বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে স্থানীয় কয়েক জন বাসিন্দা প্রতিবাদ করেছিলেন। সেই রাগ থেকেই এলাকার এক জনকে বাড়িতে ঢুকে মারধর এবং হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল প্রোমোটার ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে। বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে চারু মার্কেট থানা এলাকায়। মারধরে জখম ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনার পরে প্রবল আতঙ্কে ভুগছেন তিনি। যদিও ওই প্রোমোটার মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
জানা গিয়েছে, আক্রান্ত ব্যক্তির নাম অজয় নিয়োগী। ৬২ বছরের ওই ব্যক্তি একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী ছিলেন। চারু মার্কেট থানা এলাকার গোবিন্দ ব্যানার্জি লেনে একাই থাকেন। অজয় জানান, এ দিন সকাল ৬টা নাগাদ বাড়িতে খবরের কাগজ পড়ছিলেন তিনি। সেই সময়ে অভিযুক্ত প্রোমোটার রাজু খান এবং তাঁর সঙ্গীরা বাড়ির সামনে হাজির হন। সেখানে দাঁড়িয়ে অজয়ের উদ্দেশ্যে গালিগালাজ করতে থাকেন তাঁরা। অভিযোগ, প্রোমোটারের বেআইনি নির্মাণে কেন বাধা দেওয়া হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তুলে অজয়কে মারধর শুরু করেন রাজু ও তাঁর সঙ্গীরা। তাঁকে মাটিতে ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয়। তাঁর নাকে এবং মুখে আঘাত লাগে। লোহার ভারী কোনও বস্তু দিয়েও আঘাত করা হয়। চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে অজয়কে উদ্ধার করে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যান।
পুলিশ ও এলাকা সূত্রে জানা গিয়েছে, অজয়ের পাড়াতেই কয়েক মাস আগে একটি বেআইনি নির্মাণ শুরু করেন অভিযুক্ত রাজু। এলাকার লোকজন ছ’তলা সেই বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন। সেই রাগেই এই হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আক্রান্ত অজয়। তাঁর কথায়, ‘‘আমি কোনও প্রতিবাদে ছিলাম না। পাড়ায় যাঁরা প্রতিবাদ করেছিলেন, তাঁদের সঙ্গে আমার যোগাযোগ রয়েছে, এই সন্দেহেই আমার উপরে চড়াও হয় ওরা। লোহার রড দিয়ে মারধর করে।’’ অভিযুক্ত রাজু অবশ্য বেআইনি নির্মাণের কথা কার্যত মেনে নেন। তবে, অজয়কে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। রাজু বলেন, ‘‘বড় নির্মাণ করতে গেলে কিছু এ দিক-ও দিক হয়ে যায়। এ নিয়ে বার বার নানা সমস্যা তৈরি করা হচ্ছিল। তবে, ওই ব্যক্তিকে মারধর করা হয়নি। সকালে বাড়ির সামনে পড়ে থাকতে দেখেছিলাম। আমিই তো লোকজন ডেকে ওঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাই।’’
এ দিন বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ চারু মার্কেট থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন অজয়। তাতে প্রোমোটার রাজু এবং আরও দু’জনের নাম রয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)