সুপ্রিম কোর্টের বাইরে নির্ভয়ার বাবা-মা। মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
নির্ভয়াকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত অক্ষয়কুমার সিংহের ফাঁসির সাজা পুনর্বিবেচনার মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন প্রধান বিচারপতি এস এ বোবডে। আজ সুপ্রিম কোর্টে এই মামলা ওঠার পরে তিনি জানিয়ে দেন, তাঁর এক নিকটাত্মীয় নির্ভয়ার মায়ের হয়ে মামলা লড়েছিলেন। ফলে তাঁর পক্ষে ওই মামলা শোনা সম্ভব নয়। তাঁকে বাদ দিয়েই শীর্ষ আদালতের অন্য কোনও বেঞ্চ অক্ষয়ের ফাঁসির আদেশ পুনর্বিবেচনার মামলা শুনবে। আগামিকাল সকাল সাড়ে ১০টাতেই নতুন বেঞ্চের সামনে মামলা উঠতে চলেছে। অপরাধীদের দ্রুত ফাঁসির জন্য নির্ভয়ার মা যে আর্জি জানিয়েছিলেন, তার শুনানিও আগামিকাল।
প্রধান বিচারপতির ভাইপো অর্জুন বোবডে এক সময়ে নির্ভয়ার পরিবারের হয়ে মামলা লড়েছিলেন। সে জন্যই প্রধান বিচারপতি আজ মামলা থেকে সরে দাঁড়ান। এ নিয়ে নির্ভয়ার মায়ের মন্তব্য, ‘‘আমরা সাত বছর ধরে অপেক্ষা করছি। আমাদের কাছে এক একটা দিন এক একটা বছরের মতো। তবে আরও একটা দিন ধৈর্য ধরতে পারব। আমার বিশ্বাস, ডিসেম্বরের মধ্যেই দোষীদের ফাঁসি হয়ে যাবে।’’ ঘটনাচক্রে এ দিনই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, ধর্ষণের মামলায় ক্ষমাভিক্ষার আর্জির দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সুপ্রিম কোর্টের তৈরি এই বিষয় সংক্রান্ত বিধি সংশোধনের কথা ভাবছে সরকার।
শীর্ষ আদালতে অক্ষয়ের আইনজীবী এ পি সিংহ অবশ্য জানান, সংবাদমাধ্যম ও রাজনৈতিক চাপে ন্যায়বিচার মেলেনি অক্ষয়ের। আইনজীবীর মাধ্যমে পেশ করা ফাঁসির আদেশ পুনর্বিবেচনার আবেদনেও অক্ষয় লিখেছে, ‘‘মহিলাদের উপর আক্রমণের জবাব দিতে কাউকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া উচিত নয়। বরং ওই ব্যক্তির পরিবর্তনের জন্য রাষ্ট্রের কাজ করা উচিত। ফাঁসি অপরাধীকে সাজা দেয়, অপরাধকে নয়।’’ জেলবন্দি ধর্ষকের যুক্তি, ফাঁসি হল ঠান্ডা মাথায় কাউকে মেরে ফেলা, তাকে শোধরানোর সুযোগ না দেওয়া।
আরও পড়ুন: প্রদেশভিত্তিক সংখ্যালঘু ঘোষণায় নারাজ কোর্ট
গত বছরের জুলাই মাসেই নির্ভয়া মামলায় দোষী সাব্যস্ত বাকি তিন জন, মুকেশ, পবন গুপ্ত ও বিনয় শর্মার ফাঁসির আদেশ পুনবির্বেচনার আর্জি খারিজ করে দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। অক্ষয়ের আইনজীবী আজ যুক্তি দেন, ফাঁসি পুনর্বিবেচনার আর্জির পরেও দোষীদের সামনে দু’টি রাস্তা খোলা থাকছে। এগুলি হল, রায় সংশোধনের মামলা করা ও প্রাণভিক্ষার আবেদন। ২০১৭ সালেই নির্ভয়ার ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত অক্ষয়দের ফাঁসি দিতে নিম্ন আদালত ও দিল্লি হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছিল সুপ্রিম কোর্ট।
নির্ভয়ার ধর্ষণ-খুনে দোষী সাব্যস্তদের ফাঁসির বিষয় নিয়ে আজ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। প্রশ্ন হয়, ৭ বছর কেটে গেলেও কেন অপরাধীদের ফাঁসি হল না? অমিত বলেন, ‘‘সরকারের তরফে দেরি করা হচ্ছে না। দিল্লি সরকারের মাধ্যমে এক জন দোষীর প্রাণভিক্ষার আবেদন পৌঁছেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে। তিন দিনের মধ্যে বিষয়টি আমরা রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়েছি। রাষ্ট্রপতি দ্রুত সেই আর্জি খারিজ করেন। এখন আরও এক জন আবেদন করেছে।’’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সবার আর্জি খারিজের পরেও ফাঁসি দেওয়ার আগে ১৪ দিন সময় দিতে হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy