Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Odisha Triple Train Accident

রেলের স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল কেউ বদলাতে পারেন? কী ভাবে? করমণ্ডল-রহস্য খুঁজল আনন্দবাজার অনলাইন

ভারতীয় রেলে এখন প্রায় পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতেই সিগন্যাল দেওয়া হয়। কিন্তু এর ব্যতিক্রম কি হয়? রেলকর্মীরা জানাচ্ছেন, হ্যাঁ, হয় ব্যতিক্রম। তবে অত্যন্ত জরুরি বা বিশেষ পরিস্থিতিতে।

How can the train signal turn green or yellow from red manually

লাল হয়ে থাকা সিগন্যাল পেরোনোর জন্য নির্ধারিত এই ফর্ম পূরণ করে (ডান দিকে) স্টেশন মাস্টার ‘অনুমতিপত্র’ দেন ট্রেনচালককে। ছবি: সংগৃহীত।

উজ্জ্বল চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২৩ ০৮:৫৮
Share: Save:

করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার ‘মূল কারণ চিহ্নিত হয়ে গিয়েছে’। রবিবার সকালে এমনটাই জানিয়ে দিয়েছিলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তার আগের দিন, প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে ইঙ্গিত দেওয়া হয়, সিগন্যাল ব্যবস্থার ত্রুটিতেই এই দুর্ঘটনা। তখন প্রশ্ন ছিল, এই ত্রুটির উৎস কী? যান্ত্রিক ত্রুটি, না কি এর পিছনে কোনও মানুষের হাত রয়েছে? রবিবার রেলমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে স্পষ্টই ইঙ্গিত দিয়ে দেন, সিগন্যালে ত্রুটির দায় মানুষেরই। তিনি বলেন, ‘‘ওই কাজ যাঁরা করেছেন তাঁদেরও চিহ্নিত করে ফেলা হয়েছে।’’ এর পর প্রশ্ন ওঠে, যদি মানুষের হাতেই এই দুর্ঘটনা ঘটে থাকে, তা কি নিছক ভুলের ফল, না কি অন্য কিছু?

ভারতীয় রেলে এখন প্রায় পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি (রুট রিলে ইন্টারলকিং সিস্টেম)-তেই সিগন্যাল দেওয়া হয়। কিন্তু এর ব্যতিক্রম কি হয়? রেলকর্মীরা জানাচ্ছেন, হ্যাঁ, হয় ব্যতিক্রম। তবে অত্যন্ত জরুরি বা বিশেষ পরিস্থিতিতে। এটি করতে গেলে অনেক নিয়মকানুন মেনে করতে হয়। ঊর্ধ্বতনের অনুমতি, নানাবিধ সতর্কতা মেনেই ‘ম্যানুয়ালি’ সিগন্যাল দেওয়া যায়। এবং প্রয়োজনে তা দেওয়া হয়ও। কোন কোন পরিস্থিতিতে এটি করা যায় এবং কী কী নিয়ম মেনে করা যায়, তার খোঁজ নিল আনন্দবাজার অনলাইন। রেল আপাতত করমণ্ডল দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে যা যা বলেছে, তার সঙ্গে সরাসরি জড়িয়ে এই ‘ম্যানুয়াল’ সিগন্যাল ব্যবস্থাই।

কী ভাবে চলে স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ব্যবস্থা

প্রত্যেক রেলস্টেশনেই স্টেশন মাস্টারের সামনে একটি ‘প্যানেল বোর্ড’ থাকে। ‘লাইন ক্লিয়ার’ থেকে ‘পয়েন্ট সেটিং’-এর পাশাপাশি ওই ‘প্যানেল বোর্ড’ থেকে সিগন্যালও দেওয়া হয়। বিভিন্ন বোতামের মাধ্যমে পুরোটাই চালনা করেন স্টেশন মাস্টার। এবং এই গোটা ব্যবস্থাটাই স্বয়ংক্রিয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেলের সিগন্যাল বিভাগের এক কর্তা জানাচ্ছেন, রিলে মেশিনের সাহায্যে এই গোটা প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয় বলে একে ‘রুট রিলে ইন্টারলকিং সিস্টেম’ বলে। প্যানেল বোর্ড থাকে স্টেশন মাস্টারের ঘরে। তাই ঘরটিকে ‘প্যানেল রুম’ বলা হয়। সংলগ্ন ঘরেই ‘রিলে’গুলি রাখা থাকে। ওই ঘরকে বলে ‘রিলে রুম’। সেখানেই থাকে ‘রিলে বক্স’। এটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর এবং সংরক্ষিত একটি জায়গা। তালাবন্ধ অবস্থায় থাকে। ‘রিলে রুম’-এর দরজার তালা দু’টি চাবি একত্রিত করে খুলতে হয়। একেবারেই ব্যাঙ্কের লকারের মতো। এই চাবি দু’টি থাকে স্টেশন মাস্টারের ঘরে অর্থাৎ ‘প্যানেল রুম’-এ একটি তালাবন্ধ বাক্সে। সেই বাক্সের চাবি থাকে স্টেশন মাস্টারের কাছে। ‘রিলে রুম’ খোলার ওই দু’টি চাবির একটি এসএনটি (সিগন্যাল অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন) বিভাগের কর্তব্যরত আধিকারিকের এবং অন্যটি স্টেশন মাস্টারের। দু’জনে দু’টি চাবি একত্রে ব্যবহার করে ‘রিলে রুম’-এর তালা খুলতে পারেন। এমন কড়া ব্যবস্থার কারণ একটাই, যাতে যে কেউ ঢুকে পড়তে না পারেন ‘রিলে রুম’-এ। কারণ, ওখানেই স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে সিগন্যাল হওয়ার প্রাণভোমরা (রিলে) রয়েছে। যদি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ওই ঘরে ঢুকতেই হয়, তা হলে সরকারি খাতায় লিখে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষেই করতে হবে। এই চাবি বাইরের কারও পক্ষে নাগাল পাওয়া সম্ভব নয় বলেই রেলের দাবি।

রেলের বিভাগীয় ম্যানেজারের দফতর (ডিআরএম অফিস) -এ থাকা ‘কন্ট্রোল’-এর নির্দেশেই স্টেশন মাস্টার সিগন্যাল দেওয়া বা না-দেওয়ার কাজটি করেন। গোটা প্রক্রিয়াটিই হয় রেলের নিজস্ব টেলিফোন লাইনে কথোপকথনের মাধ্যমে। রেলের দাবি, পয়েন্ট ঠিকঠাক জায়গায় সেট করা এবং লাইন ক্লিয়ার থাকা— এই দু’টি বিষয় নিশ্চিত না হলে ‘রুট রিলে ইন্টারলকিং সিস্টেম’-এ কোনও ভাবেই সিগন্যাল হওয়ার কথা নয়। লাল সিগন্যাল লালই থেকে যাবে। সবুজ অথবা হলুদ হবে না কিছুতেই। ধরা যাক, প্যানেলে বোতাম চাপার পরেও একটি সিগন্যাল সবুজ বা হলুদ হচ্ছে না। লালই থেকে যাচ্ছে। সিগন্যাল বিভাগের ওই কর্তার দাবি, এ ক্ষেত্রে প্রথম কারণ হতে পারে, লাইন ক্লিয়ার না-থাকা। অর্থাৎ, ওই লাইনে কোনও ট্রেন রয়েছে। তাই স্টেশন মাস্টার শত চেষ্টা করেও প্যানেল থেকে ওই লাইনের সিগন্যাল কোনও ভাবেই লাল থেকে সবুজ বা হলুদ করতে পারবেন না। স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় ‘লাইন ক্লিয়ার’ থাকাটা সিগন্যাল হওয়ার জন্য বাধ্যতামূলক। দ্বিতীয় কারণ হতে পারে, ‘পয়েন্ট’ ঠিকঠাক ভাবে ‘সেট’ না-হওয়া। ধরা যাক রেলপথের একটা জায়গায় মূল লাইন থেকে এক বা একাধিক দিকে লাইন ভাগ হয়েছে। পয়েন্টের মাধ্যমে সেখানে রেললাইন ‘সেট’ করা হয়। ট্রেন কোন দিকের লাইনে যাবে তা ঠিক করা হয় ওই পয়েন্টের মাধ্যমেই। পয়েন্ট সেট করে যে দিকে ঘোরানো থাকবে, ট্রেন সে দিকেই যাবে। আগে এটা ‘লিভার’-এর মাধ্যমে ‘সেট’ করা হত। অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে ওই লিভারের কাজ করে স্বয়ংক্রিয় ‘মোটর’। প্যানেল বোর্ডের বোতামের মাধ্যমেই মোটর চালিয়ে পয়েন্ট সেট করেন স্টেশন মাস্টার। এই পয়েন্ট একেবারে নিখুঁত ভাবে সেট না হলে সিগন্যাল কোনও ভাবে লাল থেকে সবুজ বা হলুদ হবে না। পয়েন্টে একটা গাছের পাতা বা নুড়ি থাকলেও স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে হবে না সিগন্যাল। যদি ওই লাইনে সেই সময় কোনও ট্রেন আসার কথা থাকে, তার চালক ওই লাল সিগন্যালে দাঁড়িয়ে যাবেন। সিগন্যাল কোনও ভাবেই তাঁর ভাঙার কথা নয়। যত ক্ষণ না সবুজ হচ্ছে, তত ক্ষণ ট্রেন নিয়ে তাঁকে ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকতে হবে।

Symbolic Image

পয়েন্ট: এই অংশে (ক) আগে লিভার থাকত (বাঁ দিকে)। অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে মোটর থাকে। এই মোটরের সাহায্যে পয়েন্ট সরানোর কাজ হয় প্যানেল বোর্ড থেকে। এই অংশ (খ) সরে গিয়ে পয়েন্ট সেট হয় (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।

করমণ্ডলের ক্ষেত্রে বাহানগা বাজার স্টেশনের ‘হোম সিগন্যাল’ সবুজ ছিল বলেই রেলের দাবি। ‘হোম সিগন্যাল’ সবুজ হওয়ার অর্থ, ওই স্টেশনে ঢোকার অনুমতি দিয়েছেন স্টেশন মাস্টার, ভায়া মেন লাইন। কখনই সেটা লুপ লাইন নয়। যদি লুপ লাইনে ঢোকার অনুমতি দিতেন, তা হলে সিগন্যাল হলুদ হত। সঙ্গে ‘রুট ইন্ডিকেটর’ও জ্বলত। এবং হোম সিগন্যাল কখনওই সবুজ হত না। লুপ লাইনে যে হেতু আগে থেকে মালগাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল, তাই ওই লাইনের সিগন্যালও কোনও মতে করমণ্ডলের চালককে দেওয়া সম্ভব নয় স্বয়ক্রিয় পদ্ধতিতে। কারণ, আপ লুপ ‘লাইন ক্লিয়ার’ ছিল না। যে হেতু সবুজ সিগন্যাল ছিল, তাই করমণ্ডল এক্সপ্রেসের চালক ওই সেকশনের সর্বোচ্চ গতিবেগে (প্রতি ঘণ্টায় ১২৮ কিলোমিটার) ট্রেনটি চালিয়েছিলেন। কিন্তু সরাসরি মেন লাইনে না গিয়ে ট্রেনটি ১৭এ নম্বর পয়েন্ট থেকে লুপ আপ লাইনে ঢুকে পড়ে। প্রাথমিক তদন্তের রিপোর্টে সে কথার উল্লেখও রয়েছে। আর সেখান থেকেই উঠছে নানাবিধ প্রশ্ন। কেন পয়েন্ট ঘুরে থাকা সত্ত্বেও প্যানেলে তার প্রতিফলন ঘটল না? তবে কি ‘ম্যানুয়ালি’ কিছু করা হয়েছিল?

কখন, কী নিয়ম মেনে দেওয়া যায় ‘ম্যানুয়াল’ সিগন্যাল

রেলের নিয়ম বলছে, যদি কোথাও সিগন্যালের সমস্যা হয়, তখন সংশ্লিষ্ট স্টেশন মাস্টার যোগাযোগ করেন এসএনটি বিভাগের সঙ্গে। ওই বিভাগের কর্মীরা প্রত্যেক স্টেশনেই থাকেন। তাঁরা তখন খতিয়ে দেখেন, নির্দিষ্ট কোনও পয়েন্টে শর্ট সার্কিট হয়েছে, না কি কোনও একটি পয়েন্টের সঙ্গে যুক্ত তারের নেটওয়ার্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, না কি মোটর বিকল হয়েছে! এর বাইরেও আরও নানা কারণ থাকতে পারে। সে সব খতিয়ে দেখেন তাঁরা। যদি বিষয়টি মেরামতের জন্য অনেকটা সময় লাগে, তা হলে তাঁরা স্টেশন মাস্টারকে জানান, সারাতে সময় লাগবে। একই সঙ্গে যদি বড়সড় কোনও সমস্যা না থাকে, তা হলে ওই পয়েন্ট ‘ম্যানুয়ালি সেট’ করে আটকে থাকা ট্রেনের চালককে গাড়ি নিয়ে এগোনোর অনুমতি দেওয়া যেতে পারে বলে পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে সে ক্ষেত্রে সিগন্যাল লালই থাকবে। স্টেশন মাস্টার এর পর পয়েন্টম্যানকে পাঠাবেন কাজ না-করা পয়েন্টের জায়গায়। সেখানে ‘ম্যানুয়ালি পয়েন্ট সেট’ করা হবে। এর পর পয়েন্ট ‘লক’ করা হবে ‘ক্ল্যাম্প’ দিয়ে। যাতে ট্রেন ওই পয়েন্টের উপর উঠলে ভারের কারণে বেলাইন না হয়ে যায়। তার পর স্টেশন মাস্টার ‘কাগুজে সিগন্যাল’ পাঠাবেন দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনের চালককে। ‘টি/৩৬৯ (৩বি)’ নম্বর ফর্মে তিনি এই ‘অনুমতি’ দেবেন। যেখানে চালককে বলা হয়, ‘‘খারাপ হওয়া সিগন্যাল ‘অন’ হিসাবে বিবেচিত করে আপনি ঘণ্টাপ্রতি সর্বাধিক ১৫ কিলোমিটার গতিবেগে অতিক্রম করতে পারেন।’’ চালক এই ‘অনুমতিপত্র’ হাতে নিয়ে তবেই ট্রেন চালাবেন। চালকের কেবিনে উঠে তাঁকে পরবর্তী স্টেশন পর্যন্ত ‘পাইলট’ করে নিয়ে আসবেন ওই পয়েন্টম্যান। এর গোটাটাই হয় ‘কন্ট্রোল’কে জানিয়ে। সিগন্যাল বিভাগের ওই কর্তার দাবি, এ ক্ষেত্রে সিগন্যাল কিন্তু লালই থাকবে। কারণ, রুট রিলে ইন্টারলকিং সিস্টেমের সার্কিটে যে কোনও রকমের ত্রুটিই সিগন্যালকে লাল থেকে অন্য কিছু করতে দেয় না।

coromandel express accident reason

বাহানগা বাজার স্টেশনের প্যানেল বোর্ড দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। ছবি: পিটিআই।

বাহানগায় তবে কী ঘটল?

বাহানগা স্টেশনে করমণ্ডলের জন্য সিগন্যাল সবুজই ছিল। তা হলে উপরের তত্ত্ব এ ক্ষেত্রে খাটছে না। আর সেখানেই একটি বেআইনি পদ্ধতির কথা বলছেন কেউ কেউ। স্পষ্ট ভাবে প্রকাশ্যে না বললেও রেলের স্টেশন মাস্টার বা সিগন্যাল বিভাগে অতীতে কাজ করা কয়েক জনের মতে, প্যানেল রুমে ঢুকে রিলে বক্স ‘প্রভাবিত’ করা যায়। প্রাক্তন এক রেলকর্তা জানাচ্ছেন, রক্ষণাবেক্ষণের সময় রিলে বক্সকে প্রভাবিত করে সিগন্যাল বদল করা হয় কোনও কোনও ক্ষেত্রে। রিলে আসলে এক ধরনের ‘সেন্সর’। সেই ‘সেন্সর’কে ‘অফ’ করাও যায়। তার ফলে সিস্টেমটা একেবারেই অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে প্যানেল রুম খোলার এক্তিয়ার যে দু’জনকে দেওয়া হয়েছে, তাঁদের অজ্ঞাতে এই ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। কাগজপত্রে লেখালিখির পাশাপাশি বিষয়টির জন্য কন্ট্রোলের অনুমতি এবং ‘প্রাইভেট নম্বর’ (যে গোপন সংখ্যার মাধ্যমে অনুমোদন দেন কর্তৃপক্ষ) নিতে হয়। এ ক্ষেত্রে সে সবের কোনও নথি রেলের কাছে নেই। তাই রেলমন্ত্রী যখন বলেন, দুর্ঘটনার মূল কারণ চিহ্নিত করা গিয়েছে। এই কাজ যাঁরা ঘটিয়েছেন তাঁদেরও চিহ্নিত করে ফেলা হয়েছে, তখন একটা অন্য ‘গন্ধ’ পাচ্ছেন বলে জানাচ্ছেন রেলের এই প্রাক্তনী। তাঁর কথায়, ‘‘রিলেকে যদি প্রভাবিত করতে হয়, তার জন্য খুলতে হবে ‘রিলে রুম’। আর সেই রুমের চাবি থাকে প্যানেল রুমে। যেখানে ২৪ ঘণ্টা রেলের কর্মী রয়েছেন। তাঁর চোখ এড়িয়ে ওই চাবি দু’টি নেওয়া সম্ভব নয়। আবার রিলে নিষ্ক্রিয় করার দক্ষতাও তো বাইরের লোকের থাকবে না। যদি না তিনি পারদর্শী হন।’’ তবে কি ‘অন্তর্ঘাত’? প্রাক্তন ওই রেলকর্তার দাবি, তদন্ত চলছে। এখন এ সব নিয়ে মন্তব্য করা যাবে না।

coromandel express accident reason

বাহানগা বাজারে করমণ্ডল দুর্ঘটনায় স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ব্যবস্থা নিয়েও বড়সড় প্রশ্ন তুলছেন রেলকর্মীদের একাংশ। অন্য একাংশ আবার সন্দিহান— সিগন্যাল ব্যবস্থায় ‘ম্যানুয়ালি’ কোনও ‘হস্তক্ষেপ’ হয়নি তো? তবে এ সব একান্তই তদন্তসাপেক্ষ। বিস্তারিত তদন্ত না-হলে সেই তত্ত্ব মানা হবে না। উচ্চ পর্যায়ের সেই তদন্ত শুরু হয়েছে। রেল সুরক্ষা কমিশনার (দক্ষিণ-পূর্ব সার্কল) সোমবার খড়্গপুরে সংশ্লিষ্ট অনেকের সঙ্গে কথা বলেছেন। রেল বোর্ড এই দুর্ঘটনার সিবিআই তদন্তের প্রস্তাব করেছে। ফলে বাহানগা বাজার স্টেশনে ওই দিন ঠিক কী হয়েছিল, তা এই তদন্ত শেষেই জানা যাবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy