পর্যটনের উন্নয়নে সরকারি অর্থব্যয়ে মন্দির উদ্বোধনের আয়োজন। আর সে সূত্রেই নাকাল সাধারণ পর্যটকেরা। ‘জগন্নাথ ধাম সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র’ উদ্বোধনের দু’দিন আগে থেকে দিঘায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। কড়াকড়ির ঠ্যালায় পর্যটকেরা ঢুকতে-বেরোতে নাস্তানাবুদ হচ্ছেন। হোটেলেও মিলছে না ঠাঁই।
নতুন জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের আগে, দিঘার অধিকাংশ হোটেল শুধু সরকারি অতিথিদের জন্য ‘বুক’ হয়ে থাকায় পর্যটকেরা জায়গা পাচ্ছেন না। নতুন করে ‘বুকিং নিতে হোটেলগুলিকে মৌখিক ভাবে নিষেধ করা হয়েছে বলে দাবি। দিঘায় যাঁরা ছিলেন, তাঁরাও নানা বিধিনিষেধের গেরোয় বিরক্ত হয়ে বাড়ি ফিরছেন। আর তখনও পড়তে হচ্ছে দুর্ভোগে।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই দিঘার সৈকত এবং রাস্তাঘাট ছিল ফাঁকা। বন্ধ ছিল দোকানপাট। প্রায় এক ছবি নিউ দিঘার হোটেলগুলিতেও। এ দিন সকাল থেকে যান চলাচল নিয়ন্ত্রিত হয়। ছোট গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ ছিল। টোটো-অটো চলেনি। হাতেগোনা বেসরকারি বাস চলেছে বাইপাস দিয়ে। ফলে, পুরনো দিঘা থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার হেঁটে পর্যটকদের বাস ধরতে হয়েছে। ওল্ড দিঘা থেকে স্ত্রী এবং মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন বারাসতের দীপক হাজরা। বললেন, ‘‘ঠিক ছিল, বুধবার ফিরব। কিন্তু সমুদ্রে নামতে দিচ্ছে না। হেঁটে ঘুরতে হচ্ছে। এমন দুর্ভোগে পড়ব ভাবিনি!’’
দিঘা স্টেশনে গিয়ে দেখা গিয়েছে, বহু পর্যটক সময়ের আগেই বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। নিরাপত্তার কড়াকড়িতে জগন্নাথ মন্দিরের ধারেকাছে ঘেঁষতে পারেনি আমজনতা। নদিয়া থেকে আসা পলি পোদ্দার, হুগলির চুঁচুড়া থেকে আসা সৌমেন সিংহদের আক্ষেপ, ‘‘এসেছিলাম, জগন্নাথ মন্দির দেখতে। ধারেকাছে ঘেঁষতে পারিনি। তা হলে দিঘায় থেকে কী লাভ?’’
দিঘা-শঙ্করপুর হোটেল মালিক সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তীর ক্ষোভ, ‘‘ইচ্ছে মতো শহর ও সমুদ্রের ধারের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। পর্যটকেরা বাইরে বেরিয়ে চরম অসুবিধায় পড়ছেন।’’ যদিও পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘কিছু হোটেলে প্রশাসনের লোকজন আছেন। তবে হোটেলে পর্যটক রাখা যাবে না, এমন নির্দেশ দেওয়া হয়নি।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)