আপ নেত্রী আতিশীকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। রবিবার উপরাজ্যপালের বাসভবনের সামনে। পিটিআই
আপ-বিজেপি সংঘাত তীব্র হচ্ছে ফের। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল আজ ঘোষণা করেছেন, আন্দোলনরত কৃষকদের সমর্থনে আগামিকাল তিনি অনশন করবেন। আপ সদস্যদেরও তাতে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। অরবিন্দের দাবি, অবিলম্বে কৃষকদের সব দাবি মেনে নিতে হবে মোদী সরকারকে। এ দিনই দিল্লি পুরসভার দুর্নীতি নিয়ে সিবিআই তদন্তের দাবিতে পথে নামেন আপ নেতারা। আটক করা হয় আপ নেতা-নেত্রীদের। আপের অভিযোগ, এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে ভাঙচুর চালিয়েছে বিজেপির লোকজন।
দিল্লি পুরসভাকে তার প্রাপ্য ১৩ হাজার কোটি টাকা রাজ্য সরকার দিচ্ছে না, এই অভিযোগ তুলে গত সাত দিন ধরে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে ধর্নায় বসে রয়েছেন বিজেপি নেতা-কর্মী, পুর প্রতিনিধিরা। রবিবার তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনের অংশে ভাঙচুর চালান। সিসি-ক্যামেরা ভেঙে দেন। উত্তর দিল্লি পুরসভার মেয়র জয় প্রকাশের বক্তব্য, “ধর্নারত মহিলা-পুরুষেরা তখন শুয়ে। তাঁদের ‘প্রাইভেসি’ তথা ব্যক্তিগত গোপনীয়তাকে গুরুত্ব না-দিয়ে ক্যামেরা বসানো হচ্ছিল।”
বিজেপি-শাসিত দিল্লি পুরসভার বিরুদ্ধে পাল্টা সরব আপ। নিউ দিল্লি মিউনিসিপ্যাল কাউন্সিল (এনডিএমসি)-এর বিরুদ্ধে তারা ২৪৫৭ কোটি টাকার কেলেঙ্কারির অভিযোগ তুলেছে গত কাল। মধ্য দিল্লির ২৮ তলা সিভিক সেন্টার বাড়িটির মালিক দিল্লির উত্তর পুরসভা (নর্থ এমসিডি)। সেই অনুযায়ী তাদের বাড়িভাড়া প্রাপ্য দিল্লির দক্ষিণ পুরসভা (সাউথ এমসিডি)-র কাছ থেকে। কিন্তু উত্তর পুরসভা তাদের ২৪৫৭ কোটি টাকা ভাড়া মকুব করে দিয়েছে। আপের মতে, এটা দুর্নীতি ও সরকারি অর্থের অপব্যহার। আতিশীর কথায়, “উত্তর পুরসভা বারবার বলে, ডাক্তার, নার্স ও অন্য কর্মীদের বেতন দেওয়ারই নাকি টাকা নেই তাদের। অথচ তারা প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা ভাড়া মকুব করে দিল!”
আরও পড়ুন: আরএসএস দফতরে ফাইল হাতে প্রাক্তন ডিজি, সাক্ষাৎ ভাগবতের সঙ্গে
আরও পড়ুন: রাজ্যে ক্ষমতায় এলে ৭৫ লক্ষ চাকরি, প্রতিশ্রুতি বিজেপির, ‘ভাঁওতা’ বলছে তৃণমূল-বাম-কং
কেজরীবাল সরকারের স্বরাষ্ট্র ও পূর্তমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন এ নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ইতিমধ্যেই। আপের দাবি, সিবিআই তদন্ত। সেই দাবিতেই আজ বিক্ষোভ ও ধর্নার কর্মসূচি নেন রাঘব-আতিশীরা। তাঁরা পুলিশের কাছে অনুমতি চেয়েছিলেন এর জন্য। কিন্তু কোভিড অতিমারির কারণ দেখিয়ে পুলিশ তা খারিজ করে দেয়। অনুমতি ছাড়াই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও উপরাজ্যপাল অনিল বৈজলের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে আটক হন আপের চার বিধায়ক-সহ কয়েক জন শীর্ষ নেতা। রাঘব চড্ঢা, আতিশী তাঁদের অন্যতম। পুলিশ বৈজলের বাসভবনের কাছ থেকে আতিশীকে চার হাত-পা ধরে ঝুলিয়ে নিয়ে যায়। এক নেত্রীর এমন পুলিশি নিগ্রহের সমালোচনা করেছেন অনেকে। ছাড়া পাওয়ার পরে আপ নেতারা অভিযোগ আনেন, “বেআইনি ভাবে তাঁদের আটক করা হয়েছিল। দিল্লি পুলিশকে দিয়ে কেন্দ্র দুর্নীতি ধামাচাপা দিতে চাইছে।”
গত ভোটে কেজরীবালের ক্ষমতায় ফেরার পিছনে বিজেপির ভোটব্যাঙ্কের বড় ভূমিকা ছিল, এটা স্পষ্ট হওয়ার পর থেকে গত ক’মাসে বিজেপি-শাসিত দিল্লি পুরসভা বা কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আগের মতো রণংদেহি মেজাজে দেখা যাচ্ছিল না আপকে। কিন্তু কৃষক আন্দোলনে কেন্দ্র চাপে পড়ার পরে ফের সুর চড়িয়েছে আপ। আগামিকালের অনশন কর্মসূচির কথা জানাতে গিয়ে মোদী সরকারের আনা তিন কৃষি আইন সম্পর্কে কেজরীবাল বলেন, “হাজার হাজার মানুষ কৃষকদের সংগ্রামকে সমর্থন জানাচ্ছেন। তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দিতে আমি প্রত্যেককে এক দিন অনশন করার আহ্বান জানাচ্ছি। এই আইনগুলি দেশের পক্ষে ক্ষতিকর। অন্যায্য ভাবে লাভ করা (মুনাফাখোরি) ও মজুতদারি আর অপরাধ বলে গণ্য হবে না। এতে দাম বাড়বে জিনিসের।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy