সনিয়া গাঁধী ও উদ্ধব ঠাকরে।—ছবি পিটিআই।
সভাপতি পদে থাকতেই শিবসেনা সম্পর্কে নিজের মনোভাব স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন রাহুল গাঁধী। স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, ‘‘বিজেপিকে পরাস্ত করার জন্য হলেও শিবসেনাকে কখনওই সঙ্গী করা যায় না।’’ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের অনেকেই বলছেন, সনিয়া গাঁধীরও মত অনেকটা তেমনই। যে কারণে শিবসেনার সঙ্গে মহারাষ্ট্রে সরকার গড়ার প্রশ্নে গত কাল থেকে গড়িমসি করছেন কংগ্রেসের অন্তর্বর্তী সভানেত্রী। এমনকি উদ্ধব ঠাকরের ফোন আসার পরেও।
শরদের সঙ্গে কথা বলার পর আজ যখন আহমেদ পটেল, মল্লিকার্জুন খড়্গে এবং কে সি বেণুগোপালকে মুম্বই পাঠালেন সনিয়া, ঠিক সেই সময়ে এআইসিসি দফতরে দাঁড়িয়ে শিবসেনার প্রকাশ্য বিরোধ করছেন শিবরাজ পাটিল। কংগ্রেসের এই নেতাটির বক্তব্যের কিছুটা হলেও গুরুত্ব আছে, কারণ তিনি একে তো মহারাষ্ট্রের নেতা। তার উপর দেশের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রাক্তন রাজ্যপাল। শিবরাজের কথায়, ‘‘আমার ব্যক্তিগত মত, কোথাও কোনও জোট গড়লে অন্য রাজ্যে কী প্রভাব পড়বে, সেটিও ভাবা উচিত কংগ্রেসের। কোনও দল (শিবসেনা) যদি বলে, ভিন্ রাজ্যের লোক আসতে পারবে না, চাকরি পাবে না। তার উপর চড়া দাগের হিন্দুত্বও করে— তাদের সঙ্গে জোট বাধলে লোকে কংগ্রেসকে কী বলবে?’’
এই একই মত কেরলের কংগ্রেস নেতাদেরও। যে রাজ্যের অধুনা সাংসদ খোদ রাহুল গাঁধী। বেণুগোপাল, এ কে অ্যান্টনির মতো নেতাদের বক্তব্য, কংগ্রেস যদি শিবসেনার মতো উগ্র হিন্দুত্ববাদী দলের সঙ্গে ঘর করে, তা হলে সে রাজ্যে সংখ্যালঘুদের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে। মহারাষ্ট্রে হিংসা, ভিন্ রাজ্যের মানুষদের পেটানো, কড়া হিন্দুত্ববাদী অবস্থানের দীর্ঘ ইতিহাস আছে শিবসেনার। পওয়ারের দলের এক শীর্ষ নেতা বললেন, ‘‘এই সব কারণেই সনিয়া গাঁধী মহারাষ্ট্রে শিবসেনার সঙ্গে সরকার গড়ার পক্ষপাতী ছিলেন না।’’
প্রশ্ন, শিবসেনাকে নিয়ে কংগ্রেসে এত বিরোধ থাকলে কেনই বা সরাসরি জোট না-বাঁধার কথাটি সরাসরি নাকচ করে দেননি সনিয়া? কেনই বা সমর্থনপত্র দিতে দেরি করলেন?
কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বলছেন, সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি দলের স্থানীয় বিধায়কদের কারণেও। মহারাষ্ট্রের সব কংগ্রেস বিধায়ককে এখন রাজস্থানে রাখা হয়েছে। সিংহভাগ বিধায়ক প্রথমে শিবসেনা-এনসিপি সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন করে স্পিকার পদ নেওয়ার পক্ষে ছিলেন। কিন্তু পরে সরকারে সামিল হয়ে মন্ত্রী পদ নিয়ে দর কষাকষিও করতে বলেন। মহারাষ্ট্রের নেতাদের এই ভাবনার কথা মাথায় রেখেই ভারসাম্য বজায় রাখতে হয় কংগ্রেসকে। আজ রাষ্ট্রপতি শাসন জারির পর মুম্বইয়ে যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করেন পওয়ার, আহমেদ পটেলরা। দেরির কারণ নিয়ে পটেল যুক্তি দেন, ‘‘সবে গত কাল শিবসেনার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু সরকারে গেলে কী নীতি হবে, তা ঠিক করতে সময় লাগে।’’
পরে পৃথক সাংবাদিক বৈঠকে সনিয়াকে ফোন করার কথা জানিয়ে উদ্ধব ঠাকরে বলেন, ‘‘আমি নিজে গত কাল যোগাযোগ করেছি। কংগ্রেস তার পরেই আলোচনা শুরু করেছে। এর মানে শিবসেনা সম্পর্কে তাদের আগের ধারণা বদলাচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy