রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।
বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সমন্বয় কমিটি থেকে সিপিএম দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিলেও ভিন্ন অবস্থান নিয়েছে সিপিআই। সব কমিটিতে অংশগ্রহণ করে এবং সব রকম ভাবে ‘ইন্ডিয়া’ জোটকে কার্যকরী করার কথা বলেছে তারা। কিন্তু সেই সিপিআইয়েরও বিড়ম্বনার কারণ হচ্ছেন রাহুল গান্ধী! আগামী লোকসভা নির্বাচনে কেরলের ওয়েনাড় কেন্দ্র থেকে রাহুল যাতে আর প্রার্থী না হন, তার জন্য কংগ্রেস নেতৃত্বকে অনুরোধ করতে চলেছে ডি রাজার দল।
ওয়েনাড় থেকে ২০১৯ সালে কংগ্রেস প্রার্থী রাহুল জয়ী হয়েছিলেন চার লক্ষ ৩০ হাজার ভোটে। রাহুলের ধাক্কায় কেরলের ২০টি লোকসভা আসনের মধ্যে ১৯টিই জিতে নিয়েছিল কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ। যে রাজ্যে কংগ্রেসের মূল লড়াই বামেদের বিরুদ্ধে, সেখানকার কোনও কেন্দ্রে রাহুল কেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন— এই প্রশ্ন তখনই উঠেছিল। ‘ইন্ডিয়া’ জোট তৈরি হওয়ার পরে সেই প্রশ্নই আরও জোরালো হয়েছে। সিপিআইয়ের যুক্তি, আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা হোক বা না হোক, ‘ইন্ডিয়া’র প্রধান মুখ রাহুলই। তাঁর এমন কোনও আসনে লড়া উচিত, যেখানে কংগ্রেসের লড়াই বিজেপির বিরুদ্ধে। ওয়েনাড়ে দাঁড়ালে বিষয়টা সম্পূর্ণই অন্য রকম হয়।
দিল্লিতে সিপিআইয়ের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে লোকসভা ভোটকে সামনে রেখে দলের কৌশল সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে। একাধিক রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা করেই কিছু আসনে লড়তে চায় সিপিআই। পাঁচটি রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনেও বিজেপি-বিরোধী ঐক্য বজার রেখে এগোনোর পক্ষপাতী তারা। এই সূত্রেই কেরলের প্রসঙ্গ আলোচনায় এসেছিল। সূত্রের খবর, দলের কেরল রাজ্য নেতৃত্ব বলেছেন, রাহুল ওয়েনাড়ে প্রার্থী হলে তাঁর সঙ্গে বামেদের সম্মুখ সমরে নামতে হবে। বাংলা, কেরল-সহ কিছু রাজ্যে বিজেপি-বিরোধী সার্বিক সমঝোতা সম্ভব নয় ঠিকই। কিন্তু রাহুল প্রার্থী হলে বিষয়টা শুধু রাজ্যভিত্তিক ‘বাধ্যবাধকতা’র বাইরে গিয়ে সার্বিক বিরোধী ঐক্যের আবহে প্রভাব ফেলতে পারে। দলের কেরল নেতৃত্বের এই যুক্তিতে একমত হয়েছেন সিপিআইয়ের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও। ঠিক হয়েছে, কংগ্রেসের সঙ্গে কথা বলা হবে। এআইসিসি-র কাছে বার্তা নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব নিতে পারেন সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক রাজাই।
কেরলের ২০টি লোকসভা আসনের মধ্যে এলডিএফের দ্বিতীয় বৃহত্তম শরিক হিসেবে সিপিআই চারটি আসনে লড়ে। তার মধ্যেই পড়ে ওয়েনাড়। সিপিআইয়ের এক নেতার কথায়, ‘‘বিজেপিকে পরাস্ত করার যে লক্ষ্য সামনে রেখে ২০২৪ সালের লড়াই হবে এবং যার জন্য নানা রকম প্রস্তুতি চলছে, তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই রাহুলের আসন বাছা উচিত। এমন আসনে তাঁর প্রার্থী হওয়া উচিত, যেখানে বিজেপির সঙ্গে মূল লড়াই। ওয়েনাড়-সহ কেরলের কোনও কেন্দ্রে বিজেপি মূল শক্তি নয়।’’ বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রশ্ন ছাড়াও সিপিআইকে ভাবাচ্ছে আরও একটি বিষয়। রাহুল নিজে প্রার্থী হলে তাঁকে সামনে রেখে কেরল থেকে আবার অধিকাংশ আসন পাওয়ার সুযোগ থাকবে কংগ্রেসের। আর রাহুল প্রার্থী তালিকায় না থাকলে বামেদের কিছু আসন ঘরে তোলার সুযোগ বাড়বে। তাতে নিজেদের ঝুলিতে কিছু আসন আসবে এবং আখেরে ‘ইন্ডিয়া’র পক্ষেই তারা থাকবে।
সিপিআইয়ের প্রস্তাব অবশ্য মানতে রাজি নয় কেরলের কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কে সুধাকরনের বক্তব্য, ‘‘সিপিআই বা কোনও জোটসঙ্গী, কেউই ঠিক করে দিতে পারে না অন্য দল কী করবে! আমরা চাই, রাহুল ওয়েনাড়েই লড়ুন।’’ এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কে সি বেনুগোপাল যদিও বলেছেন, যথাসময়ে দলের নির্বাচন কমিটি প্রার্থী ঠিক করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy