লিখিত ভাবে না জানিয়েও অন্তর্ঘাতের অভিযোগ জিইয়ে রাখলেন শিলচর আসনের বিজেপি প্রার্থী দিলীপকুমার পাল।
দু’দিন আগে সভা করে দলের জেলা কমিটি অন্তর্ঘাতের আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছিল। এর পরও দিলীপবাবু আজ বলেন, ‘‘আমি কাউকে অভিযোগ জানাতে যাচ্ছি না। কিন্তু কর্মীরা যখন জোর দিয়ে বলছেন, এ-ও ভোট কাটার চেষ্টা করেছেন, তখন তাঁদের কথাই বা আমি ফেলি কী করে!’’
জেলা কমিটির ওই বৈঠকে আমন্ত্রণ পেয়েও গরহাজির ছিলেন দিলীপবাবু। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে ঐক্যের বার্তা দিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। তাও তিনি মেনে নেননি। একে দলবিরোধী বলে মনে করেন না পুরসভার বিরোধী দলনেতা থেকে বিধায়ক হওয়া বিজেপি নেতা। তাঁর কথায়, ‘‘দলকে জেতানোর জন্য যাঁরা ভোটের প্রচারে প্রচণ্ড খেটেছে, তাঁদের ডাকে সাড়া দেওয়া আমার নৈতিক কর্তব্য। ভারপ্রাপ্ত জেলা সভাপতিকে সে কথা বুঝিয়ে বলেছি।’’ কর্মীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার জন্যই সে দিন সভায় উপস্থিত হতে পারেননি বলে জানান তিনি।
তবে অন্তর্ঘাত নিয়ে মুখ বন্ধ নেই তাঁর। শিলচর আসনের প্রাক্তন বিধায়ক প্রয়াত বিমলাংশু রায় বা তাঁর ছেলে তথা দলের রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজদীপ রায়ের নাম না টেনেই দিলীপবাবু বলেন, ‘‘কাছাড় জেলায় লবি-বাজির সূচনা হয়েছিল ১৯৯৬ সালে (সে বার প্রথম বিধায়ক হয়েছিলেন বিমলাংশুবাবু)। তা অন্তর্ঘাতের রূপ নেয় ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে (সে বার বিজেপি প্রার্থী কবীন্দ্র পুরকায়স্থ হেরেছিলেন)। সেই অসুখ ক্রমে বাড়ছিল।’’
অন্তর্ঘাতের অভিযোগে অপমানিত বোধ করে দলের কাছে নালিশ করেছিলেন শিলচরের পুরপ্রধান নীহারেন্দ্র নারায়ণ ঠাকুর। শিলচরের বিজেপি প্রার্থী দিলীপবাবুর কথায়, ‘‘তিনি অহেতুক বিষয়টিকে গায়ে মেখেছেন। কোথাও তাঁর নাম উল্লেখ করা হয়নি। এমনকী কর্মীরাও নন, তাঁর ওয়ার্ডের নাম এনেছে একটি পত্রিকা।’’ ফলে তার স্পষ্টীকরণ দেওয়ারও প্রয়োজন মনে করেননি দিলীপবাবু।
কিন্তু কেন আপনার বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাতে লিপ্ত হলেন দলের একাংশ নেতা? দিলীপবাবুর জবাব, ‘‘দুর্নীতিগ্রস্তরা আমাকে অপছন্দ করে। দলের ভিতরে বলুন, আর বাইরে।’’ কংগ্রেসিরা ঘোরতর অপছন্দ করলেও তাঁকে সম্মান করে, এ কথাও শোনাতে ভোলেননি। তিনি বলেন, ‘‘অন্যায় ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমার লড়াই চলবে। এলাকার উন্নয়নই লক্ষ্য আমার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর চিন্তাধারাই আমার বড় ভরসা।’’
পরাজয়ের আগাম বার্তা পেয়েই কি অন্তর্ঘাত নিয়ে এত হইচই? দিলীপবাবুর দাবি, তিনি ঈশ্বরে বিশ্বাসী। মানুষের উপর পূর্ণ আস্থা রয়েছে তাঁর। ফলে জয়-পরাজয় নিয়ে ভাবেন না। তিনি বলেন, ‘‘কিছু কিছু ব্যক্তির উচ্চাকাঙ্ক্ষা সমস্যার সৃষ্টি করেছে। সীমা ছাড়িয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষার দরুন অনেকে হতাশায় ভুগছেন। আর সেখান থেকেই যত যন্ত্রণা।’’
নিজের আসনে অন্তর্ঘাত নিয়ে দিলীপবাবু এত কথা শোনালেও কাটিগড়া নিয়ে নীরব থাকেন। সেই আসনের বিজেপি প্রার্থী অমরচাঁদ জৈন লিখিত ভাবে দলের কাছে সুবিচার চেয়েছেন। তিনি মূল অভিযুক্ত করেছেন দিলীপবাবুর নির্বাচন পরিচালন কমিটির চেয়ারম্যান অনিলচন্দ্র দে-কে। অনিলবাবুও কাটিগড়ায় দলীয় মনোনয়নের দাবিদার ছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy