প্রতীকী চিত্র।
ঘূর্ণিঝড় কাকে বলে তা হাড়ে হাড়ে জানি এ জীবনে। তবে তা আছড়ে পড়ার একদিন আগে এমন জোশ টের পাইনি। মঙ্গলবার দুপুরে ধামরা বন্দরে ডিউটির ফাঁকে বাতাসের গতিবেগ জরিপ করছিলাম। তখনই টের পেলাম, গড়ে ৫০ কিলোমিটার বেগে হাওয়া তো ছুটছেই, কখনও সেটা ঘণ্টায় ৬৫ কিলোমিটারও ছাড়িয়ে যাচ্ছে। সন্ধ্যায় মনে হচ্ছে, গতিবেগ ৮০ কিলোমিটার হবেই। সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাসও ২-৩ মিটার উঁচুতে। অর্থাৎ এ ঘূর্ণিঝড় খুব সামান্য নয়।
দুপুরে টিভি-র খবর আসে, মাটিতে আছড়ে পড়ার জন্য ইয়াসের পছন্দ আমাদের এই ছোট্ট বন্দর শহরই। কিলোমিটার তিরিশেক দূরে চাঁদবালির সাবেক বন্দর এবং ধামরার মাঝে ‘ল্যান্ডফল’ হতে পারে। তবে একেবারে নিখুঁত আন্দাজ সম্ভব হয় না, সব সময়ে। সন্ধ্যায় শুনছি, ধামরার উত্তরে বালেশ্বর জেলায় চাঁদিপুরের দিকেও তিনি ঘা দিতে পারেন। সেখানে আবার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মিসাইল পরীক্ষা কেন্দ্র। বিষয়টা বাড়তি দুশ্চিন্তার।
মোদ্দা কথা, বালেশ্বর, ভ্দ্রক, কেন্দ্রাপড়া, জগৎসিংহপুর এই তিন জেলাই ইয়াসের আসল ঝাপটা টের পাবে। উপকূল ধরে আর একটু দক্ষিণে পারাদীপ বন্দরও ঝড়ের পদধ্বনি ভালই টের পেয়েছে। ভারী বৃষ্টির মাঝে খুব অল্প সময়ের জন্যই আমরা রোদের মুখ দেখেছি।
আমাদের বাড়ি কেন্দ্রাপড়া শহরে। ১৯৯৯এর সুপার সাইক্লোনের সময়ে আমি বছর পাঁচেক। সেই স্মৃতি হালকা। কিন্তু বাবা ব্রজসুন্দর প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলায় তালিমপ্রাপ্ত। ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় কখন কী করতে হয়, জেলায় সমন্বয় রক্ষার কাজে বহু বছর জড়িয়ে। সে-দিক দিয়ে ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে আমারও অনেক দিনের ওঠাবসা।
দু’বছর আগে ফণীর সময়ে আমি ভুবনেশ্বরে এমবিএ করি। তখনই টের পেয়েছিলাম ঘূর্ণিঝড় কাকে বলে। গত বার আমপানের সময়ে বরং কেন্দ্রাপড়ায় আমাদের তেমন কিছু মনে হয়নি। এখন বন্দরের কার্গো বিভাগের আমি কার্গো বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার। বছর দেড়েক হল চাকরি করছি। আদানি-গোষ্ঠী বন্দরের ভার নেওয়ার পরে সুরক্ষা ব্যবস্থা মজবুত। বন্দরের টাউনশিপের বাইরে সাধারণ মানুষকে উদ্ধারকেন্দ্রে সরানো হয়েছে।
এখানকার বাসিন্দারা বেশির ভাগই বাঙালি। মনে হয়, বাঁচোয়া বালেশ্বর বা কেন্দ্রাপড়ার তুলনায় এই বন্দরে জনসংখ্যা কম, তাই প্রশাসনের ঝক্কি কিছুটা কম হল। টাউনশিপে বিদ্যুৎ আছে। ক্যান্টিনে রান্না খাবার। বুধবারটা অফিস ছুটি। আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকতে বলা হয়েছে। অভিজ্ঞতা থেকে প্রশাসন বিপদটা সামলাতে পারলেই নিশ্চিন্ত হব। মাথা ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করছি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy