সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। ফাইল চিত্র।
তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হেনস্থার সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করলেন দেশের সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। একই সঙ্গে বললেন, ‘বলির পাঁঠা’ বানানো হচ্ছে দেশের বিচারব্যবস্থাকে। খোদ প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠায় দেশের ‘বিচারব্যবস্থা বিপন্ন’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
গতকালই প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনেন সুপ্রিম কোর্টেরই ৩৫ বছর বয়সী এক প্রাক্তন মহিলা কর্মী। সুপ্রিম কোর্টের ২২ জন বিচারককে চিঠি লিখে তিনি জানান, ২০১৮ সালের ১০ এবং ১১ অক্টোবর তাঁকে নিজের বাড়িতে ডেকে যৌন হেনস্থা করেছিলেন রঞ্জন গগৈ। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘‘উনি আমার কোমর জড়িয়ে ধরে সারা শরীর স্পর্শ করছিলেন। আমি নিজেকে ছাড়াতে চেষ্টা করলেও উনি আমাকে জোর করে ধরে রেখেছিলেন।’’ প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে তোলা তাঁর এই অভিযোগ প্রকাশিত হয় স্ক্রোল, দ্য ওয়্যার, লিফলেট এবং দ্য ক্যারাভান পত্রিকায়। যদিও এই বয়ানের সত্যতা আনন্দবাজারের পক্ষ থেকে যাচাই করা যায়নি।
দেশের সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার এই বেনজির অভিযোগ সামনে আসার পরই জরুরি ভিত্তিতে শুনানির ডাক দেয় সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বিশেষ বেঞ্চ। সেই বেঞ্চের প্রধান হিসেবে রঞ্জন গগৈ শুনানির সময় মন্তব্য করেন, ‘‘এই অভিযোগ অবিশ্বাস্য। এই অভিযোগ অস্বীকার করতে গেলেও যতটা নীচে নামতে হয়, তার জন্য আমি প্রস্তুত নই।’’ যদিও এই মামলায় তিনি কোনও রায় দেবেন না, প্রবীণতম বিচারপতি অরুণ মিশ্রই এই মামলায় রায় দেবেন বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ।
আরও পড়ুন- হাতে মোটে ১৫ টাকা, হলফনামায় দাবি তৃণমূল প্রার্থী অপরূপার
এই অভিযোদের পিছনে গভীর ষড়যন্ত্র আছে বলেও জানিয়েছেন রঞ্জন গগৈ। তাঁর কথায়, ‘‘নিশ্চিত ভাবেই এই সমস্ত অভিযোগের পিছনে কোনও একটা শক্তি কাজ করছে, যারা প্রধান বিচারপতির অফিসকেই নিস্ক্রিয় করে দিতে চাইছে।’’ তাঁর বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কোনও দুর্নীতির অভিযোগ নেই, সেই কারণেই এই রাস্তা বেছে নেওয়া হচ্ছে বলেও শুনানির সময় মন্তব্য করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘২০ বছর ধরে চাকরি করার পর আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আছে ৬ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। আমার পিওনের কাছেও এর থেকে বেশি টাকা আছে। ২০ বছর ধরে চাকরি করার পর এটা কি প্রাপ্য ছিল আমার?’’
একই সঙ্গে শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি বলেছেন, যে মহিলা তাঁর বিরুদ্ধে এই মারাত্মক অভিযোগ এনেছেন, তাঁর সঙ্গে অতীতে বিভিন্ন অপরাধের যোগ আছে। ওই মহিলার বিরুদ্ধে দু’টি পুলিশ কেসও আছে বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেটাও শুনানির সময় বলেছেন, এই অভিযোগ প্রধান বিচারপতিকে ব্ল্যাকমেল করার কোনও কৌশল হতে পারে।
আরও পড়ুন- দরকারে অনুমতি রাজীবের গ্রেফতারে, ইঙ্গিত দিলেন প্রধান বিচারপতি
যদিও এই মুহূর্তে এই মামলায় কোনও রায় দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি অরুণ মিশ্র এবং বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার তিন সদস্যের বিশেষ বেঞ্চ। একই সঙ্গে পুরো বিষয়টিতে সংবাদমাধ্যমকে সংযত এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে অনুরোধ করেছেন তাঁরা। বিচারপতি অরুণ মিশ্র বলেছেন, ‘‘এই ধরনের অভিযোগ এলে বিচারব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের বিশ্বাস নড়ে যেতে পারে।’’ এই মামলার রায় ভবিষ্যতে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy