Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

পিএফআইকে নিষিদ্ধ করার ভাবনা কেন্দ্রের

উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের পাঠানো রিপোর্টে যোগী-রাজ্যে সিএএ-র বিরুদ্ধে হওয়া হিংসাত্মক বিক্ষোভে সরাসরি পিএফআইয়ের হাত রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

উত্তরপ্রদেশে হিংসা থামানোর চেষ্টায় পুলিশ। ফাইল চিত্র।

উত্তরপ্রদেশে হিংসা থামানোর চেষ্টায় পুলিশ। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:৩০
Share: Save:

নয়া নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর প্রতিবাদের সূত্রে দেশ জুড়ে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে ‘পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া’ (পিএফআই)-কে নিষিদ্ধ করার ভাবনা-চিন্তা শুরু হল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে। মন্ত্রক সূত্রের খবর, উত্তরপ্রদেশ ছাড়াও বেশ কিছু রাজ্য ওই সংগঠনের কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলে কেন্দ্রকে রিপোর্ট জমা দিয়েছে।

উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের পাঠানো রিপোর্টে যোগী-রাজ্যে সিএএ-র বিরুদ্ধে হওয়া হিংসাত্মক বিক্ষোভে সরাসরি পিএফআইয়ের হাত রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছে ওই সংগঠনের ২৫ জন কর্মী। যোগী প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানানো হয়েছে কেন্দ্রের কাছে। কাল টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানান, উত্তরপ্রদেশ, কর্নাটক ও অসমের মতো রাজ্যে ঝামেলার নেপথ্যে পিএফআইয়ের হাত রয়েছে বলে জানতে পেরেছে সেই রাজ্যগুলির পুলিশ। আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক শীর্ষ কর্তা জানান, উত্তরপ্রদেশ-সহ একাধিক রাজ্য থেকে ওই সংগঠনের বিষয়ে নেতিবাচক রিপোর্ট কেন্দ্রের কাছে এসেছে। সরকার তা গুরুত্ব দিয়ে দেখছে।

পিএফআই বলে থাকে যে, মুসলিমদের আর্থ-সামাজিক উন্নতির লক্ষ্যে ২০০৬ সালে এই সংগঠনটি গড়া হয়েছিল। কিন্তু গোড়া থেকেই পিএফআইয়ের বিরুদ্ধে হিংসাত্মক কার্যকলাপের অভিযোগ উঠেছে। শুধু কেরলেই ২৭টি খুনের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। গোয়েন্দাদের মতে, নিষিদ্ধ সংগঠন ‘সিমি’-র মুখ হিসেবে গোটা ভারতে হিংসাত্মক কার্যকলাপে গত দেড় দশক ধরে মদত দিয়ে এসেছে ওই সংগঠনটি। সিমির অধিকাংশ সদস্যই পিএফআইয়ের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। হিংসায় মদত দেওয়ার অভিযোগেই গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঝাড়খণ্ডে এই সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।

আরও পড়ুন-‘সিএএ হবেই’ বনাম ‘করে দেখাক’, অমিতের নিশানায় মমতাই

উত্তরপ্রদেশ সরকার ওই সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলার পাশাপাশি নিজেদের রাজ্যে পিএফআই কর্মীদের গ্রেফতার করতে রাজ্য জুড়ে ধরপাকড় শুরু করেছে। আজ উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, ফিরোজাবাদ, মথুরা, আলিগড়-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে হওয়া সংঘর্ষে পিএফআইয়ের হাত রয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রের মতে, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে ঝামেলা পাকানোর জন্য বড় সংখ্যক পিএফআই কর্মী মূলত উত্তরপ্রদেশের ‘ব্রজ এলাকায়’ (মথুরা, ও আগরা) এখনও লুকিয়ে রয়েছেন। তাঁদের চিহ্নিত করে ধরপাকড় শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এডিজি অজয় আনন্দ।

দিল্লির গন্ডগোলেও অন্তত দু’ডজন পিএফআই সদস্য পুলিশের নজরে রয়েছেন বলে সূত্রের খবর। দিল্লির সীমাপুরী ও সীলমপুরীতে সিএএ-র প্রতিবাদ ঘিরে গত মাসের গন্ডগোলে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা জড়িত রয়েছে বলে দিল্লি পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সীমাপুরীর গন্ডগোলে অন্তত ১৫ জন বাংলাদেশিকে চিহ্নিত করেছে দিল্লি পুলিশের সিট। সীলমপুরীর গন্ডগোলও বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের একটি গোষ্ঠীর উস্কানিতে ঘটেছিল বলে দাবি করেছে দিল্লি পুলিশের অপরাধদমন শাখা। পুলিশ জানিয়েছে, সিএএ-বিরোধী সমস্ত বিক্ষোভের মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে কি না, তার তদন্ত করছে সিট। তিহাড় জেলে বন্দি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে।

পিএফআইয়ের বিরুদ্ধে পদক্ষেপে মোদী-যোগী সরকারের রাজনৈতিক চক্রান্ত ও মেরুকরণের রাজনীতি দেখছেন এসপি নেতা আকবর কুরেশি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভকে সন্ত্রাসের চেহারা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। ওই সংগঠন মুসলিমদের পক্ষে সওয়াল করছে দেখেই পরিকল্পিত ভাবেই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে মুখ বন্ধ করার ছক কষেছে মোদী-যোগী সরকার।’’

অন্য বিষয়গুলি:

PFI Violence CAA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE