নয়াদিল্লির সঙ্গে ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক সম্পর্ক আগামী দিনে আরও উন্নত হতে চলেছে। সোমবার এমনটাই আভাস দিয়েছে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। ভারত-আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে এক ‘স্বর্ণযুগ’ আসবে, সেই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন মার্কিন উপ-বিদেশসচিব ক্রিস্টোফার লান্ডাউ। এমন একটি সময়ে তিনি এই মন্তব্য করেছেন, যখন আমেরিকার শুল্কনীতি এবং বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তাদের ‘শুল্কযুদ্ধ’ ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। আগামী ২ এপ্রিল থেকে নয়া শুল্কনীতি কার্যকর করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প। ঘটনাচক্রে, ওই সময়সীমা শেষ হওয়ার দু’দিন আগেই এই ‘স্বর্ণযুগ’ মন্তব্য করলেন আমেরিকার উপ-বিদেশসচিব।
কয়েক দিন আগেই আমেরিকার উপ-বিদেশসচিব হিসাবে ক্রিস্টোফারের নিয়োগ নিশ্চিত করেছে মার্কিন সেনেট। তার পরে গত শুক্রবার ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রীর সঙ্গে কথা হয় তাঁর। নতুন দায়িত্বের জন্য ক্রিস্টোফারকে অভিনন্দন জানান মিস্রী। সোমবার সমাজমাধ্যমে একটি পোস্টে মিস্রীর সঙ্গে তাঁর আলোচনার কথাও তুলে ধরেন ক্রিস্টোফার। মার্কিন উপ-বিদেশসচিব জানান, দুই দেশের বিভিন্ন উদ্বেগ এবং চ্যালেঞ্জের বিষয়ে তাঁদের আলোচনা হয়েছে। তাঁদের কথাবার্তায় দুই রাষ্ট্রনেতা ট্রাম্প এবং নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে ‘দুর্দান্ত সম্পর্কই’ প্রতিফলিত হয়েছে। প্রায় এক দশক আগে এক বার সপরিবার ভারত সফরে এসেছিলেন ক্রিস্টোফার। সেই সময়ে তাজমহলের সামনে তোলা একটি ছবি-সহ ভারত ভ্রমণের আরও বেশ কিছু ছবিও সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে তিনি জানিয়েছেন, আগামী দিনে আবার তিনি ভারতে আসতে চান। বস্তুত, ক্রিস্টোফারকে নতুন দায়িত্বে অভিনন্দন জানানোর সময়েই মিস্রী তাঁকে ভারত সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানান।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদীর ব্যক্তিগত সুসম্পর্ক সর্বজনবিদিত। মোদী এবং ট্রাম্প দু’জনেই তা স্বীকারও করেন। গত শুক্রবারও মোদীকে ‘দক্ষ রাষ্ট্রনেতা এবং আমার ভাল বন্ধু’ বলে মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প। তবে একই সঙ্গে দাবি করেছেন, বিশ্বের সর্বোচ্চ হারে শুল্ক আদায় করা দেশগুলির মধ্যে অন্যতম ভারত। ট্রাম্প যে দেশগুলির উপর ‘পারস্পরিক শুল্ক’ চাপানোর আভাস দিয়ে রেখেছেন তার মধ্যে ভারতও রয়েছে। সম্প্রতি ভারত প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেছেন, “আমি মনে করি, তারা (ভারত) এই শুল্ক কমাবে। তবে ২ এপ্রিল থেকে আমরাও তাদের উপর সেই শুল্ক ধার্য করব, যা তারা আমাদের পণ্যে বসাবে।’’
আরও পড়ুন:
ঘটনাচক্রে, এরই মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য গত সপ্তাহে ভারতে এসেছিলেন আমেরিকার প্রতিনিধিদল। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে জানা যায়, অর্ধেকের বেশি মার্কিন পণ্যের উপর আমদানি শুল্ক কমানোর বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে নয়াদিল্লি। যদিও সরকারি ভাবে এখনও এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। আবার ভেনেজ়ুয়েলা থেকে কোনও দেশ তেল কিনলে, আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য করতে গেলে ওই দেশকে ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক দিতে হবে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। ভেনেজ়ুয়েলা থেকে যে দেশগুলি তেল কেনে, তার মধ্যে অন্যতম ভারত। শুল্কনীতি ঘিরে এই বিতর্কের আবহেই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ‘স্বর্ণযুগ’-এর বার্তা দিলেন ট্রাম্পের উপ-বিদেশসচিব।