কৈলাস অর্জুন নাগাড়ে। ২০২০ সালে মহারাষ্ট্র সরকার তাঁকে ‘ইয়ং ফার্মার অ্যাওয়ার্ড’ দিয়েছিল। এ বার সরকারের বিরুদ্ধেই দাবি না মানার অভিযোগ তুলে হোলির দিন বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হলেন পুরস্কারজয়ী কৃষক।
বৃহস্পতিবার সকালে বুলঢানা জেলার শিবনি আরমাল গ্রামে একটি খেত থেকে কৈলাসের দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর জামার পকেটে তিন পাতার একটি সুইসাইড নোট পাওয়া গিয়েছে। সেখানে প্রশাসনের বিরুদ্ধে কৃষকদের দাবি না মানার অভিযোগ তুলেছেন তিনি। কৈলাসের পকেট থেকে উদ্ধার হওয়া চিঠিতে লেখা, ‘‘কৃষকদের সমস্যাকে গুরুত্ব দিতে চাইছে না প্রশাসন। যত ক্ষণ না আমাদের দাবি মানা হবে, তত ক্ষণ পর্যন্ত আমার দেহ কেউ সরাবেন না।’’ কৈলাসের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছেন কৃষকেরা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, গত কয়েক বছর ধরে খড়কপূর্ণ জলাধার থেকে ১৪টি গ্রামে সেচের জলের দাবি করে আসছিলেন কৈলাস। এমনকি এই দাবিতে ১০ দিন অনশনেও বসেছিলেন তিনি। কিন্তু তার পরেও সরকারের তরফে কোনও সহযোগিতা বা আশ্বাস পাননি বলে দাবি। আর এই ঘটনাই তাঁকে প্রচণ্ড আঘাত করে। ওই এলাকায় কৃষকদের মুখ ছিলেন কৈলাস। তিনি নিজেও একজন কৃষক। ফলে কৃষকদের অধিকারের দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরে লড়াই চালাচ্ছিলেন। তাঁর আত্মহত্যার ঘটনায় শিবনি আরমাল গ্রামে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
কৈলাসের স্ত্রী সুশীলা নাগাড়ে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘সরকারের অনীহার কারণে আমার স্বামী নিজের জীবন শেষ করে দিল। কৃষকদের অধিকারের জন্য লড়াই চালিয়ে গিয়েছে। কিন্তু প্রশাসন এই সমস্যাকে গুরুত্ব দেয়নি। যদি তারা কৃষকদের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখত, তা হলে আমার স্বামীকে হয়তো হারাতাম না।’’ কৈলাসের স্ত্রী ছাড়াও বাড়িতে রয়েছেন বৃদ্ধ বাবা এবং তিন সন্তান।
মহারাষ্ট্রের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হর্ষবর্ধন সপকল এই মৃত্যুর জন্য দেবেন্দ্র ফডণবীসের সরকারকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘মহাজুটি সরকার কৃষকদের সমস্যা নিয়ে চিন্তাভাবনা করে না। তাই এক কৃষককে হারাতে হল। নিজেকে শেষ করে দিতে ওঁকে বাধ্য করল সরকার।’’ বুলঢানা ক্রান্তি কিসান সংগঠনের নেতা রবিকান্ত টুপকার বলেন, ‘‘এটি আত্মহত্যা নয়, সরকারের নীতির কারণে এটি একটি খুন। কৃষকদের পাশে দাঁড়ানো তো দূরের কথা, ওঁদের আরও মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে সরকার।’’