বাদ যাননি তিনিও। পটনা হাইকোর্টের প্রথম মহিলা প্রধান বিচারপতি লীলা শেঠ। বহু বছর আগে আইনের দুনিয়ায় এই রকম গুরুত্বপূর্ণ পদে পৌঁছনোর যোগ্যতা অর্জন সত্ত্বেও লিঙ্গ বৈষম্যের অভিজ্ঞতা পিছু ছাড়েনি তাঁর।
লীলার বয়স এখন আশি পেরিয়েছে। পটনা হাইকোর্ট থেকে প্র্যাকটিস শুরু করে পরে কলকাতায় চলে যান তিনি। শেষমেশ অবশ্য দিল্লিতে রয়ে যান। সম্প্রতি একটি পত্রিকায় লীলা লিপিবদ্ধ করেছেন কর্মজীবনের কথা। সেখানেই বলেন, ১৯৭৮-এর ২৫ জুলাই দিল্লি হাইকোর্টের বিচারক হয়েছিলেন তিনি। আর তখনই বুঝেছিলেন মহিলা বিচারক হিসেবে কাজ করা কতটা অসুবিধাজনক।
লীলার কথায়, ‘‘তখন নিয়ম ছিল, নতুন বিচারক শপথ নেওয়ার পরে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কোর্টে বসবেন।’’ কিন্তু লীলাকে যে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কাজ করতে হয়েছিল, তিনি ছিলেন রক্ষণশীল। লীলার দাবি, ‘‘উনি ভাবতেই পারতেন না কোনও মহিলার পাশে কাজ করবেন। শুধু ভরা আদালতে নয়, বিচারপতিকে বন্ধ ঘরেও অনেক সময় আলোচনার জন্য নতুন বিচারকের সঙ্গে বসতে হয়।’’ কিন্তু লীলার সঙ্গে পাশে বসে কাজ করতে মোটেও রাজি ছিলেন না সেই প্রধান বিচারপতি। শেষমেশ অন্য এক সিনিয়র বিচারকের শরণাপন্ন হতে হয় লীলাকে। সেই বিচারক কিছুটা উদার হওয়ায় সে যাত্রা রেহাই পান লীলা। তাঁর কাছেই শিখে নেন, ‘এক জন খেলোয়ার থেকে কী ভাবে আম্পায়ার হয়ে উঠতে হয়।’
এ ছাড়াও অন্য একটি ঘটনার কথা জানিয়েছেন লীলা। আইনজীবীরা তাঁকে ‘মাই লর্ড’ বলে সম্বোধন করলে অস্বস্তি হত তাঁর। তাই তিনি জুনিয়রদের বলেছিলেন, আমায় বরং ‘মাই লেডি’ বলে ডাকো। কিন্তু লীলার অভিজ্ঞতা, ‘‘ওঁরা কেউ সেটা করেননি। কোর্টে আমি কোনও আইনজীবীকে মামলা-সংক্রান্ত প্রশ্ন করলে তিনি দেখতাম ‘মাই লর্ড’ বলে উপস্থিত পুরুষ বিচারকের দিকে তাকিয়ে উত্তর দিচ্ছেন। যেন আমি নয়, ওই বিচারকই তাঁকে প্রশ্নটা করেছেন!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy