সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশের বান্ধবগড় জাতীয় উদ্যানে একের পর এক হাতির মৃত্যুতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা দেশে। বাড়ছে রহস্য। ইতিমধ্যেই সেখানে তিন দিনে ১০টি হাতির মৃত্যু হয়েছে। সেই আবহেই এ বার সাসপেন্ড করা হল বনদফতরের দুই আধিকারিককে।
গত ২৯ অক্টোবর থেকে বান্ধবগড়ে একের পর এক হাতির মৃত্যুতে সাড়া পড়ে গিয়েছে নানা মহলে। হাতি মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সাসপেন্ড (নিলম্বিত) করা হয়েছে বান্ধবগড় ব্যাঘ্র সংরক্ষণের পরিচালক গৌরব চৌধুরী এবং সহকারী বনরক্ষক ফতেহ সিংহ নিনামাকে। তাঁদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগও আনা হয়েছে। বন প্রতিমন্ত্রী প্রদীপ আহিরওয়ার, অতিরিক্ত মুখ্যসচিব অশোক বারানওয়াল এবং বনবাহিনীর প্রধান অসীম শ্রীবাস্তবের যৌথ প্যানেলের রিপোর্টের ভিত্তিতেই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর। পাশাপাশি, বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় হাতিদের নিরাপত্তা এবং তাদের উপর নজরদারির জন্য একটি বিশেষ টাস্ক ফোর্স গঠনেরও নির্দেশ দিয়েছেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব। শীঘ্রই ওই অঞ্চলের হাতিদের বিশেষ রেডিয়ো কলার পরিয়ে তাদের গতিবিধির উপর নজর রাখা শুরু হবে।
আরও পড়ুন:
উল্লেখ্য, হাতি-মৃত্যুর ঘটনায় আগেই তদন্তের নির্দেশ দেন মধ্যপ্রদেশের বনমন্ত্রী রামনিবাস রাওয়াত। দোষীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির নির্দেশ দেওয়া হয়। এক সঙ্গে ১০টি হাতির মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে বিশেষ তদন্তকারী দলও গঠন করে মধ্যপ্রদেশ সরকার। দিল্লি থেকে বিশেষজ্ঞ দল বান্ধবগড়ে পৌঁছয়। ১৪ জন পশুচিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে শুরু হয় ময়নাতদন্ত। তাতেই প্রাথমিক ভাবে জানানো হয়, বিষক্রিয়ার কারণে মৃত্যু হয়েছে হাতিগুলির। মৃত হাতিগুলির সকলেরই পেটে প্রচুর পরিমাণে বাজরা পাওয়া গিয়েছে। তবে কী থেকে বিষক্রিয়া, না কি এর নেপথ্যে বড় কোনও চক্রান্ত কাজ করছে, তা নিয়ে এখনও সন্দিহান তদন্তকারীরা। বন দফতরের কিছু কর্মীর মতে, অতিরিক্ত কীটনাশক দেওয়া ফসল খাওয়ার ফলে বিষক্রিয়ায় হাতিগুলির মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। ইতিমধ্যেই ছ’জন কৃষককে চিহ্নিত করা হয়েছে, যাঁদের ক্ষেত থেকে হাতিগুলি বাজরা খেয়েছিল। ওই ফসলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানো হবে। তবে সব দিক খতিয়ে দেখতে এখনও চলছে তদন্ত।
আরও পড়ুন:
গত ২৯ অক্টোবর বিকেলে বান্ধবগড় ব্যাঘ্র সংরক্ষণ প্রকল্পের কোর খিটৌলি এলাকায় জঙ্গলে চারটি হাতির নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন বন দফতরের কর্মীরা। আশপাশের জঙ্গলে তল্লাশি চালিয়ে আরও পাঁচটি হাতিকে অসুস্থ অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে তাদেরও মৃত্যু হয়। শুক্রবার মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় আরও একটি হাতিকে। বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দলে মোট ১৩টি হাতি ছিল। তার মধ্যে দলের একমাত্র পুরুষ হাতি-সহ ১০টির মৃত্যু হয়েছে। বাকি তিনটি হাতির উপর নজরদারি চালানো হচ্ছে। এই তিনটি হাতি সুস্থ রয়েছে।