রোগা হওয়ার জন্য অনেকেই দৈনন্দিন খাবারে শর্করার পরিমাণ কমিয়ে প্রোটিন বাড়িয়ে দেন। তার কারণ ফিটনেস প্রশিক্ষক এবং পুষ্টিবিদেরা বলেন, শরীরে অতিরিক্ত শর্করাই মেদ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। কিন্তু অতিরিক্ত প্রোটিন খেলেও কি শরীরে কোনও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে? এক পুষ্টিবিদ বলছেন, প্রয়োজনের তুলনায় বেশি প্রোটিন শরীরে দ্রুত বার্ধক্য আনতে পারে!
ওই পুষ্টিবিদের নাম লভনীত বাত্রা। সমাজমাধ্যমে নিয়মিত স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নানা বিষয়ে পরামর্শ দেন তিনি। তেমনই এক পর্বে লভনীতকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমার কাছে খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারে যাঁরা পরামর্শ নিতে আসেন, তাঁদের অনেককেই দেখি প্রোটিন খাওয়ার ব্যাপারে অতি আগ্রহী। কিন্তু জানেন কি অতিরিক্ত প্রাণিজ প্রোটিন বা প্রোটিন পাউডার খেলে তা শরীরকে দ্রুত বুড়িয়ে দিতে পারে?’’

অতিরিক্ত প্রাণিজ প্রোটিন বা প্রোটিন পাউডার খেলে তা শরীরকে দ্রুত বুড়িয়ে দিতে পারে! ছবি: সংগৃহীত।
কী ভাবে প্রোটিন শরীরে বার্ধক্য আনে?
পুষ্টিবিদ লভনীতের মতে প্রত্যেকের শরীরে প্রোটিনের প্রয়োজন আলাদা। কারও বেশি, কারও কম। কিন্তু কেউ যদি তার প্রয়োজনের থেকে বেশি পরিমাণে প্রোটিন খান, তবে তা তাঁর শরীরে ‘গ্লাইকেশন’ নামের এক ধরনের শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া চালু করে দিতে পারে। যা পেশিতন্তুর নমনীয়তা নষ্ট করে দেয়, ফলে ত্বকে বলিরেখা পড়ে, অস্থিসন্ধিতে আনে আড়ষ্টতা, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস তৈরি করে, ক্ষতি করে বিপাকহারের। পাশাপাশি, শরীরে প্রদাহও বাড়িয়ে দেয়। লভনীত বাত্রা বলছেন, ‘‘প্রোটিন পাউডার খেলে শরীরে যায় প্রিজ়ারভেটিভ এবং কৃত্রিম ভাবে মিষ্টত্ব আনার ক্ষতিকর উপাদানও।’’ এই সব কিছুই শরীরকে দ্রুত বার্ধক্যের দিকে ঠেলে দেয়।

প্রাণিজ প্রোটিনের বদলে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন বেশি খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদ। ছবি: সংগৃহীত।
কী ভাবে প্রোটিন খাওয়া উচিত?
১। পুষ্টিবিদের পরামর্শ, প্রথমে দেখতে হবে শরীরের কতটা প্রোটিন প্রয়োজন। সাধারণত শরীরের মোট ওজনের প্রতি কিলোগ্রাম পিছু ০.৮ গ্রাম প্রোটিন খাওয়া উচিত। তবে সেই হিসাব নির্ভর করবে আপনার বয়স কত, ওজন কতটা, আপনি প্রতি দিন কতটা শরীরচর্চা করেন বা আপনার শরীর কতটা সক্রিয়, তার উপর। লভনীত বলছেন, ‘‘সঠিক হিসাব আপনার পুষ্টিবিদ করে দিতে পারবেন।’’
২। প্রাণিজ প্রোটিনের বদলে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন বেশি খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন লভনীত। কারণ তাতে অ্যালকেলাইন থাকে। ডাল, কিনোয়া, টোফু, বাদাম, বীজশস্য ইত্যাদি হল উদ্ভিজ্জ প্রোটিন।
৩। প্রোটিনের সঙ্গে সব সময় এমন খাবার খাওয়া উচিত, যাতে রয়েছে অ্যান্টি- অক্সিড্যান্টস। যেমন তাজা ফলমূল, শাকসব্জি ইত্যাদি। যাতে ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ই বেশি পরিমাণে আছে।
৪। প্রোটিন পাউডার খাওয়ার বদলে তাজা প্রোটিন খাওয়ার চেষ্টা করুন।