পহেলগাম হামলার পরে নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারত-পাক উত্তেজনার আবহেই আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে পৌঁছল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের একটি ট্যাঙ্ক। এত দিন পুণের কিরকি-তে সেনাবাহিনীর ডিপোয় পড়েছিল ট্যাঙ্কটি। এ বার ওই ট্যাঙ্কটি যুদ্ধ-স্মারক হিসেবে প্রদর্শিত হবে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়ার মিউজ়িয়ামে।
২০২২ সালের ১৫ নভেম্বর এই যুদ্ধ-সংগ্রহশালাটি নির্মিত হয়। দেশের কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন উদ্যোগ এই প্রথম। আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সংগ্রহশালায় শুধু ওই টি-৫৫ ট্যাঙ্কটিই নয়, ট্যাঙ্কের গোত্রের দু’টি আর্মার্ড রিকভারি ভেহিক্লও প্রদর্শিত হবে। প্রাক্তন বায়ুসেনা প্রধান অরূপ রাহা আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য নিযুক্ত হয়েই ওয়ার মিউজ়িয়ামটিকে সমৃদ্ধ করে তোলার জন্য উদ্যোগী হন। এ ব্যাপারে সচেষ্ট রয়েছেন উপাচার্য রাজীবমোহন পন্থও।
বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ধরনের মিউজ়িয়াম বানানো হয়েছে জেনেই সেনাবাহিনীর দিল্লির সদর দফতর এবং কিরকি ডিপো কর্তৃপক্ষ ট্যাঙ্ক হস্তান্তরে সম্মত হন। পুণের কিরকি থেকে অসমের শিলচর— ৩০০০ কিলোমিটার পথে এক মাস ধরে ট্যাঙ্কটিকে নিয়ে এসেছে বিশাল একটি লরি। একই সঙ্গে জবলপুরের ডিপো থেকে এসেছে বিভিন্ন যুদ্ধে ব্যবহৃত চারটি ঐতিহাসিক বন্দুক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়ার মিউজ়িয়াম কমিটির আহ্বায়ক অরিজিৎ গোস্বামী জানান, তাঁদের সংগ্রহে রয়েছে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ধরনের উর্দি, ঐতিহাসিক যুদ্ধসামগ্রী, মূল্যবান আলোকচিত্র। যুদ্ধস্মারক হিসেবে রয়েছে নৌবাহিনীর যুদ্ধবিমান এবং হেলিকপ্টারের ক্ষুদ্র সংস্করণ। এর সঙ্গে এখন ট্যাঙ্ক এবং অন্যান্য যুদ্ধাস্ত্র যুক্ত হওয়ায় তাঁরা মিউজ়িয়ামটিকে নতুন করে সাজিয়ে তুলছেন। স্থানীয় সেনা ছাউনির ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের অফিসারদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাঁরাই এসে ট্যাঙ্কের প্রয়োজনীয় মেরামতি করবেন। পরে তাঁদেরই পরামর্শ অনুযায়ী মিউজ়িয়াম চত্বরে রাখা হবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ট্যাঙ্ক এবং আর্মার্ড রিকভারি ভেহিক্লগুলিকে।
উপাচার্য পন্থ বলেন, ‘‘মিউজ়িয়ামের প্রতিটি সামগ্রী দেশের সুরক্ষার জন্য জওয়ানদের আত্মত্যাগের কথা মনে করিয়ে দেয়। দেশমাতৃকার প্রতি শ্রদ্ধা বোধের জন্য আগামী প্রজন্মের সামনে এগুলির প্রদর্শন জরুরি।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)