উত্তর-পূর্বের পরে এ বার দক্ষিণ ভারতে পা বাড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। —প্রতীকী চিত্র।
উত্তর-পূর্বের পরে এ বার দক্ষিণ ভারতে পা বাড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বাম-শাসিত কেরলে নির্দল বিধায়ক পি ভি আনওয়ার জোড়া ফুলের দলে সদ্য যোগ দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে। কিন্তু দক্ষিণী রাজ্যে খাতা খুলতে গিয়ে আবার নতুন জটে জড়াচ্ছে তৃণমূল!
বিধায়ক আনওয়ার কিছু দিন ধরেই চেষ্টা চালাচ্ছিলেন কেরলে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ফ্রন্ট ইউডিএফে যোগ দেওয়ার। এখন ইউডিএফ আনওয়ারের জন্য দরজা খুলতে উৎসাহী নয়। আবার সর্বভারতীয় ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চে কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব রাখা তৃণমূল কেরলে সেই দলের নেতৃত্বে ফ্রন্টে শামিল হতে চায় কি না, সেই প্রশ্নেও ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। এবং তারই পাশাপাশি জল্পনা তৈরি হয়েছে আনওয়ারের বিধায়ক-পদ থাকা নিয়ে! আনওয়ার অন্য দলে যোগ দেওয়ায় নিয়মের গেরোয় বিধানসভার সদস্যপদ তাঁকে হারাতে হতে পারে বলে দাবি কেরলে কংগ্রেস ও বাম শিবিরের একাংশের। এমতাবস্থায় বরখাস্ত হওয়া এড়াতে আনওয়ার নিজেই বিধায়ক-পদে ইস্তফা দিতে পারেন, এমনও ইঙ্গিত একটি সূত্রের।
কেরলে এলডিএফের সমর্থনে গত দু’বার নীলাম্বুর বিধানসভা আসন (রাহুল গান্ধী এবং এখন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢ়রার লোকসভা কেন্দ্র ওয়েনাড়ের অন্তর্গত) থেকে জিতেছেন আনওয়ার। এলডিএফের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করেছেন কয়েক মাস আগে। কিন্তু নির্দল হলেও তাঁর বিধায়ক-পদ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এক কংগ্রেস সাংসদের মতে, ‘‘এলডিএফের সমর্থনে তাদের দেওয়া প্রতীকে জিতেছিলেন আনওয়ার। কোনও দল কাউকে বহিষ্কার করলে তিনি লোকসভা বা বিধানসভায় নির্দল সদস্য হিসেবে থাকতে পারেন। কিন্তু আনওয়ারের বিষয়টা নিয়ে প্রশ্ন আছে। বিধানসভার স্পিকার চাইলে তাঁর বিধায়ক-পদ খারিজ করে দিতে পারেন।’’
কলকাতায় যোগদান-পর্ব সেরে আনওয়ার রবিবারই পৌঁছেছেন তিরুঅনন্তপুরমে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আমাকে কেরলে তৃণমূলের সমন্বয়কারীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বাকি বিষয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে বক্তব্য জানাব।’’ আনওয়ারের দাবি, কেরলে প্রস্তাবিত বন (সংশোধন) আইনের বিরোধিতায় তিনি যে সরব হয়েছেন, তৃণমূল নেতৃত্বও সেই অবস্থান সমর্থন করবেন বলে আশ্বাস পেয়েছেন। তৃণমূলের তরফে অবশ্য কেউ এই বিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাইছেন না। দলের এক নেতার বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলের প্রতিনিধি হিসেবে আনওয়ার ইউডিএফে যোগ দেওয়ার আবেদন করবেন, নাকি তৃণমূল আলাদা দল হিসেবেই লড়াই করবে, এ সবই আলোচনা সাপেক্ষ। দলনেত্রী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।’’ সূত্রের খবর, দলের রাজ্যসভা ও লোকসভার দুই সাংসদকে আপাতত কেরল সংক্রান্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বামেদের এলডিএফের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে আনওয়ার সম্প্রতি ডিএমকে (ডেমোক্র্যাটিক মুভমেন্ট অব কেরালা) নামে নতুন দল গড়েছিলেন। যোগাযোগ করেছিলেন মুসলিম লিগের সঙ্গেও। শেষ পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে সেই ডিএমকে দল মিশে গিয়েছে তৃণমূলে। তবে ইউডিএফের চেয়ারম্যান এবং কেরলের বিরোধী দলনেতা, কংগ্রেসের ভি ডি সতীশন বলেছেন, কারও কোনও দলে যোগ দেওয়া ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। আপাতত ইউডিএফ আনওয়ারকে ফ্রন্টে অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে ভাবছে না। আনওয়ার যে বন-বিলের বিরোধিতা করছেন, সেই বিলের বিরুদ্ধেই আগামী ২৭ জানুয়ারি কান্নুর থেকে ৯ দিনের প্রতিবাদ-যাত্রায় বেরোচ্ছে ইউডিএফ। এ বার পথ ঠিক করতে হবে তৃণমূলকে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy