প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।
হিজাব নিয়ে নতুন বিতর্ক হয়নি। আতিক আহমেদ নিয়েও হয়নি বাকবিতণ্ডা। টিপু সুলতানকেও বিজেপি সে ভাবে ভোটের ময়দানে তুলে আনতে পারেনি। কর্নাটকের ভোট নিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্বের চিন্তা এখন একটাই। তা হল, আগামী শুক্রবার কর্নাটকের ভোটের প্রচারে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর আস্তিন থেকে কী বার করবেন?
হাইকমান্ডকে পাঠানো প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের রিপোর্ট বলছে, রাজ্যে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ব্যর্থতার অভিযোগ, কংগ্রেসের জনমোহিনী প্রতিশ্রুতি, জাতপাতের সমীকরণের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে বেঙ্গালুরুর কুর্সি দখলের লড়াই। বিজেপি জাতীয় রাজনীতি বা ধর্মীয় মেরুকরণ করতে পারেনি। তাই প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন, ২২৪ আসনের বিধানসভায় একার জোরেই দল সরকার গড়বে। তা হলে ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের দৌড়ে নতুন জ্বালানি পাবে এই শতাব্দী প্রাচীন দলটি।
এই গোটা ভাবনায় একটিই মাত্র ‘যদি’ রয়েছে। তিনি নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার এই দক্ষিণী রাজ্যে ভোটপ্রচারে যাওয়ার কথা তাঁর। সেখানে যদি মোদী এমন কোনও বিষয় তুলে আনেন, যাতে গোটা নির্বাচনের অভিমুখই ঘুরে যায়। কংগ্রেসের নেতারা বলছেন, অতীতে মোদী গুজরাতের ভোটে প্রায় হারের মুখ থেকে বিজেপিকে রক্ষা করতে দাবি করেছিলেন, পাকিস্তান গুজরাত ভোটের ফলাফল নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে। তাঁকে কংগ্রেস নেতারা অপমান করেছেন বলেও তিনি গুজরাতে অনুযোগ করেছিলেন।
দক্ষিণের এক মাত্র বিজেপি শাসিত রাজ্য কর্নাটকে আগামী ১০ মে ভোটগ্রহণ। ক্ষমতা ধরে রাখতে মোদী চলতি বছরে আটবার সেখানে গিয়েছেন। বিজেপি সূত্রের খবর, ২৮ এপ্রিল থেকে ভোটের প্রচার শেষ হওয়ার পর্যন্ত মোদী একাই কর্নাটকে অন্তত সাত দিন প্রচার করবেন। দিনে দু’তিনটি জনসভা ও রোড শো করবেন তিনি। কংগ্রেসের আশঙ্কা, মোদী এই শেষবেলার প্রচারে খেলা ঘোরাতে আস্তিন থেকে নতুন অস্ত্র বার করতে পারেন।
কর্নাটকে হিজাবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু হতেই কংগ্রেস নেতারা প্রমাদ গুণেছিলেন, বিজেপি-আরএসএস মেরুকরণের রাজনীতি শুরু করেছে। উত্তরপ্রদেশে আতিক আহমেদের ‘এনকাউন্টার’-এর পরে বিজেপি তাঁর সঙ্গে কংগ্রেস নেতাদের ঘনিষ্ঠতা প্রমাণের চেষ্টা করেছে। টিপু সুলতান ব্রিটিশদের হাতে নয়, উরিগৌড়া ও নানজেগৌড়া নামের দুই ভোক্কালিগা সম্প্রদায়ের বীরের হাতে প্রাণ হারিয়েছিলেন বলেও বিজেপি প্রচার করেছিল। যুক্তি ছিল, ওই দুই বীর হিন্দুদের উপরে টিপুর অত্যাচারের বদলা নিয়েছিলেন। কিন্তু খোদ ভোক্কালিগা ধর্মগুরু আদিচুনচুনগিরি মঠের স্বামী নির্মলানন্দ এতে আপত্তি তুলে ও সব কাল্পনিক চরিত্র বলে খারিজ করে দিয়েছেন। কংগ্রেস মনে করছে, বিজেপি এর ফলে মেরুকরণ বা রাজ্যের প্রভাবশালী সম্প্রদায় ভোক্কালিগাদের আবেগ উস্কে দিতে পারেনি। অন্য প্রভাবশালী সম্প্রদায় লিঙ্গায়েতদের দুই নেতা বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। ফলে লিঙ্গায়েত ভোটব্যাঙ্কের উপরে বিজেপির আধিপত্য ধাক্কা খেয়েছে। বিজেপি এখন মুসলিমদের সংরক্ষণ নিয়ে মেরুকরণের চেষ্টা চালাচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে রাজ্য নেতাদের কংগ্রেস হাইকমান্ডের নির্দেশ, মেরুকরণের মোকাবিলায় বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ‘৪০ শতাংশ কমিশনের সরকার’ বলে দুর্নীতির প্রচার চালিয়ে যেতে হবে। উল্টো দিকে, কংগ্রেসের নানা প্রতিশ্রুতি তুলে ধরতে হবে। কিন্তু মুখ ফস্কেও মোদীকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে তাঁর হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া চলবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy