ফ্লাইট লেফ্টেন্যান্ট ভাবনা কন্থ এবং ফ্লাইট লেফ্টেন্যান্ট স্বাতী রাঠৌর। ছবি:সোশ্যাল মিডিয়া।
ছোটবেলায় বাড়িতে বসে টেলিভিশনে দেখতেন প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ। তখন স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি এক দিন তিনি নিজেই স্বদেশের এই বর্ণময় অহঙ্কারের অংশ হবেন। সে দিনের কিশোরী আজ বায়ুসেনার আধিকারিক ভাবনা কন্থ। মঙ্গলবার প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে তিনি অংশ নিলেন। দেশের যুদ্ধবিমানের মহিলা চালক হিসেবে তিনিই প্রথম এই বিরল সম্মানের অধিকারী হলেন। ভাবনার পরিবারের শিকড় ছড়িয়ে আছে বিহারের দ্বারভাঙার বৌর গ্রামে। তবে তিনি বড় হয়েছেন বেগুসরাই শহরে।
তাঁর সঙ্গে অচলায়তন ভাঙলেন আর এক ‘গ্রামের মেয়ে’, স্বাতী রাঠৌর। ৭২তম প্রজাতন্ত্র দিবসে তিনিও প্রথম মহিলা পাইলট হিসেবে চপার উড়িয়ে নিয়ে গেলেন দিল্লিতে রাজপথের উপর দিয়ে। অন্য দিকে, রাজপথের কুচকাওয়াজে ভাবনা ছিলেন বায়ুসেনার ট্যাবলোতে। বর্তমানে রাজস্থানের বিমানঘাঁটিতে কর্মরত ফ্লাইট লেফ্টেন্যান্ট ভাবনা মিগ-২১ বাইসন ফাইটার জেটের পাইলট। ২০১৯ সালে বালাকোট-কাণ্ডের সময় এই একই যুদ্ধবিমানের পাইলট ছিলেন অভিনন্দন বর্তমান।
ভাবনা কন্থ ভারতীয় বায়ুসেনায় যোগ দেন ২০১৬ সালে। ৩ বছর পরে দেশের প্রথম ৩ মহিলা যুদ্ধবিমানের পাইলটের মধ্যে তিনি ছিলেন এক জন। আগেই তিনি সংবাদ মাধ্যমে বলেছেন, ‘‘আমি এখন মিগ-২১ চালাচ্ছি। কিন্তু ভবিষ্যতে রাফাল এবং সুখোই-ও আকাশে ওড়াতে চাই।’’
ভাবনার বাবা ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। তাঁকে দেখে ভাবনাও ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন। এর পর নামী বহুজাতিকে চাকরি পেতেও তাঁর সমস্যা হয়নি। কিন্তু মনে মনে তিনি আকাশে ডানা মেলেছিলেন সেই শৈশবেই। এরোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার মানসবিহারী বর্মা ছিলেন ভাবনাদের প্রতিবেশী। ‘এলসিএ তেজস’-এর নির্মাণ প্রকল্পে যুক্ত ছিলেন মানসবিহারী। তাঁকে দেখেই অনুপ্রাণিত হন ভাবনা। চাকরি ছেড়ে যোগ দেন ভারতীয় বায়ুসেনায়।
ভাবনার মতো স্বাতীও ছোটবেলা থেকেই আকাশে ওড়ার স্বপ্ন দেখতেন। স্বাতীর জন্ম রাজস্থানের নাগৌর জেলার এক গ্রামে। পরে পড়াশোনা করেন অজমেরে। স্কুলের পর্ব শেষ হওয়ার পরে স্বাতী যোগ দেন এনসিসি-তে। মেয়ের ইচ্ছেয় বাধা দেননি স্বাতীর বাবা-মা’ও। এনসিসি-তে তিনি শ্যুটিঙে স্বর্ণপদক পেয়েছিলেন।
আইএএফ-এর কমন অ্যাডমিশন টেস্টে স্বাতী উত্তীর্ণ হন ২০১৩ সালে। পরের বছর তিনি ডাক পান দেহরাদূনে, এয়ারফোর্স সিলেকশন বোর্ডের ইন্টারভিউয়ে। বাছাই পর্বের পরে ২০০ জন মহিলার মধ্যে শেষ অবধি ছিলেন স্বাতী-সহ মাত্র ৫ জন। ফ্লাইট লেফ্টেন্যান্ট স্বাতী সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ‘‘সুযোগ সর্বত্রই ছড়িয়ে আছে। সেটা কুড়িয়ে নেওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। তবে বাবা মায়েদেরও তাঁদের সন্তানের পছন্দ অপছন্দকে বুঝতে হবে। তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে সাহায্য করতে হবে।’’
স্বাতীর বাবা ভবানী সিংহ রাঠৌর রাজস্থান সরকারের উচ্চপদস্থ আধিকারিক। তিনিও আজ মেয়ের কৃতিত্বে গর্বিত। শুধু পরিবারের সদস্যরাই নন। স্বাতীর কৃতিত্বকে কুর্ণিশ জানিয়েছেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy