আরুসা পারভেজ়
হিজাব পরায় কর্নাটকের ছাত্রী মুসকান খানকে গেরুয়া বাহিনীর হেনস্থার মুখে পড়তে হয়েছিল। আর কাশ্মীরে ঘটল ঠিক উল্টোটা।
জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর অ্যান্ড বোর্ড অব স্কুল এডুকেশন-এর দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় শীর্ষস্থান দখল করেছিলেন আরুসা পারভেজ়। সেই কৃতী ছাত্রীকে সমাজমাধ্যমে তীব্র ট্রোলের মুখে পড়তে হল হিজাব না পরায়। এমনকি প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়েছে।
আরুসা শ্রীনগরের ইলাহি বাগ সৌরার বাসিন্দা। গত ৮ ফেব্রুয়ারি দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়। সেখানে মোট ৫০০-র মধ্যে আরুসার প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৯। তাক লাগানো সাফল্যের পরেই উপত্যকায় সকলের নজরে এসেছিলেন তিনি। তাঁর ছবিও ছড়িয়ে পড়ে। পরিবারেরও খুশির অন্ত ছিল না। নানা দিক থেকে অভিনন্দন বার্তাও আসতে থাকে। কিন্তু একই সঙ্গে সমাজমাধ্যমে অশালীন মন্তব্যের শিকার হয়েছেন আরুসা। পরীক্ষায় সাফল্যের আনন্দ কার্যত দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে এই কিশোরীর।
আরুসাকে নির্লজ্জ বলে দাগিয়ে দিয়ে তার শিরচ্ছেদের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। তবে আরুসা জানিয়েছেন, তাঁকে নিয়ে খারাপ মন্তব্যে কিছু এসে যায় না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে নিশানা করা হচ্ছে তাঁর অভিভাবককেও। আনন্দবাজারকে আরুসা বলেছেন, ‘‘আমি মুসলিম। হিজাব পরি কি না-পরি, তাতে আমার ধর্মীয় বিশ্বাসে কোনও প্রভাব পড়ে না।’’
নেটনাগরিকদের অনেকের মতে, হিজাব না পরার জন্যই যে শুধুমাত্র আরুসার উদ্দেশে কটূক্তি করা হচ্ছে, তা-ই নয় চিরাচরিত ভাবে ছেলেদের প্রথম হওয়ার রীতি ভেঙে সামনে আসায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে একটা অংশের নিশানায় এই কাশ্মীরি কন্যা। এ ক্ষেত্রে হিজাব না পরাকে ঢাল করা হচ্ছে মাত্র।
গভর্নমেন্ট ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক আসাদুল্লা মীর জানিয়েছেন, আরুসার সঙ্গে যা হচ্ছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এই ঘটনায় ওই কিশোরী মানসিক ভাবে ভেঙে পড়তে পারে।
ইসলামিক স্টাডিজ়-এর ছাত্র আশরফ বুখারি আরুসার পাশে দাঁড়িয়ে জানিয়েছেন, এক জন মহিলা হিজাব পরবেন কি না, তা সম্পূর্ণ
তাঁর ইচ্ছাধীন।
ইসলামিক সেমিনারির মৌলানারাও অনলাইনে আরুসার হেনস্থার তীব্র নিন্দা করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, ইসলাম কখনওই সমাজমাধ্যমে কুকথা কিংবা ফতোয়া জারির অনুমতি দেয় না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy