রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।
হরিয়ানা বিধানসভা ভোটে অপ্রত্যাশিত হারের ধাক্কায় দৃশ্যতই মরিয়া কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী মহারাষ্ট্র এবং ঝাড়খণ্ড বিধানসভা ভোটকে পাখির চোখ করেছেন। দুই রাজ্যেই প্রতিটি জনসভায় তিনি লোকসভার ভোটের প্রচারের মতোই তীব্র আক্রমণ করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। কখনও বলছেন, তিনি সংবিধান পড়েননি, কখনও বলছেন, জো বাইডেনের মতো মোদীর স্মৃতিলোপ হয়েছে!
এ দিন আরও এক ধাপ এগিয়ে মোদীর চ্যালেঞ্জের জবাব দিয়েছেন রাহুল। দিন কয়েক আগে মহারাষ্ট্রে ভোটপ্রচারে গিয়ে মোদী বলেছিলেন, “বালাসাহেব ঠাকরে বরাবর কংগ্রেস-বিরোধী ছিলেন। কংগ্রেসও তাঁর বিরোধী ছিল। এখন বালাসাহেবের ছেলে ও কংগ্রেস জোট বেঁধেছে। রাহুল এ বার বালাসাহেবের প্রশংসা করে দেখান।” এ দিন মহারাষ্ট্র ভোটের দু’দিন আগে নিজেরএক্স হ্যান্ডলে বালাসাহেবকে শ্রদ্ধা জানিয়ে রাহুল লেখেন, “বালাসাহেবের দ্বাদশ মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁকে স্মরণ করছি। উদ্ধব ঠাকরেজি, আদিত্য ঠাকরেজি এবং গোটা শিবসেনা পরিবারের পাশে রয়েছি।” রাহুলের এই বার্তা একই সঙ্গে দু’দলের কর্মীদেরও উদ্বুদ্ধ করবে বলে মনে করছেন অনেকে।
ওয়েনাড়ে লোকসভার উপনির্বাচনে ব্যস্ত থাকায় মহারাষ্ট্র এবং ঝাড়খণ্ডে গোড়ার দিকে প্রচারে সে ভাবে সময় দিতে পারেননি রাহুল। এ নিয়ে দল এবং জোটের অন্দরেও প্রশ্ন উঠেছিল। তার পরেই দুই রাজ্যে প্রচারে নেমে রাহুল তীব্র আক্রমণ শানাতে শুরু করেছেন মোদী-সহ বিজেপি নেতৃত্বকে।মোদীও পাল্টা ‘শাহজাদা’ সম্বোধনে একের পর এক সভায় আক্রমণ শানান রাহুল এবং তাঁর পরিবারকে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী আজ রাহুলকে নিশানা করে বলেন, “যে ভাবে রাহুল গান্ধী কথা বলেন, কেউ ওঁকে গুরুত্ব দেন না। আমার তো মনে হয়, রাহুলের মন্তব্যগুলি নিয়ে কারও মাথা ঘামানোই উচিত নয়।”
আর দু’দিন পরেই ঝাড়খণ্ডে শেষ দফা এবং মহারাষ্ট্রে এক দফার বিধানসভা ভোট। তার আগে শেষ মুহূর্তে পারস্পরিক তির নিক্ষেপ চলছে মহাজুটি এবং মহাবিকাশ আঘাড়ী জোটের মধ্যে। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই আজ বিজেপির এই অন্যতম শীর্ষ নেতার মন্তব্য নিয়ে চলছে আলোচনা। সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিতিনের বক্তব্য, রাহুল গান্ধী জাতিগণনার বিষয় নিয়ে ভোটের আগে হাওয়া গরম করছেন। তাঁর কথায়, “আসল বিষয় গ্রামের, কৃষকের, গরিবের কল্যাণ ও উন্নয়ন। এক জন গরিবের কোনও জাত নেই, ধর্ম নেই। এক জন মুসলমানকে যে দামে পেট্রোল কিনতে হয়, সেই দাম সবার জন্যই এক।”
২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে অনেক ঢাকঢোল পিটিয়েও প্রত্যাশিত ফলের ধারে কাছে যায়নি বিজেপি-শিন্দেপন্থী শিবসেনা-অজিত পওয়ারের এনসিপি-কে নিয়ে গড়া মহাজুটি। তার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে গডকড়ী বলেন, “বিরোধীরা এমন একটা ভাষ্য তৈরি করেছিল যেন আমরা ৪০০ আসন পেলেই বাবা সাহেব অম্বেদকরের তৈরি করা সংবিধান বদলে দেব।সংবিধান বদলের কোনও প্রশ্নই নেই। আমরা নিজেরা তো করব না-ই, অন্য কাউকেও করতে দেব না। এখন মানুষ ধীরে ধীরে বুঝতে পেরেছেন, বিরোধীরা যে প্রচার করেছে, তা মিথ্যার ভিত্তিতে তৈরি। প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বাধীন মহাজুটিকে তাই এখন সর্বতো ভাবে সমর্থন করছেন মহারাষ্ট্রবাসী।”
তবে নরেন্দ্র মোদী যে ভাবে ‘এক হ্যায় তো সেফ হ্যায়’ স্লোগানের মাধ্যমে এবং বাংলাদেশের মুসলমান অনুপ্রবেশকারীদের কথা বলে মেরুকরণের লক্ষ্যে সমস্ত হিন্দুদের একমঞ্চে আনতে চাইছেন, তার থেকে কিছুটা ভিন্ন স্বরে গডকড়ী বলেছেন, “আমরা ভোট লড়ছি উন্নয়নের কথা বলে। সবাই এক। কেউ মন্দিরে যাচ্ছেন, কেউ মসজিদে, কেউ গুরুদ্বারে, কেউ গির্জায়। কিন্তু আমরা সবাই ভারতীয়। দেশ সবার আগে আমাদের কাছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy