শ্রদ্ধা: রাজঘাটে গাঁধীর সমাধিতে ফুল দিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার। ছবি: রয়টার্স।
ছ’বছর হতে চলল। নরেন্দ্র মোদী সাংবাদিক বৈঠক করেন না। অথচ বিদেশ থেকে ভারতে এসে সাংবাদিক বৈঠক করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সকাল থেকে খচখচ করছিল বিজেপির মন। বিদায় বেলায় আবার বারাক ওবামার মতো মোদীর বিরুদ্ধে কোনও বার্তা দিয়ে চলে যাবেন না তো ট্রাম্প? বিশেষ করে তাঁর সফরের সময়ে উত্তপ্ত উত্তর-পূর্ব দিল্লি। নাগরিকত্ব আইনকে ঘিরে জ্বলছে রাজধানী। বিকেল গড়াতে ট্রাম্পের একক সাংবাদিক বৈঠক হল। প্রশ্নও হল দিল্লিতে হিংসা ও মৃত্যু নিয়ে। নাগরিকত্ব আইন, মুসলিম নিয়ে মোদীর মনোভাব নিয়ে। কিন্তু এই সংক্রান্ত কম করে তিনটি প্রশ্নের উত্তরে কোথাও মোদীকে এক চিলতের জন্য কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন না ট্রাম্প। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে ট্রাম্পের জয়ধ্বনি শুরু করল বিজেপি। রাহুল গাঁধী না হয় আবার বিদেশে। কিন্তু ট্রাম্পের সফরে কেন সনিয়া গাঁধীকে আমন্ত্রণ জানানো হল না, সে প্রশ্ন তুলে কংগ্রেস গোঁসা করেই আছে। সে কারণে ট্রাম্পের সম্মানে রাষ্ট্রপতি ভবনের নৈশভোজও ‘বয়কট’ করেছে কংগ্রেস। তাদের আরও খোঁচা দিয়েই বিজেপি নেতা অমিত মালব্য বললেন, ‘‘ভারত-বিরোধীদের অনেকেই ভেবেছিলেন, ট্রাম্পকে দিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে বলাবেন। সিএএ-বিরোধী মন্তব্যও বার করে নেবেন। সে চেষ্টা সফল হল না।’’
চলতি বছরের শেষে আমেরিকায় নির্বাচন। অথচ মোদীর ভোট-পর্ব শেষ। বিহারে পরের বিধানসভা ভোট আসতেও ঢের দেরি। ফলে রাজধানীতে প্রশ্ন ছিলই, এখনই ট্রাম্পকে এনে কি মোদীর কোনও রাজনৈতিক লাভ হবে? বিজেপি কি কোনও ফায়দা তোলার চেষ্টা করবে? বিরোধীরা গোড়া থেকেই অভিযোগ করছেন, ভারতবাসীর টাকায় ট্রাম্পের প্রচারের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন মোদী। কিন্তু বিরোধীদের মনে আরও বড় প্রশ্ন, ট্রাম্পের সফরের সময়েই দিল্লিতে সংঘর্ষ বাড়তে দিল কেন বিজেপি? যখন মোদীর সেনাপতি অমির শাহের অধীনেই দিল্লি পুলিশ?
আরও পড়ুন: চার জায়গায় দেখলেই গুলি, আতঙ্কে কাঁপছে দিল্লি, নিহত ১৩
দিল্লি যখন জ্বলছে, সে সময় দু’দিন আগেই আমদাবাদে পাড়ি দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কাল রাতে দিল্লি ফিরে বৈঠক করেছেন। আজ সকালে যাননি রাষ্ট্রপতি ভবনে ট্রাম্পের আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনায়। এর আগে জামিয়া, শাহিন বাগে গুলি চলেছে, অমিত শাহ বিরোধী দলকে ডাকেননি। অথচ আজ ডাকলেন অরবিন্দ কেজরীবালকে, কংগ্রেসের নেতাকে। কেন? চাপে?
কংগ্রেস শিবিরে অনেকে বলাবলি করছেন, ট্রাম্পের সফরের সময়ে সংঘর্ষ বাধিয়ে আর দিল্লি পুলিশের মাধ্যমে তাতে পরোক্ষ মদত দিয়ে কি মোদীকেই বিব্রত করতে চেয়েছেন অমিত শাহ? না কি ট্রাম্পকেই বোঝানোর ছিল, সংখ্যালঘুরা প্রতিবাদ করছেন বলেই কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে মোদীকে? আর যাই হোক, ট্রাম্পের ‘ইসলাম-বিরোধী’ মানসিকতা সকলের জানা। সে কারণেই কি ট্রাম্প আজ মোদীর সম্পর্কে চুপ থাকলেন?
বিজেপির এক নেতা বললেন, ‘‘ভুলবেন না, ওবামার সময়ে পশ্চিম এশিয়ার শক্তি বাড়িয়েছিল আইএস। ট্রাম্পের জমানায় তারা নির্মূল হয়েছে। বিরোধীরা অভিযোগ করতে পারেন, এ দেশে ট্রাম্পের প্রচার হল। কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রী যে ভিতটি শক্ত করলেন, ভবিষ্যতে সুদে-আসলে তা থেকে ফয়দা তোলা হবে আমেরিকার থেকে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy