দেশের কোভিড পরিসংখ্যান। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে ভারতে। বিভিন্ন রাজ্যে বাড়ছে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। যার জেরে দেশের দৈনিক সংক্রমণ সোমবার প্রায় ৪৭ হাজারের দোড়গোড়ায়। প্রায় ৪ মাস পর দেশে এক দিনে আক্রান্তের সংখ্যা এত বেশি হল। রাজ্যগুলির মধ্যে সবথেকে খারাপ অবস্থা মহারাষ্ট্রে। কর্নাটক, তামিলনাড়ু, পঞ্জাব, ছত্তীসগঢ়, গুজরাত, হরিয়ানাতেও দিনে দিনে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। দেশে জোরকদমে টিকাকরণ প্রক্রিয়া শুরু হলেও গত ২৪ ঘণ্টায় মাত্র ৪ লক্ষ ৬২ হাজার কোভিড টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন আক্রান্ত ৪৬ হাজার ৯৫১ জন। গত বছর নভেম্বর মাস নাগাদও এই সংখ্যক মানুষ রোজ আক্রান্ত হতেন দেশে। তার পর তা কমতে শুরু করেছিল। গত ক’দিনে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে তা আবার আগের অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে। দেশে এখনও অবধি আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ১৬ লক্ষ ৪৬ হাজার ৮১ জন। এখনও অবধি মৃত্যু হয়েছে ১ লক্ষ ৫৯ হাজার ৯৬৭ জনের। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ২১২ জনের। যা গত কয়েক দিনের তুলনায় অনেকটাই বেশি। এ বছর ৯ জানুয়ারি দেশে মৃত্যু হয়েছিল ২২৮ জনের। তার পর থেকে দৈনিক মৃত্য কমতে কমতে নেমেছিল ১০০-র নীচে। গত ক’দিনে ফের তা বাড়তে শুরু করেছে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেসামাল মহারাষ্ট্র। এ মাসের শুরু থেকেই দফায় দফায় লকডাউনের কড়াকড়ি ফিরিয়ে আনা হয়েছিল সে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায়। কিন্তু তা সত্ত্বেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। দেশের দৈনিক আক্রান্তের প্রায় দুই তৃতীয়াংশই মহারাষ্ট্রে। গত ২৪ ঘণ্টায় মহারাষ্ট্র আক্রান্ত হয়েছেন ৩০ হাজার ৫৩৫ জন। কোভিড হানার পর এই প্রথম এত মানুষ এক সঙ্গে আক্রান্ত হয়েছেন সে রাজ্যে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে সেখানে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৪,৮৯৬। দিন তিনেক আগে তা বেড়ে হয় ২৫,৮৩৩। মুম্বইয়েও দৈনিক আক্রান্ত বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে আক্রান্ত ৩ হাজার ৭৭৯ জন। মহারাষ্ট্র ছাড়াও কয়েকটি রাজ্যে বাড়ছে আক্রান্ত। কর্নাটক, তামিলনাড়ু, গুজরাত, ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ, পঞ্জাবেও দৈনিক আক্রান্ত রোজ হাজার ছাড়াচ্ছে। দিল্লি, হরিয়ানার পরিস্থিতিও অবনতি হচ্ছে।
দৈনিক সংক্রমণ বৃদ্ধির জেরে দেশে সক্রিয় রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। এখন দেশে সক্রিয় কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লক্ষ ৩৪ হাজার ৬৪৬ জন। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই ২ লক্ষ ১১ হাজারের বেশি। দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা পরীক্ষাও হয়েছে গত ৪ দিনের থেকে কম। সংক্রমণের হারও ৫ শতাংশ ছাড়িয়েছে। পাশাপাশি গত ২৪ ঘণ্টায় টিকা পেয়েছেন মাত্র ৪ লক্ষ ৬২ হাজার ১৫৭ জন। যা অন্যান্য দিনগুলির তুলনায় অনেকটাই কম। গত সপ্তাহে রোজই দেওয়া হয়েছে ২০ লক্ষের বেশি টিকার ডোজ। ইতিমধ্যেই করোনা পরিস্থিতি নিয়ে দেশের মানুষকে সতর্ক করেছেন এমসের অধিকর্তা রণদীপ গুলেরিয়া। করোনার নতুন প্রজাতির ছড়িয়ে পড়া এবং মানুষের করোনাবিধি যথাযথ ভাবে মেনে না চলার জেরেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়়ে পড়েছে বলে মত তাঁর। পাশাপাশি দৈনিক টিকাকরণ আরও বাড়ানোর পক্ষে সওয়াল করেছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy