(বাঁ দিকে) স্বাতী মালিওয়াল। অরবিন্দ কেজরীওয়াল (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
আম আদমি পার্টি (আপ) প্রধান তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের বাড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিকৃত করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুললেন দলেরই সাংসদ স্বাতী মালিওয়াল। দিল্লি পুলিশকে ‘ট্যাগ’ করে এক্স হ্যান্ডল পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমার কাছে তথ্য আছে যে, ওই লোকেরা এখন বাড়ির সিসিটিভিতে কারসাজি করছে।’’
শুক্রবার দিল্লি পুলিশ এবং ফরেন্সিক দল কেজরীর বাসভবনে স্বাতী ‘নিগ্রহকাণ্ডের’ তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহে গিয়েছিলেন। তার পরেই আপ নেত্রী তথা দিল্লির মন্ত্রী অতিশী একটি ভিডিয়ো ফুটেজ (আনন্দবাজার অনলাইন যার সত্যতা যাচাই করেনি) প্রকাশ করে স্বাতীর বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ তুলেছিলেন। কেজরীর বাসভবনের ওই ফুটেজে স্বাতীকে সোফায় বসে নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে উচ্চৈঃস্বরে বাক্যবিনিময় করতে শোনা গিয়েছে। তার পরেই স্বাতীর তরফে ‘সিসিটিভি জালিয়াতির’ অভিযোগ তুলে এই পোস্ট।
আপের রাজ্যসভা সাংসদ স্বাতীর দাবি, গত ১৩ মে কেজরীওয়ালের সঙ্গে দেখা করতে তাঁর বাসভবনে গিয়েছিলেন তিনি। সে সময়ই তাঁকে শারীরিক নিগ্রহ করেন কেজরীর ব্যক্তিগত সচিব বৈভব কুমার। গালে চড় এবং পেটে লাথি মারা হয়। বৃহস্পতিবার দিল্লি পুলিশের কাছে এফআইআর দায়ের করেন স্বাতী। সে রাতেই স্বাতীর মেডিক্যাল পরীক্ষাও করানো হয়েছিল দিল্লির এমসে। শুক্রবার ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৬৪ ধারার অধীনে স্বাতী নিজের বয়ান নথিভুক্ত করেন।
তার পরেই স্বাতী ‘নিগ্রহকাণ্ড’ কার্যত নতুন মোড় নেয়। এই ঘটনায় দলের পুরনো অবস্থান থেকে সরে গিয়ে দিল্লি আপ মন্ত্রী অতিশী দাবি করেন, স্বাতী বিজেপির এজেন্ট হয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরীওয়ালকে ফাঁসাতে গিয়েছিলেন। কেজরী সে দিন বাসভবনে না থাকায় তিনি মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বৈভবকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছেন বলে দাবি করেন অতিশী। অথচ গত ১৪ মে আপের রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় সিংহ বিবৃতি দিয়ে বৈভবের হাতে স্বাতীর হেনস্থা হওয়ার কথা স্বীকার করেছিলেন।
অতিশীর সাফাই, তখন শুধু স্বাতীর বক্তব্য শুনেই সঞ্জয় ওই কথা বলেছিলেন। বৃহস্পতিবার বৈভবের নামে এফআইআর দায়ের হয়েছিল। শুক্রবার স্বাতীর বিরুদ্ধে দিল্লির সিভিল লাইন থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বৈভব। বিজেপির সঙ্গে আঁতাঁতের অভিযোগ প্রসঙ্গে স্বাতী বলেন, ‘‘দু’দিন আগে দল আমার পাশে দাঁড়িয়েছিল। আসলে বৈভব দলকে শাসিয়েছেন, যদি তিনি গ্রেফতার হন, তা হলে দলের সব গোপন তথ্য ফাঁস করে দেবেন। ’’
পুলিশের কাছে স্বাতীর দায়ের করা অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি বসার ঘরে অপেক্ষা করার সময়ে তাঁকে জানানো হয়, কেজরীওয়াল দেখা করতে আসছেন। কিন্তু কেজরীর ব্যক্তিগত সচিব বৈভব ঘরে ঢুকে তাঁকে গালিগালাজ করেন। প্রতিবাদ জানালে সাত-আটটি চড় মারেন বৈভব। বুকে, পেটে এবং কোমরে লাথিও মারেন। ধাক্কাধাক্কিতে তাঁর জামার বোতাম ছিঁড়ে যায় বলেও গত কাল পুলিশকে জানান স্বাতী। এর পর ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে বয়ান দেন তিনি। দিল্লি পুলিশ এবং ফরেন্সিক দল শুক্রবার কেজরীর বাসভবনে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে, কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে।
সেই সময়েই পাল্টা সাংবাদিক বৈঠক করে অতিশী দাবি করেন, ‘‘স্বাতীকে দাবার বোড়ে করে কেজরীওয়ালকে ফাঁসানোর জন্য পাঠানো হয়েছিল।’’ অতিশীর দাবি, গত সোমবার অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়াই স্বাতী মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন চত্বরে ঢুকে পড়েন। নিরাপত্তারক্ষীরা স্বাতীকে জানান, মুখ্যমন্ত্রী বাড়িতে নেই। তবু স্বাতী মুখ্যমন্ত্রীর মূল বাসভবনে বসার ঘরে চলে যান। রক্ষীরা আটকাতে গেলে তাঁদের চাকরি খেয়ে নেওয়ার হুমকিও দেন বলে আপের অভিযোগ।
আপ নেতৃত্বের দাবি, মূল বাসভবনে বসার ঘরে ঢুকে স্বাতী দাবি করেন, তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে দিতে হবে। রক্ষীরা বৈভবকে ডাকেন। অতিশীর দাবি, ‘‘বৈভব স্বাতীকে বলেন, কেজরীওয়ালের সঙ্গে দেখা হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু স্বাতী ভিতরের ঘরে যাওয়ার চেষ্টা করেন। বৈভব তখন স্বাতীকে বার করে দিতে নির্দেশ দেন রক্ষীদের।’’ অতিশীর দাবি, শারীরিক নিগ্রহের ঘটনা ঘটেনি। শুক্রবার বৈভবকে তলব করেছিল জাতীয় মহিলা কমিশন। বৈভব না আসায় তাঁকে শনিবার পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। শনিতেও না এলে কমিশনের দল বৈভবের বাড়ি যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy