Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Sero Survey

COVID-19: করোনার তৃতীয় ধাক্কার আঁচ পেতে দেশ জুড়ে সেরো সমীক্ষা

দ্বিতীয় ধাক্কার প্রভাব গোটা দেশে কতটা পড়েছে তা খতিয়ে দেখতেই গত শুক্রবার দেশ জুড়ে চতুর্থ দফার সেরো সমীক্ষা শুরু করার কথা ঘোষণা করে কেন্দ্র।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২১ ০৭:১২
Share: Save:

এ মাসেই দেশ জুড়ে চতুর্থ দফার সেরো সমীক্ষা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায় কত সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন এবং কাদের আগামী দিনে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে, তা ওই সমীক্ষা থেকে জানা সম্ভব হবে বলেই মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা।

করোনার দ্বিতীয় ধাক্কার প্রভাব গোটা দেশে কতটা পড়েছে তা খতিয়ে দেখতেই গত শুক্রবার দেশ জুড়ে চতুর্থ দফার সেরো সমীক্ষা শুরু করার কথা ঘোষণা করে কেন্দ্র। স্পষ্ট ছবি পেতে রাজ্যগুলিকেও একই ধরনের সেরো সমীক্ষা চালাতে অনুরোধ করা হয়েছে। সেই পরামর্শ মেনে আগামী ১৫ জুন থেকে সেরো সমীক্ষা শুরু হচ্ছে হরিয়ানাতে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সেরো বা রক্ত পরীক্ষাগুলির মাধ্যমে এক দিকে যেমন গোটা দেশে করোনা আক্রান্তদের সংখ্যা সম্পর্কে ধারণা করা সম্ভব, তেমনই জনগোষ্ঠীতে সংক্রমণের প্রবণতা, কোনও নির্দিষ্ট এলাকায় সংক্রমণের হার বেশি না কম, সে সবেরও ধারণা পাওয়া যায়। এর ফল সরকারকে ভবিষ্যৎ রণকৌশল নির্ণয় করতে সাহায্য করে থাকে।

করোনার প্রথম ধাক্কার পরে সেরো সমীক্ষা জানিয়েছিল, সব মিলিয়ে দেশের প্রায় ২৫ কোটি মানুষ সে যাত্রায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। যদিও খাতায়-কলমে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল অনেক কম। এর কারণ ব্যাখ্যা করে এমসের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক নীরজ নিশ্চল জানান, অধিকাংশ করোনা রোগীই উপসর্গহীন। উপসর্গ না-থাকায় তাঁরা যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তা জানতেও পারেন না। কিন্তু এক জন উপসর্গহীনের শরীরে উপসর্গযুক্ত করোনা রোগীদের মতোই করোনার অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, যা সেরো সমীক্ষায় ধরা পড়ে। সেই কারণে সেরো সমীক্ষার সময়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের গ্রাম-শহর, সেখানকার আবাসন ও বস্তি এলাকা থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়ে থাকে, যাতে সংক্রমণ ছড়ানোর প্রবণতা বোঝা সম্ভব হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, সেরো সমীক্ষা থেকে জানা যায়, কোন এলাকায় আগামী দিনে সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা বেশি রয়েছে। সেই মতো পদক্ষেপ করা হয়।

উদাহরণ দিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, সংক্রমণের প্রথম ধাক্কা চলাকালীন ও তা শেষ হওয়ার পরে যে তিনটি সেরো সমীক্ষা হয়েছিল তাতে দেখা যায়, শহুরে জনসংখ্যায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। তুলনায় গ্রামে সংক্রমণের হার ছিল কম। ফলে পরবর্তী ঢেউগুলিতে গ্রামীণ ভারত যে বড় মাত্রায় করোনা সংক্রমণের শিকার হতে চলেছে, তা তখনই অনুমান করা হয়েছিল। এ যাত্রায় হয়েছেও তা-ই। গ্রামীণ ভারতের বড় অংশ দ্বিতীয় ধাক্কায় সংক্রমণের শিকার হয়েছে। যে এলাকার মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি নেই, ভাইরাস সেখানেই বেশি ছড়াবে, এটাই স্বাভাবিক। সেই কারণেই এখন যে সেরো সমীক্ষা হবে, তার ফলাফল থেকে তৃতীয় ধাক্কায় সংক্রমণ কাদের বেশি নিশানা করতে পারে তার একটি আন্দাজ পাওয়ার চেষ্টা করা হবে বলেই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা। ওই ফলাফলের ভিত্তিতে পরিকল্পনা ও বিশেষ করে টিকাকরণ কর্মসূচিতে কী কী রদবদল করা প্রয়োজন, তা খতিয়ে দেখা হবে। সেরো সমীক্ষায় যদি দেখা যায় কোনও নির্দিষ্ট এলাকায় সংক্রমণের হার খুব বেশি, তা হলে সেখানে মাইক্রো লকডাউন করে সংক্রমণকে নির্দিষ্ট গণ্ডিতে বেঁধে রাখা ছাড়াও টিকাকরণ কর্মসূচিতে জোর দিয়ে থাকে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এ ধরনের পদক্ষেপ পরবর্তী সময়ে বহু মানুষের প্রাণ বাঁচাতে সাহায্য করে।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in India Sero Survey
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE