ্জনার সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, অভিযুক্ত আরিফ, নবীন, শিবা ও চেন্নাকেশাভুলু পুলিশের গুলিতে মারা গিয়েছে। ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়ার পথে সাদনগরের চাতানপল্লিতে পুলিশের হেফাজত থেকে পালানোর চেষ্টা করে অভিযুক্তরা। ঘটনাটি হয়েছে শুক্রবার রাত তিনটে থেকে ভোর ছ’টার মধ্যে। ঘটনাস্থলে গিয়েছেন উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকেরা। ঘটনাস্থলে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

গত ২৮ নভেম্বর তেলঙ্গানায় শামশাবাদের আউটার রিং রোডের আন্ডারপাসের নীচে উদ্ধার হয় ওই চিকিত্সকের পোড়া দেহ। আগের দিন অর্থাত্ ২৭ নভেম্বর হায়দরাবাদ শামশাবাদে টোল প্লাজার কাছে ধর্ষণ করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। পরে আউটার রিং রোডের আন্ডারপাসের কাছে দেহটিতে পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: আদালতের পথে ধর্ষিতাকে হত্যার চেষ্টা উন্নাওয়ে, ৯০ শতাংশ অগ্নিদগ্ধ তরুণী

কল্লুরু গ্রামের একটি পশু-হাসপাতালে কাজ করতেন ওই তরুণী চিকিত্সক। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ঘটনার সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে প্রথমে গোচিবাওলিতে এক চর্মচিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন তিনি। নিজের স্কুটারটি শামশাবাদ টোল প্লাজার কাছে রেখে ট্যাক্সি নিয়ে ওই চিকিৎসকের সঙ্গে তিনি দেখা করতে যান। ফিরে এসে দেখেন, স্কুটারের পিছনের চাকাটি পাংচার হয়ে গিয়েছে।

আরও পড়ুন: ঘুমন্ত বিমান সেবিকার ছবি তুলে কী হাল হল দেখুন এই টুইটার ইউজারের

পুলিশ জানিয়েছে, ২৭ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ টোল প্লাজ়ায় তরুণী চিকিৎসককে স্কুটার রাখতে দেখেই তাঁকে ধর্ষণের ছক কষেছিল চার অভিযুক্ত। তরুণী ট্যাক্সিতে চলে যেতেই স্কুটারের চাকা ফাঁসিয়ে দেয় নবীন। তরুণী ফিরে আসার পরে আরিফ বলে, চাকা তারা সারিয়ে দেবে। স্কুটার নিয়ে শিবা চলে যায়। তখন আরিফ, নবীন এবং চিন্তকুন্ত টোল প্লাজ়ার কাছেই একটি ঘরে টেনে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে তরুণীকে। চাকা সারিয়ে ফিরে এসে ধর্ষণ করে শিবাও। তরুণীর মুখ চেপে ধরে আরিফ। তরুণী নিথর না-হয়ে যাওয়া পর্যন্ত মুখ থেকে হাত সরায়নি সে। এর পরে স্কুটারটি নিয়ে কয়েক বোতল পেট্রল কেনে দু’জন। অন্য দু’জন আরিফের লরিতে দেহ নিয়ে যায় আন্ডারপাসে। কিছুটা পেট্রল বার করা হয় তরুণীর স্কুটার থেকেও। এর পরে আন্ডারপাসের এক কোণে দেহ নামিয়ে তেল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে পালায় তারা। পরের দিন ভোরে এক দুধ-বিক্রেতা সেখানে দেহটি জ্বলতে দেখে পুলিশে খবর দেন।

তদন্ত জানা যায় তরুণী চিকিত্সকক ওই টোল প্লাজা থেকে রাত সওয়া ৯টা নাগাদ বোনকে ফোন করে বলেন, দুই ট্রাকচালক তাঁকে সাহায্য করবে বলছে। তাঁর আপত্তি সত্ত্বেও টায়ার সারিয়ে দেবে বলে স্কুটার নিয়ে চলে গিয়েছে এক জন। বোন তাঁকে পরামর্শ দেন, স্কুটারটি রেখে ট্যাক্সি ধরে চলে আসতে। সে-ই শেষ কথা। পৌনে ১০টায় বোন আবার ফোন করে দেখেন, মোবাইল বন্ধ। পরের দিন সকালে শামশাবাদের আউটার রিং রোডের আন্ডারপাসের নীচে ওই চিকিৎসকের পোড়া দেহাংশ মেলে।

যেখানে ধর্ষণ করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ সেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় আনন্দবাজার:

ঘটনারর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে সাইবারাবাদ পুলিশ। মহম্মদ আরিফ (২৬), জল্লু শিবা (২০), জল্লু নবীন (২০) এবং চিন্তকুন্ত চেন্নাকেশভুলু (২০) নামে এই চার জনই ট্রাকের কর্মী। এ দিনের এনকাউন্টারে মৃত্যু হয়েছে এই চার অভিযুক্তেরই।

অন্য বিষয়গুলি:

Hyderabad Gang Rape Police Hyderabad Encounter Hyderabad rape case Telangana Gangrape
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy