বাজার ছেয়ে গেছে দেশি-বিদেশি সব নামী গাড়ির মডেলে। তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিজেকে বদলাতে পারেনি অ্যাম্বাসাডর গাড়ি। ফলে টিকেও থাকতে পারছিল না। এ বার জলের দরে হিন্দুস্তান মোটরসের ঐতিহ্যবাহী ‘অ্যাম্বাসডর’ ব্র্যান্ড বিক্রি হয়ে গেল ফরাসি গাড়ি প্রস্তুতকারক কোম্পানি পিউজো এসএ-র কাছে। মাত্র ৮০ কোটি টাকায় এই ব্র্যান্ড কিনে নিল তারা।
১৯৫৮ সালে ‘অ্যাম্বাসাডর’ গাড়িটি বাজারে আনে হিন্দুস্তান মোটরস। হুগলির উত্তরপাড়ার কারখানায় তৈরি করা এই গাড়ি সারা দেশে ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। কতই না স্মৃতি এই ব্র্যান্ডের গাড়িকে ঘিরে। একটা সময় পর্যন্ত মন্ত্রী-আমলা থেকে শুরু করে নায়ক-নায়িকা সবাই ছিলেন এ গাড়ির সওয়ারি। ভারতে প্রাইভেট কার মানেই গোলগাল অ্যাম্বাসাডর।
আরও পড়ুন: পনীরই খুনের হুমকি দিচ্ছেন, পাল্টা অভিযোগ ‘বন্দি’ বিধায়কদের
আটের দশক পর্যন্ত ভারতের বাজারে একচ্ছত্র ভাবে দাপিয়ে বেড়িয়েছে হিন্দুস্থান মোটরসের এই গাড়ি। ১৯৮০ সালে অ্যাম্বাসাডরকে প্রথম চ্যালেঞ্জ জানায় মারুতি ৮০০। কিন্তু তাতে এই গাড়ির চাহিদা ধসে যায়নি। কিন্তু নয়ের দশক থেকে দলে দলে ঢুকতে শুরু করল দেশি, বিদেশি নিত্যনতুন ব্র্যান্ডের গাড়ি।
স্মার্ট লুকিং, আরও স্মার্ট পরিষেবার ঢেউ-এর সামনে আস্তে আস্তে পিছতে শুরু করল এ দেশের এক কালের গাড়ি-ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর। সময়ের সঙ্গে তাল রাখতে চেহারা এক রেখেই এ গাড়িতে একটু আধটু বদলও যে আসেনি এমন নয়। কিন্তু তা ধোপে টেকেনি। কালের নিয়মে নিজেকে বদলাতে না পারা, ক্রেতাদের নতুন পছন্দ আর আধুনিকতার দাপটে চাহিদা কমতে কমতে তলানিতে ঠেকে গিয়েছিল অ্যাম্বাসাডরের।আটের দশকের মাঝামাঝিতেও বছরে অ্যাম্বাসাডরের বিক্রি ছিল ২৪ হাজারের মতো। ২০১৩-১৪ সালে সেই বিক্রি গিয়ে দাঁড়ায় মাত্র আড়াই হাজারে। ২০১৪ সালের ২৪ মে বন্ধ হয়ে যায় উত্তরপাড়ার কারখানার উৎপাদন।
অবশেষে বিক্রি হয়ে গেল ব্র্যান্ড। নামমাত্র দামে। সিকে বিড়লা গ্রুপের তরফে সংবাদ মাধ্যকে জানানো হয়েছে, পিউজো এসএ-র সঙ্গে একটি চুক্তি হয়ে গিয়েছে। ট্রেডমার্ক-সহ অ্যাম্বাসাডর ব্র্যান্ডটি ৮০ কোটি টাকায় হাত বদল হচ্ছে।” এটা বাদ দিলেও, গত মাসে এই দুই সংস্থার মধ্যে একটি পার্টনারশিপ ব্যবসার চুক্তিও সই হয়েছে। ১০ কোটি ইউরো (প্রায় ৭০০ কোটি টাকা) বিনিযোগ করা হবে এ দেশের গাড়ি বাজারে। তামিলনাড়ুতে তৈরি হবে গাড়ি এবং পাওয়ারট্রেন তৈরির একটি কারখানা।
আরও পড়ুন: নোট বাতিলের জেরে লাভই হয়েছে বাংলার!
বছরে প্রায় এক লক্ষ গাড়ি তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। তবে অ্যাম্বাসাডর ব্র্যান্ড কি ফরাসি সংস্থাটি এ দেশের বাজারে নতুন করে চালু করবে? নাকি এ নিয়ে তাদের অন্য কোনও পরিকল্পনা আছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy