মঙ্গলবারের বৈঠকের দিকে তাকিয়ে কূটনৈতিক মহল। —ফাইল চিত্র
গালওয়ান উপত্যকায় উত্তেজনা কমাতে ভারত-চিনের মধ্যে সামরিক স্তরে বৈঠক চলছিলই। তার মধ্যেই ঘটে গিয়েছে ১৫ জুনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা। তার পরেও এক দফা বৈঠক হয়েছে। কিন্তু সেনা সমাবেশ নিয়ে জট কাটেনি। এই পরিস্থিতিতে আগামিকাল মঙ্গলবার ফের বসছে ভারত-চিন ভারত চিন কোর কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক। আগের দু’বার চিনের দিকে মল্ডো পয়েন্টে হলেও আগামিকালের বৈঠক হবে ভারতীয় ভূখণ্ডের চুসুল পয়েন্টে। দু’পক্ষের সেনা সমাবেশ সরিয়ে স্থিতাবস্থা ফেরাতে দু’পক্ষের আলোচনা হবে বলে সেনা সূত্রে খবর।
মঙ্গলবার এই নিয়ে তৃতীয় বার বৈঠকে বসতে চলেছেন ভারতীয় ও চিন সেনার কোর কমান্ডার পদমর্যাদার আধিকারিকরা। ভারতের পক্ষে বৈঠকে নেতৃত্ব দেবেন ১৪ কোরের কমান্ডার হরেন্দ্র সিংহ। গালওয়ান উপত্যকা, প্যাংগং লেক-সহ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার একাধিক পয়েন্টে দু’দেশের সেনা সমাবেশ ঘিরে উদ্ভূত উত্তপ্ত পরিস্থিতি কমাতে দু’পক্ষই একাধিক প্রস্তাব দিয়েছে। সেই প্রস্তাবগুলি নিয়ে আলোচনা হবে বলে সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে।
পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় মে মাসের গোড়া দিকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় প্রচুর সেনা সমাবেশ করে চিন। ভারতও পাল্টা সেনা ও রসদ মজুত শুরু করায় নয়াদিল্লি-বেজিং সম্পর্কে টানাপড়েন শুরু হয়। উত্তেজনা বাড়ে গালওয়ানে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায়। সেই পরিস্থিতি থেকে স্থিতাবস্থা ফেরাতে শুরু হয়েছিল কোর কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক। গত ৬ জুন প্রথম দু’পক্ষের মধ্যে সেই বৈঠক হয়। তার পর ১৫ জুন রাতে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের জেরে উত্তেজনা চরমে ওঠে। সাময়িক ভাবে সেই সামরিক পর্যায়ের বৈঠক অনিশ্চিত হয়ে পড়লেও ২২ জুন ফের দু’পক্ষ আলোচনায় বসে।
আরও পড়ুন: তিব্বত হতে রাজি নই! কেন্দ্রশাসিত হওয়ার ‘অপমান’ সয়েও বলছে লাদাখ
২২ জুন প্রায় ১১ ঘণ্টার বৈঠক শেষে সেনা সূত্রে জানানো হয়েছিল যে, চিন ধাপে ধাপে সেনা সরাতে সম্মত হয়েছে। কিন্তু শি চিনফিংয়ের বাহিনী সেই প্রতিশ্রুতি কতটা পূরণ করেছে বা আদৌ সেনা সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে কিনা, আগামিকালের বৈঠকে তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলেও সেনা সূত্রে জানানো হয়েছে। কিন্তু ওই বৈঠকের পরেও উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে যে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে চিন তাদের বাহিনী সরায়নি। বরং কালো ত্রিপলের ছাউনির মতো অস্থায়ী কাঠামো তৈরির উপগ্রহ চিত্র ধরা পড়ে। স্বাভাবিক ভাবেই মুখে সেনা সরাতে রাজি হলেও চিনা বাহিনীর সদিচ্ছা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবারের বৈঠক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
আরও পড়ুন: জুলাইয়ে ছ’টি রাফাল বিমান আসছে বায়ুসেনার হাতে, অগস্টে প্রস্তুত হবে যুদ্ধের জন্য
ভারত-চিন মেজর জেনারেল পর্যায়ের বৈঠক চলাকালীনই গালওয়ান উপত্যকায় ব্যাপক সংঘর্ষে জড়িয়েছিল দু’দেশের সেনা। ভারতের দিকে বিহার রেজিমেন্টের কর্নেল-সহ ২০ জনের মৃত্যু হয়েছিল ওই সংঘর্ষে। চিনের দিকেও এক কমান্ডার পর্যায়ের সেনা অফিসারের মৃত্যু হয়েছিল। তবে তার সঙ্গে আর কত জনের মৃত্যু হয়েছিল সেই রাতের সংঘর্ষে, তা এখনও স্পষ্ট করেনি বেজিং। তবে ভারতীয় সেনা সূত্র উদ্ধৃত করে একাধিক সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, চিনের পক্ষেও অন্তত ৪০ জন হতাহত হয়েছেন ওই সংঘর্ষে। ফের যাতে এমন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সেই বিষয়টি নিয়েও দু’পক্ষের সেনাবাহিনীর মধ্যে আলোচনা হবে বলে সূত্রের খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy