গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
রাজ্যসভা সাংসদ স্বাতী মালিওয়াল ‘নিগ্রহকাণ্ডে’ গ্রেফতার করা হল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের ব্যক্তিগত সচিব বৈভব কুমারকে। শনিবার দুপুরে দিল্লি পুলিশের তরফে প্রথমে তাঁকে আটক করার কথা জানানো হয়। এর পর পুলিশ সূত্রে খবর মেলে, আম আদমি পার্টি (আপ)-র সাংসদ স্বাতীর দায়ের করা এফআইআরের প্রেক্ষিতে নিগ্রহের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে বৈভবকে।
দিল্লি পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, এমসে স্বাতীর মেডিক্যাল পরীক্ষার রিপোর্টও তাদের হাতে এসে গিয়েছে। তাতে আপ সাংসদের ডান গাল এবং বাঁ পায়ে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। জখম রয়েছে চোখের তলাতেও। যা থেকে তাঁর তোলা শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগ প্রমাণিত বলেই তদন্তকারীরা মনে করছেন।
শনিবার দুপুরে স্বাতীকাণ্ডের নতুন ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে আপ। সকালে দিল্লি পুলিশকে ‘ট্যাগ’ করে এক্স হ্যান্ডল পোস্টে স্বাতী দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ প্রধান কেজরীওয়ালের বাড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিকৃত করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন। তার পরেই এই পদক্ষেপ করে কেজরীর দল। প্রকাশিত ভিডিয়োতে (আনন্দবাজার অনলাইন যার সত্যতা যাচাই করেনি) দেখা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী কেজরীর বাসভবন থেকে পুলিশি ঘেরাটোপে বেরিয়ে আসছেন স্বাতী।
দিল্লি পুলিশ এবং ফরেন্সিক দল শুক্রবার কেজরীর বাসভবনে স্বাতী ‘নিগ্রহকাণ্ডের’ তথ্যপ্রমাণ এবং নমুনা সংগ্রহে গিয়েছিলেন। তার পরেই আপ নেত্রী তথা দিল্লির মন্ত্রী অতিশী প্রথম ভিডিয়ো ফুটেজটি (আনন্দবাজার অনলাইন যার সত্যতাও যাচাই করেনি) প্রকাশ করে দলেরই সাংসদ স্বাতীর বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ তুলেছিলেন। এর পরেই স্বাতী অভিযোগ তোলেন ভিডিয়োটি বিকৃত করা হয়েছে। এক্স পোস্টে তিনি লেখেন, ‘‘আমার কাছে তথ্য আছে যে, ওই লোকেরা এখন বাড়ির সিসিটিভিতে কারসাজি করছে।’’
আপ প্রকাশিত কেজরীর বাসভবনের প্রথম ফুটেজে স্বাতীকে সোফায় বসে নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে উচ্চৈঃস্বরে বাক্যবিনিময় করতে শোনা গিয়েছে। তার পরেই স্বাতীর তরফে ‘সিসিটিভি জালিয়াতির’ অভিযোগ তুলে পোস্ট করা হয়। স্বাতীর দাবি, গত ১৩ মে কেজরীওয়ালের সঙ্গে দেখা করতে তাঁর বাসভবনে গিয়েছিলেন তিনি। সে সময়ই তাঁকে শারীরিক নিগ্রহ করেন কেজরীর ব্যক্তিগত সচিব বৈভব কুমার। আপ সাংসদের দাবি, বৈভব তাঁকে ৭-৮টি চড় এবং পেটে লাথি মারেন।
বৃহস্পতিবার দিল্লি পুলিশের কাছে এফআইআর দায়ের করেন স্বাতী। সে রাতেই স্বাতীর মেডিক্যাল পরীক্ষাও করানো হয়েছিল দিল্লির এমসে। শুক্রবার ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৬৪ ধারার অধীনে স্বাতী নিজের বয়ান নথিভুক্ত করেন। তার পরেই স্বাতী ‘নিগ্রহকাণ্ড’ কার্যত নতুন মোড় নেয়। এই ঘটনায় দলের পুরনো অবস্থান থেকে সরে গিয়ে শুক্রবার বিকেলে দিল্লি আপ মন্ত্রী অতিশী দাবি করেন, স্বাতী বিজেপির এজেন্ট হয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরীওয়ালকে ফাঁসাতে গিয়েছিলেন। কেজরী সে দিন বাসভবনে না থাকায় তিনি মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বৈভবকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছেন বলে দাবি করেন অতিশী।
অথচ গত ১৪ মে আপের রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় সিংহ বিবৃতি দিয়ে বৈভবের হাতে স্বাতীর হেনস্থা হওয়ার কথা স্বীকার করেছিলেন। আপের সাফাই, তখন শুধু স্বাতীর বক্তব্য শুনেই সঞ্জয় ওই কথা বলেছিলেন। বৃহস্পতিবার বৈভবের নামে এফআইআর দায়ের হয়েছিল। শুক্রবার স্বাতীর বিরুদ্ধে দিল্লির সিভিল লাইন থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বৈভব। বিজেপির সঙ্গে আঁতাঁতের অভিযোগ প্রসঙ্গে স্বাতী বলেন, ‘‘দু’দিন আগে দল আমার পাশে দাঁড়িয়েছিল। আসলে বৈভব দলকে শাসিয়েছেন, যদি তিনি গ্রেফতার হন, তা হলে দলের সব গোপন তথ্য ফাঁস করে দেবেন।’’ শনিবার বৈভব শেষমেশ গ্রেফতার হলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy