প্রতীকী ছবি।
ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের পাঠ্যসূচি থেকে ছেঁটে ফেলা হয়েছে জরুরি অবস্থার প্রভাব, গুজরাত দাঙ্গার একাংশ বা ‘নর্মদা বাঁচাও’ আন্দোলনের মতো বহু ঘটনার অংশবিশেষ। করোনাকালে থমকে যাওয়া পড়াশোনায় ‘গতি আনতে’ তথা পড়ুয়াদের উপর থেকে সিলেবাসের ‘বোঝা কমাতেই’ এই পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এর অন্তর্তদন্তমূলক প্রতিবেদনে এই দাবি করা হয়েছে।
ঘটনাচক্রে, ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদীর সরকার প্রথম বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (এনসিইআরটি)-এর পাঠ্যসূচির তিন বার পর্যালোচনা হয়েছে। প্রথম বার ২০১৭ সালে হয়েছিল। তাতে এনসিইআরটি-র ১৮২টি পাঠ্যবইয়ে ১,৩৩৩টি সংশোধন, সংযোজন ও সংযুক্তিকরণ হয়েছিল। এর পর ২০১৯ সালে তৎকালীন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরের আমলে এই পরিবর্তন ঘটে। সম্প্রতি আবারও তাতে বদল ঘটেছে। যদিও সময়াভাবে নতুন পাঠ্যবই ছাপা হয়নি। বরং এই পরিবর্তনগুলি সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষকে মৌখিক ভাবে জানানো হবে বলে ওই প্রতিবেদনের দাবি।
মাস ছয়েক আগে এনসিইআরটি-র সমস্ত পাঠ্যবিষয়ে যুক্তিগ্রাহ্য পরিবর্তনে উদ্যোগী হন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ন্যাশনাল স্কুল কারিকুলাম (এনসিএফ)–এর প্রস্তাবিত পরিবর্তনের আগেই এই বদল ঘটানো হয়েছে। ফলে এনসিইআরটি-র পাঠ্যবইয়ে আরও পরিবর্তন দেখা যাবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।
ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ইতিহাস, রাষ্ট্রবিজ্ঞান এবং সমাজবিদ্যার ২১টি পাঠ্যবই খতিয়ে দেখার পর এই পরিবর্তন নজরে এসেছে। দু’টি পাঠ্যবইয়ে ২০০২ সালের গুজরাত দাঙ্গার অংশবিশেষ বাদ দেওয়া হয়েছে। ‘পলিটিক্স ইন ইন্ডিয়া সিন্স ইন্ডিপেন্ডেন্স’ নামে দ্বাদশের একটি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বইয়ে শেষ অধ্যায়ের দু’টি পাতা বাদ পড়েছে। প্রথম পাতায় গুজরাত দাঙ্গার সবিস্তার সময়সারণি ছিল। হিংসা রুখতে ব্যর্থ গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকারের বিরুদ্ধে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সমালোচনার অংশটি ছিল সেখানে। দ্বিতীয় পাতায় ওই দাঙ্গা সংক্রান্ত বিভিন্ন সংবাদপত্রের রিপোর্ট দেখা যেত। তবে এ সবই বাদ পড়েছে বলে অভিযোগ।
গুজরাত দাঙ্গার গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছাড়াও ‘নর্মদা বাঁচাও’ বা ‘দলিত প্যান্থার্স’ অথবা ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের বহু সামাজিক আন্দোলনের বিবরণেও ‘কোপ’ পড়েছে বলে দাবি।
কী কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? এ প্রশ্নের সরাসরি উত্তর এড়িয়ে গিয়েছেন এনসিইআরটি-র ডিরেক্টর দীনেশ প্রসাদ সকলানি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এই পদের দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। সকলানির যুক্তি, ‘‘আমি দায়িত্বভার গ্রহণ করার আগেই পাঠ্যবইয়ের পর্যালোচনার কাজ শেষ হয়েছে। ফলে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারব না।’’ এ নিয়ে তাঁর পূর্বসূরি শ্রীধর শ্রীবাস্তবের দাবি, ‘‘এটা এনসিইআরটি-র সিদ্ধান্ত। এবং তা জনসমক্ষেই রয়েছে। এ বিষয়ে আমি এটুকুই বলতে পারি।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy