—ফাইল ছবি
করোনা আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে সারা দেশে শীর্ষে মহারাষ্ট্র। সংক্রমণের ঝড় উঠেছে মুম্বইতেও। কিন্তু বাণিজ্য নগরীর স্বাস্থ্যব্যবস্থা যে কতটা বেহাল তা ফের ধরা পড়ল শনিবার রাতে। ওই দিন মুম্বইয়ের যোগেশ্বরী হাসপাতালের আইসিইউ-তে দেড় ঘণ্টার মধ্যে সাত করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, আইসিইউ-তে প্রয়োজনীয় মাত্রায় অক্সিজেন না পেয়ে মরতে হয়েছে তাঁদের। চোখের সামনে রোগীদের ছটফট করে মরতে দেখে স্তম্ভিত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। এর আগেও গত দু’সপ্তাহে ১২ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে ওই হাসপাতালে।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, ওই রাতে আইসিইউ-তে দারুণ শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন কয়েকজন করোনা আক্রান্ত। তাঁরা প্রচণ্ড হাঁফাচ্ছিলেন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ১০ তলায় আইসোলেশন ওয়ার্ডে কর্তব্যরত সিনিয়র ডাক্তারের কাছে ছুটে যান নার্সরা। কিন্তু তিনি আইসিইউ-তে এসে অক্সিজেনের মাত্রা ঠিক করার আগেই মৃত্যু হয় সাত জনের। এই ঘটনার পর পরই যোগেশ্বরী হাসপাতালের পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। হাসপাতালের চিকিৎসক নার্সরা বলছেন, এ ভাবে এত জন রোগীকে একসঙ্গে মারা যেতে তাঁরা ইতিপূর্বে দেখেননি।
অভিযোগ উঠেছে, প্রয়োজনীয় মাত্রায় অক্সিজেন না পেয়েই মারা গিয়েছেন ওই সাত জন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চিকিৎসক এক সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘‘পাইপে লাগানো ইন্ডিকেটরে অক্সিজেনের যে মাত্রা দেখানো হয়েছিল তা কম ছিল।’’
আরও পড়ুন: কৃষ্ণাঙ্গ হত্যায় উত্তাল আমেরিকা, আগুন, লাঠি, রাবার বুলেট, ১৩ শহরে কার্ফু
জানা গিয়েছে, সেই রাতে আইসিইউ-তে কোনও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হাসপাতালে ছিলেন না। সদ্য এমবিবিএস পাশ করা দু’জন ডাক্তার ও দু’জন নার্স আইসিইউ-তে ছিলেন। ঘটনার জেরে তড়িঘড়ি বৈঠক ডাকেন হাসপাতাল সুপার। কিন্তু এমন কাণ্ডে গোটা হাসপাতাল জু়ডেই রোগীদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যুর কথা অবশ্য মানতে নারাজ হাসপাতাল সুপার। তাঁর মতে, ওই দু’ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসকরা অনুপস্থিত থাকাতেই এমন ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
হাসপাতালের নার্সদের একাংশের দাবি, শুধু মাত্র অক্সিজেনই নয়, রোগ মোকাবিলায় হাসপাতালে আরও চিকিৎসকও প্রয়োজন। এক চিকিসৎক প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘চোখের সামনে রোগীদের এমন ভাবে অক্সিজেনের অভাবে মরতে দেখলে সেই হাসপাতালে কোন চিকিৎসক কাজ করবেন?’’
আরও পড়ুন: জি-৭ পিছোচ্ছে, ভারত, রাশিয়াকেও ডাকতে চান ট্রাম্প
সম্প্রতি আমদাবাদ সিভিল হাসপাতালের পরিকাঠামো নিয়ে হাইকোর্টের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছিল গুজরাত সরকারকে। হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, ওই হাসপাতালের অবস্থা অন্ধকূপের চেয়েও খারাপ। যোগেশ্বরী হাসপাতালের এই ভয়াবহ ঘটনা সেখানকার পরিকাঠামো জোরাল নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy