প্রতীকী ছবি।
গত মাসেই রাজস্থান হাইকোর্টের এক বিচারপতি কেন্দ্রকে সুপারিশ করেছিলেন, গরুকে জাতীয় পশু ঘোষণা করা হোক। এ বার হায়দরাবাদ হাইকোর্টের এক বিচারপতি মা আর ভগবানের সঙ্গে তুলনা করলেন গরুর। বি শিবা শঙ্কর রাও নামের এই বিচারপতি গরু সংক্রান্ত এক মামলার রায় দিতে গিয়ে বলেন, “গরু হল পবিত্র জাতীয় সম্পদ। গরু ঈশ্বর ও মায়ের বিকল্প।”
আরও পড়ুন: গরু জাতীয় পশু হোক, কেন্দ্রকে বলল রাজস্থান হাইকোর্ট
সম্প্রতি তেলঙ্গানার নালগোন্ডার এক গরু ব্যবসায়ী রামবত্ হনুমার বাড়ি থেকে ৬৫টি গরু বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। অভিযোগ ওঠে, ইদের আগে গোমাংসের জন্যই গরুগুলিকে নিয়ে এসেছিলেন হনুমা। নালগোন্ডার নিম্ন আদালতে হনুমা দাবি করেন, ইদের জন্য নয়, চরানোর জন্যই তিনি গরুগুলিকে এনে কাঞ্চনপল্লির খামারে রেখেছেন। এ নিয়ে একটি পিটিশনও দাখিল করেন হনুমা। কিন্তু নালগোণ্ডা আদালত তাঁর সেই পিটিশন খারিজ করে দেয়। নিম্ন আদালতকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যান হনুমা। কিন্তু সেখানে গিয়েও রেহাই পাননি। হনুমার আবেদনকে খারিজ করে দিয়ে হায়দরাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি শঙ্কর রাও স্পষ্ট জানিয়ে দেন, নিম্ন আদালতের নির্দেশে নাক গলাবে না হাইকোর্ট। উল্টে সুপ্রিম কোর্টের এক বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, বকরি ইদ উপলক্ষে কোনও স্বাস্থ্যবান গরুকে জবাই করা মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে না। এ প্রসঙ্গে তিনি মোগল সম্রাট বাবরের কথাও উল্লেখ করেন। বলেন, গোহত্যা বন্ধ করেছিলেন বাবর। সেই সঙ্গে ছেলে হুমায়ুনকেও নির্দেশ দিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর নীতি অনুসরণ করতে। আকবর, জাহাঙ্গির এবং আহমেদ শাহ-ও গোহত্যা নিষিদ্ধ করেছিলেন বলে উদাহরণ তুলে ধরেন তিনি। শুক্রবার এই মতামত দেওয়ার পাশাপাশি অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলঙ্গানার পশু চিকিত্সকদের উদ্দেশেও একটি নির্দেশ দেন বিচারপতি। বলেন, যে সব চিকিত্সক ভুয়ো সার্টিফিকেট দিয়ে দুধেল গরুকে কষাইখানায় পাঠানোর ব্যবস্থা করছেন, তাঁদের অন্ধ্রপ্রদেশ গরু জবাই আইন, ১৯৭৭-এর আওতায় এনে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে আইনের সংশোধন করে ওই চিকিত্সকদের বিরুদ্ধে জামিন-অযোগ্য পরোয়ানাও আনা দরকার বলে মত দেন তিনি।
মে-তে রাজস্থান হাইকোর্টে হিঙ্গোনিয়া গোশালা মামলার শুনানি ছিল। গত বছর অসুস্থতা, অবহেলা ইত্যাদি নানান কারণে ওই গোশালায় মারা গিয়েছিল প্রায় আট হাজার গরু। সেই শুনানি চলার সময়ই বিচারপতি মহেশ চন্দ্র শর্মার সিঙ্গল বেঞ্চ প্রস্তাব রাখে, গরুকে জাতীয় পশুর স্বীকৃতি দেওয়া হোক। গরুকে জাতীয় পশু হিসেবে ঘোষণা করা হলে গো-হত্যায় রাশ টানা যাবে বলেই মত বিচারপতি মহেশ চন্দ্র শর্মার। তাঁর কথায়, “নেপাল গরুকে জাতীয় পশু হিসেবে ঘোষণা করেছে। আমাদের দেশ কৃষিভিত্তিক। এখানে গবাদি পশুর পালন যথেষ্ট গুরুত্ব পেয়ে থাকে। তাই ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৪৮ এবং ৫১এ(জি) অনুযায়ী রাজ্য সরকারের কাছে আশা করাই যায় যে, গোরক্ষার জন্য কোনও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।” কেন্দ্রের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলার জন্যও রাজস্থান সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি মহেশ শর্মা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy