অবিরাম বৃষ্টিতে অসমে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি। ছবি— পিটিআই।
অসমের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি। অবিরাম বৃষ্টিতে নতুন নতুন এলাকা চলে গিয়েছে জলের তলায়। বিপর্যস্ত জনজীবন, নষ্ট বিঘার পর বিঘা জমির ফসল। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা অসমের নলবাড়ি জেলার। সেখানে ১০৮টি গ্রামের ৪৫ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। গোটা অসমে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ১ লক্ষ ২০ হাজার পেরিয়ে গিয়েছে।
অবিশ্রান্ত বৃষ্টির জেরে ফুঁসছে অসমের ব্রহ্মপুত্র নদ। তাঁর একাধিক শাখানদী দুকূল ছাপিয়ে বইছে। ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে বিঘার পর বিঘা জমির ফসল, বসতবাড়ি। অসমের বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাজ্যের ১০ জেলায় ১ লক্ষ ১৯ হাজার ৮০০ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলির মধ্যে রয়েছে বাকসা, বরাপেটা, দারাং, ধেমাজি, ধুবড়ি, কোকরাঝার, লখিমপুর, শোনিতপুর, উদালগিরি এবং নলবাড়ি। অবস্থা সবচেয়ে খারাপ নলবাড়িতে। সেই জেলার ১০৮টি গ্রাম পুরোপুরি জলের তলায়। ৪৫ হাজার মানুষ বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন। তাঁদের মধ্যে কিছু মানুষকে ত্রাণশিবিরে রাখা হয়েছে। বেশির ভাগ মানুষই সর্বস্ব হারিয়ে রাস্তার উঁচু অংশে আশ্রয় নিয়েছেন। নলবাড়ি জেলার চিন্তা বাড়িয়েছে ভুটান থেকে বয়ে আসা নদী পাগলাদিয়া। গত ২৪ ঘণ্টায় পাগলাদিয়ার জলের স্তর অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাহাড়ে আরও বৃষ্টি হলে তার প্রভাব পড়বে সমতলের নলবাড়িতেও। তাই প্রস্তুতিতে কোনও খামতি রাখছে না প্রশাসন। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, আগামী কয়েক দিন অসমে বৃষ্টি চলবে।
নলবাড়ির একটি গ্রামের বাসিন্দা মনোজ রাজবংশী জানিয়েছেন, এ বারের বন্যায় তিনি সর্বস্ব হারিয়েছেন। আপাতত এক কাপড়ে নদীবাঁধে বসে আছেন পরিবার নিয়ে। তিনি বলেন, ‘‘এই বন্যা আমার সব কিছু কেড়ে নিয়েছে। আমার বাড়ির প্রতিটি জিনিস নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আমি এখন স্ত্রীকে নিয়ে নদীবাঁধে আশ্রয় নিয়েছি। জানি না কত দিন এ ভাবে থাকতে হবে। প্রতি বছর বন্যাতেই এ ভাবে বাড়ির সব জিনিস নষ্ট হয়ে যায়।’’
অসমে বন্যার জেরে বহু জায়গায় রাস্তা ভেঙে গিয়েছে। কিছু জাতীয় সড়কও জলের তলায়। এই অবস্থায় কোনও জায়গায় পৌঁছতেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy