সোমবার সকাল ৯টা বেজে ২০ মিনিট। বালেশ্বর ছেড়ে বাহানগা বাজার স্টেশন হয়ে ভদ্রকের দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে গেল বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। সেই বাহানগা বাজার, যেখানে শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার মিনিট পাঁচেক আগে দুর্ঘটনায় কবলে পড়েছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। এখনও পর্যন্ত ২৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে রেলের তরফে জানানো হয়েছে (যদিও ওড়িশা সরকারের সংশোধিত হিসাবে এই সংখ্যা ২৭৫)। বাহানগা বাজার স্টেশনে থামার কথা নয় বন্দে ভারতের। দুর্ঘটনাস্থলে নতুন করে পাতা লাইনে আপাতত খুব ধীর গতিতে চালানো হচ্ছে ট্রেন। সে ভাবেই নিয়ে যাওয়া হল বন্দে ভারতকেও। প্রত্যেকটি ট্রেন যাওয়ার সময়েই লাইনের দু’পাশ থেকে তীক্ষ্ণ নজর রাখছেন রেলকর্মীরা।
Howrah - Puri Vande Bharat Express crosses from Odisha’s Balasore where the deadly #TrainAccident took place on 2nd June Indian Railways resumed train movement on the affected tracks within 51 hours of the accident.#Bahanaga #TrainAccidentInOdisha #CoromandelTrainTragedy pic.twitter.com/j1FG6J3TGG
— Ranabir Aich (@RanabirAich) June 5, 2023
আরও পড়ুন:
সোমবারও অসংখ্য উৎসুক মানুষের ভিড় বাহানগা বাজার স্টেশনের বাইরে। শনিবার রাত থেকেই কাউকে আর ঘেঁষতে দেওয়া হচ্ছে না দুর্ঘটনাস্থলের ধারেকাছে। এলাকা ঘিরে রেখেছে রেল এবং রাজ্য সরকারি নিরাপত্তারক্ষীদের বিশাল দল। তাঁদের কড়া নজর দুর্ঘটনাগ্রস্ত বগিগুলির উপরেও। যাতে কেউ সেখানে ঢুকে পড়তে না-পারেন। ওই নিরাপত্তাবলয় ঠেলে এখন আর ধ্বংসস্তূপের ছবি তোলা প্রায় অসম্ভব। মোবাইল ক্যামেরার লেন্স জুম করেও সেই দৃশ্য নাগালে পাওয়া গেল না। ‘বেড়া’র বাইরে অবশ্য প্রথম দিনের মতোই দাঁড়িয়ে রয়েছেন বহু মানুষ। কী হচ্ছে, কী ভাবে হচ্ছে, তা নিয়ে জনতার কৌতুহল অবশ্য নিবৃত্ত হওয়ার উপায় নেই, দূর থেকে শুধু দেখে যাওয়া ছাড়া। রেলের বক্তব্য, দুর্ঘটনাস্থলে সাধারণ মানুষকে যেতে দিলে দ্রুত কাজ শেষ করা কিছুতেই সম্ভব হবে না।

আপ লাইনে ভুবনেশ্বরের পথে ফলকনুমা এক্সপ্রেস। — নিজস্ব চিত্র।
আরও পড়ুন:
ট্রেন পরিষেবা দ্রুত পুরোপুরি স্বাভাবিক করতে আক্ষরিক অর্থেই রাতদিন এক করে কাজ করে চলেছেন রেলকর্মীরা। হাজার খানেক কর্মী নিযুক্ত হয়েছেন ওই রেলপথকে সচল করে তোলার জন্য। ক্ষত সারিয়ে দুর্ঘটনার ৫১ ঘণ্টা পর রবিবার রাতেই আবার ওই লাইনে গড়ায় ট্রেনের চাকা। রবিবার রাত ১০টা ৪০ মিনিটে ডাউন লাইনে প্রথমে একটি মালগাড়ি চালানো হয়। এর পর রাত ১১টা ৩৯ মিনিটে চালানো হয় আরও একটি মালগাড়ি। আপ লাইনে প্রথম ট্রেনটি চালানো হয় রাত ১২টা ৫ মিনিটে। সোমবার ৭টি ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছিলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তার মধ্যে একটি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। কিছুটা পরে আপ লাইন দিয়ে যায় ফলকনুমা এক্সপ্রেসও।

নিরাপত্তার চাদরে মোড়া এলাকা। — নিজস্ব চিত্র।
এখনও লোকাল ট্রেন চলছে না ওই রেলপথে। ফলে বাহানগা বাজার স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় তেমন নেই। এক্সপ্রেস ট্রেন থামে ওই স্টেশনের দু’দিকে থাকা বালেশ্বর এবং ভদ্রকে। সেখানে ভিড় করছেন যাত্রীরা। আপ এবং ডাউন লাইন ট্রেন যাওয়ার উপযুক্ত হলেও বেশ কিছু জায়গায় এখনও মেরামতি চলছে। কোনও ট্রেন এলে সাময়িক ভাবে বন্ধ হচ্ছে সেই কাজ। ট্রেন চলে গেলে রেললাইনে আবার উঠছে গাঁইতি বা হাতুড়ির ধাতব শব্দ। দূর থেকেও যা শোনা যাচ্ছে।