ছবি: সংগৃহীত।
ইউপিএ-র অস্তিত্ব নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে প্রশ্ন তুলেছেন, তার জন্য কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ নেতারা দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নিষ্ক্রিয়তাকেই দায়ী করছেন। একই মত এনসিপি, ডিএমকে-র মতো ইউপিএ-র শরিকদেরও।
বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য, তৃণমূল নেত্রী ‘এখন ইউপিএ নেই’ বলে মন্তব্য করায় দলের তরফে মমতাকে আক্রমণ করা শুরু হয়েছে। কিন্তু ইউপিএ-র শেষ বৈঠক কবে হয়েছে, বা শেষ কবে সনিয়া বা রাহুল গাঁধী ইউপিএ-র শরিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, তা কেউ মনে করতে পারবে?
ইউপিএ-র পুরনো শরিকদের অভিযোগ, কংগ্রেস নিজে যে রাজ্যে শক্তিশালী, সেখানে তারা ইউপিএ-র শরিক দলগুলিকে গুরুত্ব দিতে বা আসন ছাড়তে চায় না। কিন্তু আঞ্চলিক দলগুলি আসন ছাড়বে বলে কংগ্রেস আশা করে। এনসিপি-র এক প্রথম সারির নেতা বলেন, ‘‘সংসদে তা-ও রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে অন্য দলগুলির সঙ্গে সমন্বয় রেখে চলেন। কিন্তু সংসদের বাইরে, রাজনৈতিক বিষয়ে সহযোগী দলগুলি কার সঙ্গে যোগাযোগ রাখবে? কংগ্রেস হাইকমান্ড কি কাউকে এই দায়িত্ব দিয়েছে?’’
ইউপিএ-র অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলার জন্য আজও কংগ্রেসের তরফে মমতাকে আক্রমণ করা হয়েছে। ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেল দিল্লিতে বলেছেন, ‘‘মমতার উদ্দেশ্য স্পষ্ট নয়। ইউপিএ ১০ বছর ক্ষমতায় ছিল। এখন উনি বলছেন, ইউপিএ কোথায়?’’ তৃণমূল-বিজেপির গোপন আঁতাতের ইঙ্গিত করে বঘেল বলেন, ‘‘মমতা শরদ পওয়ারের সঙ্গে দেখা করে বললেন, ইউপিএ বলে কিছু নেই। উনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করেছিলেন। কী আলোচনা হল, কাউকে বলেননি। সেটাও বলুন।’’
ইউপিএ সরকারকে বামেরা বাইরে থেকে সমর্থন করেছিল। ২০০৮-এ তারা সরে যাওয়ার পরে তৃণমূল ইউপিএ-তে যোগ দেয়। ২০১২-তে তৃণমূল ইউপিএ থেকে বেরিয়ে যায়। তার পরে তৃণমূলকে ইউপিএ-তে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা হয়নি। সিপিএমের নেতারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস-বাম জোট হলেও রাহুল গাঁধী কেরলে বামেদের বিরুদ্ধে লড়েছেন।
কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ ‘জি-২৩’ গোষ্ঠীর এক সদস্য বলেন, সনিয়া গাঁধী বেশ কয়েক বার বিরোধী নেতানেত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠকে মমতাও ছিলেন। এই ধরনের শেষ বৈঠকে দেশ জুড়ে আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছিল। ওই আন্দোলন ইউপিএ-র ছাতার তলায় ডাকা হয়নি। পরে কংগ্রেসের তরফেই আর আন্দোলন নিয়ে উৎসাহ দেখা যায়নি।
আর এক বিক্ষুব্ধ নেতা বলেন, ‘‘বাজপেয়ীর নেতৃত্বে এনডিএ ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পরেও এনডিএ-র অস্তিত্ব টিকে ছিল। কিন্তু ইউপিএ সরকার বিদায় নেওয়ার পরে জাতীয় রাজনীতিতে বা রাজ্য স্তরে ইউপিএ-র মধ্যে কোনও সমন্বয় দেখা যায়নি।’’
কংগ্রেসের মধ্যে এ বিষয়ে যে মতভেদ রয়েছে, দলের দুই মুখ্যমন্ত্রীর কথায় তা স্পষ্ট। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিংহ চন্নী বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল বিজেপিকে হারানোর পরেই প্রমাণ হয়েছে যে বিজেপিকে হারানো যায়। উল্টো দিকে ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গে ভোটের পরে মমতার অন্য ভাবভঙ্গি দেখা যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরে তিনি কংগ্রেসকে নিশান করছেন।
কংগ্রেস বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করছে না বলে মমতার অভিযোগ নিয়ে দলের মুখপাত্র পবন খেরার জবাব, ‘‘লড়াইয়ের মাপকাঠি কী? কংগ্রেসের ৮৯ জন সাংসদ, তৃণমূলের ৩৫। কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা ৭৬৭, তৃণমূলের ২৩৬। রাহুল গাঁধীর বিরুদ্ধে বিজেপি-আরএসএস যত মামলা করেছে, তার তুলনায় মমতার বিরুদ্ধে ক’টি মামলা হয়েছে?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy