বিদেশি ট্রাইবুনালের নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতার অভাব নিয়ে সরব হলেন মানবাধিকার কর্মীরা। অসমে খসড়াছুট, ডি-ভোটার ও ফরেনার্স ট্রাইবুনাল অন্যায় ভাবে বিদেশি হিসেবে দাগিয়ে দিয়েছে, এমন ব্যক্তিদের হয়ে ‘সিটিজেনস ফর অসম’ গত এক বছর ধরে লড়ছে। তাদের তরফে রাজ্যের তিন জেলায় ঘুরে ডি-ভোটার ও খসড়াছুটদের সঙ্গে কথা বলার পরে তীস্তা সেতলবাড়, মিহির দেশাই ও বৃন্দা গ্রোভাররা দাবি তুললেন, আরও চাপমুক্ত, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ করে তুলতে হবে বিদেশি ট্রাইবুনালকে। এখানে সাংবাদিক বৈঠকে তাঁরা দাবি করেন, বিদেশি ট্রাইবুনালে বিচারের ভার দেওয়া হোক অভিজ্ঞ আইনজীবীদের। সেখানে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার থাকুক।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশ, এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের ৬০ দিনের মধ্যে খসড়াছুটদের স্থানীয় বিদেশি ট্রাইবুনালের দ্বারস্থ হতে হবে। খসড়ছুটের সংখ্যা এখন ৪১ লক্ষ ১০ হাজার ১৬৯। নিত্য দিন এই সব ট্রাইবুনাল যে ভাবে ভাষিক ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিভিন্ন তথ্য চেয়ে, নাম বা বয়সের গরমিল তুলে ধরে বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত করছে— তাতে রাজ্য জুড়ে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। গত দু’দিন ধরে অসমের নগাঁও, মরিগাঁও ও চিরাং জেলা ঘুরে খসড়াছুট, ডি-ভোটার, তথাকথিত সন্দেহজনক নাগরিকদের সঙ্গে কথা বলার পরে তীস্তা, মিহিররা আজ গুয়াহাটিতে জানান, অসম চুক্তি মেনে এনআরসি নবীকরণ বা বিদেশি চিহ্নিতকরণে কারও আপত্তি নেই। কিন্তু চিহ্নিতকরণের প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্তর সন্দেহ ও অভিযোগের অবকাশ রয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, বিদেশি ট্রাইবুনালের বিচারে শুধু এক জন ব্যক্তি নয় গোটা পরিবার ছারখার হয়ে যায়। কিন্তু তার বিচারের প্রক্রিয়াই আধা-বিচারবিভাগীয়। বিচারকেরাও আইনের বিষয়ে তেমন অভিজ্ঞ নন।
আরও অভিযোগ, ট্রাইবুনাল এমন সব দুর্লভ তথ্য চাইছে, যা জোগাড় করা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। মিহিরবাবুর বক্তব্য, ট্রাইবুনাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে। এভিডেন্স অ্যাক্ট, দেওয়ানি বা ফৌজদারি প্রসিডিয়োর কোড— কিছুরই আওতায় আসে না এই ট্রাইবুনাল। তাই তাদের কার্যকলাপ ও বিচার প্রক্রিয়া কোনও নিয়ম মেনে চলছে না। চলছে সদস্যদের ব্যক্তিগত মতামতে। সদস্যদের বিদেশি ঘোষণা করার ‘টার্গেট’ বেঁধে দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ।
তীস্তাদেবীদের দাবি, গোটা দেশে, সংবেদনশীল ও অতি-ব্যক্তিগত মামলা বাদে যে কোনও মামলার শুনানিতে সাংবাদিকেরা থাকতে পারেন। কিন্তু বিদেশি ট্রাইবুনালে সাংবাদিকদেরও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। ফলে সন্দেহ হতেই পারে কিছু লুকোনোর চেষ্টা হচ্ছে। গোটা প্রক্রিয়ায় মানুষের বিশ্বাস উঠে গিয়েছে। অতি দরিদ্র পরিবারগুলির কাছে মামলা লড়ার টাকা নেই। কিন্তু নিয়ম থাকলেও সরকারি লিগাল এডের সুবিধা ডি-ভোটার, অভিযুক্ত বিদেশিরা পাচ্ছেন না। মানবাধিকার কর্মীদের মতে, ধর্ম বা ভাষার ভিত্তিতে নয়, গরিব ও প্রান্তিক মানুষেরা
সামগ্রিক ভাবে এই ভ্রান্ত প্রক্রিয়ার শিকার হচ্ছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy